শরীয়তপুর জেলার প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার নলকূপে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া গেছে। এসব নলকূপের পানি পরীক্ষা করে আর্সেনিকের এই অসহনীয় মাত্রা পেয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।  এসব নলকূপের পানি খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসব নলকূপে লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করে দিয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা প্রতি লিটারে দশমিক শূন্য ৫ মিলিগ্রাম হলেও শরীয়তপুরের এই নলকূপগুলোর পানিতে প্রতি লিটারে শূন্য দশমিক ১ মিলিগ্রাম আর্সেনিকের মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৬০ দশকে প্রতি লিটার পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা নির্ধারণ করে দশমিক শূন্য ৫ মিলিগ্রাম। এরপর ১৯৯৩ সালে তা দশমিক শূন্য ১ মিলিগ্রামে কমিয়ে আনা হয়; কিন্তু বাংলাদেশ ১৯৬৩ সালের সেই মাত্রা আর পরিবর্তন করেনি। 

শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন আবুল হাদি মোহাম্মদ শাহ্ পরান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পানিতে সহনীয় মাত্রায় আর্সেনিক থাকে। সেই মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রায় আর্সেনিক আছে এমন পানি পান করলে আর্সেনিকোসিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এতে মানুষের ত্বকের ক্ষতি হয়। তা ছাড়া ওই পানি নিয়মিত পান করলে লিভার, ফুসফুস ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘদিন ওই পানি পান করলে ক্যানসারে আক্রান্তের ঝুঁকিও থাকে। গ্রামপর্যায়ে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা অসনীয় মাত্রায় আর্সেনিক রয়েছে, এমন নলকূপের পানি পান না করার ব্যাপারে প্রচারণা চালাচ্ছেন।’ 

শরীয়তপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুর জেলায় ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬৩টি নলকূপ রয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্পের’ আওতায় ২০২২–২৩ অর্থবছরে শরীয়তপুরের ৬৪টি ইউনিয়নের এসব নলকূপের পানি পরীক্ষা করা হয়। ১ হাজার ১৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক এই পরীক্ষার কাজ করেন । তাঁরা ২৬ হাজার ৪২৯টি অগভীর নলকূপের পানি পরীক্ষা করে আর্সেনিকের অসহনীয় মাত্রা পান। এরপর তাঁরা ওই নলকূপগুলো লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করে দিয়েছেন। 

শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের আড়িগাঁও এলাকার মোতালেব মিয়ার বাড়ির অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা বেশি পাওয়া গেছে। ওই নলকূপও লাল রং করে দেওয়া হয়েছে।

মোতালেব মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাড়িতে আর কোনো নলকূপ নেই। নলকূপের পানি পরীক্ষা করার পর মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক রয়েছে বলে জানা যায়। এরপর থেকে আমরা ওই পানি খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। গ্রামের আরেকটি বাড়ির গভীর নলকূপ থেকে খাওয়ার পানি সংগ্রহ করি।’

শরীয়তপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘অসহনীয় মাত্রায় আর্সেনিক রয়েছে এমন নলকূপের পানি পান করা যাবে না। তবে ওই পানি গৃহস্থালির কাজে ব্যবহারে কোনো অসুবিধা নেই। যেসব নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া গেছে, সেগুলো আমাদের তদারকিতে আছে। ওই নলকূপগুলো অকেজো বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার

সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।

কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।

নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।

জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’

কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘দূরে থেকেও আমরা কাছে, এটাই বাস্তব’
  • বিলাসবহুল প্রমোদতরিতে খুন, এরপর...
  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার