যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগকে বন্ধ বা বিলুপ্ত করতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাওয়া ট্রাম্প এ ইচ্ছার কথা ধনকুবের ইলন মাস্ককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন। মার্কিন ফেডারেল শিক্ষা বিভাগ বিলুপ্ত করা উচিত মন্তব্য করে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি শিক্ষা বিভাগকে বিলুপ্ত করতে চাই। শিক্ষাকে অঙ্গরাজ্যগুলোতে ফিরিয়ে দিতে চাই। যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা বিশ্বজুড়ে তাদের সমবয়সী শিক্ষার্থীদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে।’ শিক্ষা বিভাগ বিলুপ্ত হলে ‘অনেক সুবিধা মিলবে’ উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, এতে শিক্ষা খাতে খরচ অর্ধেক কমবে। এরপরও ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী বক্তব্যে শিক্ষা বিভাগ বিলুপ্তির প্রতিশ্রুতিও দেন।

এখন প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে যে আর কয়েক দিন পরই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাওয়া ট্রাম্প কি সত্যিই মার্কিন ফেডারেল শিক্ষা বিভাগ বিলুপ্ত করবেন? শিক্ষা বিভাগ বিলুপ্ত করা কি সম্ভব? অঙ্গরাজ্যগুলো কি শিক্ষার দায়িত্ব নিতে পারবে? দ্য গার্ডিয়ানের র‍্যাচেল লেইনগাং তা খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটারদের কাছে প্রচারের সময় বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগকে বিলুপ্ত করে অঙ্গরাজ্যগুলোকে শিক্ষা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেবেন। তবে তিনি কীভাবে এ কাজ করবেন বা প্রক্রিয়াটি কী হবে, তা তিনি ব্যাখ্যা করেননি। তবে তিনি একা কাজ করতে পারবেন না। এটি সম্পন্ন করা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ। কোনো একটি সংস্থা তৈরি বা বিলুপ্ত করার অনুমোদনের জন্য কংগ্রেসের কাছে পাঠাতে হয়।

প্রায় চার হাজার কর্মচারী নিয়ে মার্কিন শিক্ষা বিভাগ গঠিত। শিক্ষা বিভাগ অঙ্গরাজ্যর স্কুলগুলোর জন্য নানা প্রোগ্রাম তৈরি করে। স্কুলগুলোতে ফেডারেল তহবিল বিতরণ করে। এ তহবিলের লক্ষ্য বেশির ভাগ নিম্ন আয়ের ছাত্র ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা। প্রোগ্রামগুলোর জন্য কিছু নীতিনির্দেশনা তৈরিও শিক্ষা বিভাগের কাজ। এ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঋণের প্রোফাইল পরিচালনা করে। এটি শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু নাগরিক অধিকার ও নীতি নিয়েও কাজ করে এ বিভাগ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় একদমই ভালো যাচ্ছে না.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ