সপ্তাহখানেকের মধ্যে নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা বোরো আবাদে নামবেন। এরই মধ্যে কিছু গ্রামের দু-চারজন কৃষক আবাদ শুরু করেছেন। এ সময়টাতেই কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে চড়া দামে সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এতে আবাদ খরচ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় আছেন কৃষক। 

তবে বিসিআইসি ও বিএডিসির সার ডিলাররা বলছেন বরাদ্দ কম। এ জন্য কোনো কোনো সার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ডিলার। 

জানা গেছে, উপজেলায় বিএডিসির ২৩ ও বিসিআইসির ১৩ জন ডিলার আছেন। এর মধ্যে সার তুলেছেন সাত থেকে আটজন। ডিসেম্বর মাসে এ উপজেলায় টিএসপি ৩০৪ টন, ইউরিয়া ৬৫৬ টন ও এমওপি ৩৭৭ টন এবং জানুয়ারি মাসে টিএসপি ২৯১ টন, ইউরিয়া ১ হাজার ২৮৪ টন ও এমওপি ৩৯৩ টন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

খুচরা বাজারে প্রতি বস্তা টিএসপি ১ হাজার ৩৫০ টাকা, এমওপি ১ হাজার টাকা ও ইউরিয়া ১ হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি করার নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

ব্যবসায়ীরা প্রতি বস্তা টিএসপি ১ হাজার ৫৪০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা, এমওপি ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ ও ইউরিয়া সার ১ হাজার ৩৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি করছেন। 

দলগাছা গ্রামের মোকলেছার রহমান বকুল বলেন, মৌসুম শুরু থেকেই সারের দাম বেশি। আবার চাহিদামতো পাওয়াও যাচ্ছে না। দোকানদার সার নেই বলছেন। কিন্তু বেশি টাকা দিলেই সার মিলছে। 

সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে শিমলা বাজারের বিএডিসির ডিলার মোফাজ্জল হোসেন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

বেশি দাম নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে রণবাঘা বাজারের বিসিআইসির ডিলার রাজীব প্রসাদ বলেন, বোরো মৌসুমে টিএসপি ও এমওপি সারের চাহিদা বেশি। কিন্তু বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ১৩৩ বস্তা। এই সার দিয়ে পুরো উপজেলার কৃষকদের মধ্যে সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। এ কারণে সবাই সার পান না। 

কুন্দারহাটের সার ব্যবসায়ী মামুনুর রশীদ বলেন, দেশের ডিলার ব্যবস্থাপনা ভালো না। সব জায়গায় তারা বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। চাহিদামতো সার এ উপজেলায় নেই। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। আগেও সারের দাম বেশি নেওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আবারও অভিযান চালানো হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউর য় ব যবস উপজ ল ট এসপ

এছাড়াও পড়ুন:

৭০ হাজার টন সার আমদানি, ব্যয় ৪৫২ কোটি এক লাখ টাকা

কৃষি খাতে ব্যবহারের জন্য রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে ৭০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির দুটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংকান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রস্তাব দুটিতে মোট ব্যয় হবে ৪৫২ কোটি ১ লাখ টাকা।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাব তিনটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে ৫ম লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানি করা হবে। বিএডিসির সৌদি আরব থেকে চুক্তির মাধ্যমে ডিএপি সার আমদানি করা হয়। এর আগে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর পুনরায় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে সৌদি আরব থেকে ৫ম লটে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানিতে বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য ২ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৩৩ কোটি ৭৯ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয় হবে। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম ৬৮৪ মার্কিন ডলার। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিএডিসির ডিএপি সার আমদানির লক্ষ্যমাত্রা ৮.৭৯ লাখ মেট্রিক টন, এ পর্যন্ত আমদানি হয়েছে  ৫.৯৩ লাখ মেট্রিক টন।

সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় রাশিয়া থেকে ১০ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ সার আমদানির  প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। সভায় কমিটি সদস্য ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিএডিসির রাশিয়া হতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে এমওপি সার আমদানি করা হয়। এর আগে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় চুক্তি পুনরায় চুক্তি নবায়ন করা হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে রাশিয়া হতে ১০ম লটে ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানি করা হবে। যার বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য ৯৬ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১৮ কোটি ২১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।  প্রতি মেট্রিক টন এমওপি সার ৩২৩ মার্কিন ডলার। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিএডিসি কর্তৃক এমওপি সার আমদানির লক্ষ্যমাত্রা ৫.৭৯ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে আমদানি করা হবে ২.৭২ লাখ মে.টন। এ পর্যন্ত আমদানি ২.১৮ লাখ মেট্রিক টন।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৭০ হাজার টন সার আমদানি, ব্যয় ৪৫২ কোটি এক লাখ টাকা