চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ কিস্তির ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড় এক মাসেরও বেশি সময় পিছিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। কিস্তি ছাড়ের প্রস্তাব আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি সংস্থার নির্বাহী পর্ষদের সভায় উপস্থাপনের কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ১২ মার্চ করা হচ্ছে। বোর্ড অনুমোদন করলে তার কয়েক দিন পর অর্থ ছাড় হতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে প্রতিটি কিস্তি পেতে কিছু শর্ত পরিপালন করতে হচ্ছে। চতুর্থ কিস্তির জন্য গত জুনভিত্তিক দেওয়া বিভিন্ন শর্তের মধ্যে কর সংগ্রহ ছাড়া সব শর্ত পূরণ হয়েছে। চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের আগে শর্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি দেখতে গত ৩ ডিসেম্বর ঢাকা সফরে আসে আইএমএফের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের বৈঠকে বারবারই কর আহরণ বাড়ানোর বিষয়টি অনেক গুরুত্ব পায় বলে জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা। তিনি আরও জানান, শুধু চতুর্থ কিস্তির জন্য নয়, আগের কিস্তিগুলোতেও কর আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়নি।

সূত্র জানায়, আইএমএফ প্রতিনিধি দল কর অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য চাপ দেয়। একই সঙ্গে কর-জিডিপি অনুপাত বছরে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির সঙ্গে নতুন করে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বাড়ানোর শর্তজুড়ে দেওয়া হয়। সরকার এ শর্ত নিয়ে দরকষাকষি করে। বাড়তি রাজস্ব আহরণের কৌশল হিসেবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেই অর্থবছরের মাঝপথে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ায় সরকার। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নানা মহল থেকে সমালোচনা শুরু হয়।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল ওষুধ, মোবাইল ফোন সেবা, রেস্তোরাঁ, পোশাক, মিষ্টিসহ কয়েকটি পণ্য ও সেবায় বাড়তি শুল্ক-কর কমায় সরকার। এতে করে বাড়তি রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আইএমএফের স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তারা গতকালও অর্থ মন্ত্রণালয়, এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে রাজস্ব বাড়ানোর অন্যান্য উদ্যোগের পাশাপাশি দ্রুত কর আদায় ও নীতি গ্রহণ সংস্থাকে আলাদা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

মূলত রাজস্ব বাড়ানোর শর্ত প্রতিপালন নিয়ে দরকষাকাষির কারণেই চতুর্থ কিস্তি পিছিয়ে যাচ্ছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর আইএমএফ মিশন প্রধান সংস্থাটির গবেষণা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রোইকোনমিকসের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও অর্থ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, চতুর্থ কিস্তির ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড়ে তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে তিনি জানান, চলমান কর্মসূচির আওতায় ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫৩০ কোটি করতেও তারা সম্মত।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইএমএফ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইলিশ রক্ষায় জাটকা শিকারে আজ থেকে ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও টেকসই সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে দেশব্যাপী জাটকা ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা। 

আগামী ৩০ জুন ২০২৬ পর্যন্ত চলবে এই ৮ মাস মেয়াদি নিষেধাজ্ঞা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং মৎস্য অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় ২৫ সেন্টিমিটারের ছোট ইলিশ (জাটকা) আহরণ, পরিবহণ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।

এর আগে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর ২০২৫ (১৯ আশ্বিন থেকে ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ) পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে প্রজননক্ষম ইলিশ রক্ষায় ‘ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫’ বাস্তবায়ন করা হয়। ওই সময়ে ডিমওয়ালা ইলিশ থেকে নিঃসৃত ডিমের পরিস্ফুটনের মাধ্যমে উৎপাদিত পোনা বর্তমানে উপকূলীয় নদ-নদী ও মোহনাসমূহে বিচরণ করছে। এসব পোনা নিরাপদে বেড়ে উঠতে পারলেই ভবিষ্যতে দেশের ইলিশ উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে বলে সরকার জানায়।  

নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে অনধিক ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়া লাগতে পারে। 

মৎস্য অধিদপ্তর সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, র‌্যাব, ও স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতায় কঠোরভাবে এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করবে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইলিশ রক্ষায় জাটকা শিকারে আজ থেকে ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা