পরিবারের দায়িত্বহীনতা অন্যতম কারণ: চসিকের তদন্ত কমিটি
Published: 11th, July 2025 GMT
নালায় পড়ে তিনবছরের শিশু হুমায়রার নিহতের ঘটনায় নিজেদের কোনো দায় পায়নি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) গঠিত তদন্ত কমিটি। যে নালাটিতে পড়ে শিশু নিহত হয়েছে সেটিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন উল্লেখ করে প্রতিবেদনে শিশুটির মৃত্যুর জন্য পরিবারের দায়িত্বহীনতাকে অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। এদিকে রাতে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে সিটি মেয়র ডা.
এদিকে শিশু নিহতের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এই ঘটনার জন্য চারটি করে আটটি পর্যবেক্ষণ ও কারণ, ভবিষ্যতে এ ধরণের দুর্ঘটনা রোধে সাতটি সুপারিশ করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে-কর্মস্থলে অপর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা, পরিবারের দায়িত্বহীনতা, মায়ের কর্মস্থলের ভবনের মূল ফটক উন্মুক্ত থাকা এবং দারোয়ান না থাকা, দুর্ঘটনাস্থলে মূল সড়ক ও বাইলেইনের অবস্থান এবং উচ্চতার তারতম্য।
সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- কর্মস্থলে কর্মীদের শিশুদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, জলাবদ্ধতায় শিশু ও বয়স্কদের প্রতি মনোযোগী হওয়া, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ সিস্টেমের ব্যবস্থা করা, ভবন নির্মাণ ও ব্যবহারে নীতিমালা মেনে চলা, ঝুঁকিপূর্ণ নালায় স্ল্যাব স্থাপন, আবাসিক এলাকায় কারখানা পরিচালনায় আইনগত বিধান নিশ্চিত করা ও নিরাপত্তামূলক সচেতনতার জন্য প্রচারণার ব্যবস্থা করা।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করায় তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তার আজিজ আহমদের মাধ্যমে সংবাদ মাধ্যমে তিনি একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন। তাতে সিটি মেয়র জানান, নালাটি একটি বেসরকারি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের সীমানায় অবস্থিত এবং গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন।
ঘটনার স্থানটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও সংশ্লিষ্ট বেসরকারি কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি যা দায়িত্বহীনতার পরিচয় বহন করে। শিশুটির মা ওই গার্মেন্টসে কাজ করেন। শিশুটির মা বা পরিবারও তাদের সন্তানের নিরাপত্তার বিষয়ে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করেনি যা দুঃখজনক ঘটনাটির জন্ম দিয়েছে।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনাস্থল আবাসিক এলাকা হওয়া সত্ত্বেও সেখানে কীভাবে একটি গার্মেন্টস কারখানা স্থাপিত হয়েছে তা জানতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) চিঠি দেওয়া হবে। এছাড়া আবাসিক এলাকায় গার্মেন্টস কারখানা পরিচালনা করায় গার্মেন্টস মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনের আইন শাখার মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত বুধবার বিকেল তিনটার দিকে নগরের উত্তর আগ্রাবাদ আনন্দিপুর এলাকায় নালায় পড়ে নিহত হন শিশু হুমায়রা। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে প্রধান করে কমিটি করা হয়। কমিটিকে এক কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র ম ন টস দ র ঘটন ব যবস থ পর ব র র জন য ঘটন র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’