ন্যায় বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন অসহায় মরিয়ম
Published: 19th, January 2025 GMT
দীপ শিখা নামে একটি সমিতিতে দীর্ঘ ১৫ বছর মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন মরিয়ম বেগম। এই সমিতিতে তার কাজ ছিল সমিতি থেকে লোন নেওয়া গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তির টাকা উত্তোলণ করা। দীর্ঘ ১৫ বছরে বাড়ি বাড়ি ঘুরতে ঘুরতে কিছু মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়।
সেই সুবাদে নিজেদের কল্যাণের লক্ষে ১২ জন ব্যক্তি মিলে বছরের দুই ঈদকে লক্ষ রেখে ঈদ বাজারের জন্য একটি সঞ্চয় প্রকল্প গড়ে তোলেন। উদ্দেশ্য ঈদে পরিবার নিয়ে যেন সকল সদস্য ভালো খাবার এবং নতুন কাপড় কিনতে পারেন। তবে এই সিদ্ধান্তই যে মরিয়মের জন্য কাল হয়ে দাড়াবে, সেটা কল্পনাতেও ছিলনা তার।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন আদমজী বিহারী ক্যাম্প এলাকায় দীপ শিখা এই সমিতি খুলে বসেছেন মোসাঃ লিপি আক্তার ও তার স্বামী ফরিদ আহমেদ। যার কোন নিবন্ধন নেই। এই সমিতিতে চাকুরী করতেন মরিয়ম বেগম। বর্তমানে মরিয়মকে চাকুরীচ্যুত করে তার জায়গায় লিপি আক্তারের আপন বোন শিল্পি আক্তারকে নিয়োগ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী মরিয়ম বেগমের অভিযোগ, আমি দীর্ঘ সময় এই সমিতিতে কাজ করার সুবাদে মালিক পক্ষের অনেক গোপন তথ্য জেনে গেছি। তাদের গোপন কথা কাউকে ফাঁস করে দিতে পারি সেই ভয়েই তারা আমাকে বিভিন্ন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে আমাকে চাকুরীচ্যুত করেছে। আমাকে তারা ছয় মাসের বেতনও পরিশোধ করেনি।
শুধু তা-ই নয়, তারা আমার কাছে টাকা পাওনা দাবি করে আমার ঘর দখল করে নিয়েছে। এছাড়া আমাকে আটকে রেখে মারধর করে, এলাকার বখাটে ছেলে এবং পুলিশের মাধ্যমে ভয়-ভীতি দেখিয়েছে। এ ঘটনায় আমি এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি এবং প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে কারও কাছে ন্যায় বিচার পাইনি।
এরপর ন্যায় বিচার পাওয়ার আবেদন জানিয়ে ভুক্তভোগী মরিয়ম বেগম বিভিন্ন সময়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার, র্যাব-১১, সেনাবাহিনী ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এসব অভিযোগে মরিয়ম বেগম উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত দীপ শিখা নামে নিবন্ধহীন ঐ সমিতির মালিক লিপি আক্তার, তার স্বামী ফরিদ আহমেদ ও বোন শিল্পি আক্তার আমার ছয় মাসের বেতন আটকে রেখেছে। বেতন চাইলে নানা তালবাহানা করে। এছাড়া আমার মাধ্যমে সমিতিতে গ্রাহকদের জমানো টাকাও ফেরত দিচ্ছে না তারা।
তাদের কাছে আমি টাকা চাইতে গেলে তারা উল্টো আমাকে চোরের অপবাদ দিয়ে বখাটে ছেলেদের দিয়ে ধরে নিয়ে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে এবং আমাকে তাদের বাসায় দুই দিন আটকে রাখে।
পরবর্তীতে এ বিষয়ে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসে বিচার-শালিস করলেও তারা কারও কোন কথা মানে না। গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে তারা আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং আমার কাছে এক লক্ষ টাকা পাবে মর্মে জোরপূর্বক ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করায়।
মরিয়ম বলেন, আমি কোথাও ন্যায় বিচার না পেয়ে আদালতের স্বরণাপন্য হই এবং আমার সাথে অভিযুক্তদের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালতে মামলার কথা শুনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই ইলিয়াছ হোসেন অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে আমাকে শ^াসায়। তিনি আমাকে বলেন, ‘আমি কেন আদালতে মামলা করেছি, তাকে (এএসআই ইলিয়াছ) জিজ্ঞাসা করিনি কেন, আদালতে মামলা অভিযুক্তদের আমি কিছুই করতে পারবোনা।’
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই ইলিয়াছ হোসেন বলেন, এসব অভিযোগ সঠিক নয়। ওই নারী একাধিক অভিযোগ করেছে থানায়। যখন তার বসত ঘর নিয়ে ঝামেলা হয় এমন অভিযোগ পেলে তিনি নিজেই তাৎক্ষনিক সেখানে গিয়ে তা প্রতিহত করে উভয় পক্ষকে থানায় আসতে বললেও মরিয়ম থানায় আসেন নি। পরে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি আদালতে মামলা করেছি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।