জেলেনস্কির নতুন অস্ত্র এখন ‘চাটুকারিতা’
Published: 19th, January 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিশ্বনেতারা তার ভালো দিকগুলো তুলে ধরার জন্য তাড়াহুড়ো করছেন, অর্থাৎ চাটুকারিতা শুরু করেছেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ইউক্রেন। রবিবার এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।
ট্রাম্পকে চাটুকারিতা করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার নববর্ষের ভাষণে বলেছিলেন, “তার কোনো সন্দেহ নেই যে নতুন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট শান্তি অর্জন ও পুতিনের আগ্রাসনের অবসান ঘটাতে ইচ্ছুক এবং সক্ষম।”
এর মাত্র কয়েকদিন পরে জেলেনস্কি একজন আমেরিকান পডকাস্টারকে জানিয়েছিলেন, ট্রাম্প জিতেছেন কারণ তিনি কমলা হ্যারিসের চেয়ে ‘অনেক শক্তিশালী’। এছাড়া ট্রাম্প ‘দেখিয়েছেন যে তিনি বুদ্ধিবৃত্তিক এবং শারীরিকভাবে এটি (নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া) করতে পারেন।’
ট্রাম্পকে তোষামোদে চেষ্টাকারী বিশিষ্ট ইউক্রেনীয়দের মধ্যে জেলেনস্কি অবশ্য একা নন। গত বছরের নভেম্বর মাসে জেলেনস্কির দলের একজন এমপি ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করেছিলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তোষামোদি ইউক্রেনের সম্পূর্ণ নতুন কোনো পদ্ধতিও নয়। ২০১৯ সালের সিএনএন-এর একটি মতামত নিবন্ধে জেলেনস্কি ট্রাম্পকে ‘মহান শিক্ষক’ বলে প্রশংসা করেছিলেন।
২০২০ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ শেষে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন জেলেনস্কি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সহযোগিতা দিয়ে গেছে বাইডেন প্রশাসন। নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটাতে পারবেন। তবে এর জন্য ইউক্রেনকে তার কিছু ভূমি রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দিতে হবে।
ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের পলিসি ফেলো জোয়ানা হোসা সিএনএনকে বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, ট্রাম্পের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ আচরণ করার বিলাসিতা নেই জেলেনস্কির। ইউক্রেনের পক্ষে সর্বোত্তম ফলাফল নিশ্চিত করার জন্য ট্রাম্পকে অন্তত ইউক্রেনের পক্ষে আনার চেষ্টা করতে হবে, যা আমেরিকান সমর্থনের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।”
তিনি বলেন, "তার (জেলেনস্কির) সামনে একটাই পথ খোলা: ট্রাম্পকে তোষামোদ করা নতুবা পুতিনের কাছে আত্মসমর্পণ করা। তবে ভালো ফলাফলের চাটুকারিতা একটি ছোট মূল্য।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে নতুন করে শুরু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।