ভিটেমাটি হারিয়ে গোমতীর চরে মানবেতর জীবন মা ও দুই মেয়ের
Published: 23rd, January 2025 GMT
কুমিল্লার দেবিদ্বারে স্বামীর ভিটা হারিয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে গোমতীর চরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন সহায়-সম্বল হীন এক বিধবা নারী। প্রচণ্ড শীত আর জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় প্রায় দেড় মাস ধরে সেখানে বিনিদ্র রাত কাটছে তাদের।
সরেজমিনে দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়ন এর চানপুর গ্রামের গোমতী নদীর চরে গিয়ে দেখা যায়, রাবেয়া বেগমের স্বামী আবুল কালাম দীর্ঘদিন যাবৎ দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। স্বামীর ক্যান্সারের চিকিৎসা করতে গিয়ে এক এক করে সব কিছু বিক্রি করতে হয় রাবেয়াকে। তবুও কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছিল না। স্বামীকে বাঁচাতে তাই শেষ সম্বল ও মাথা গোঁজার ঠাঁই একমাত্র ভিটেটাও বিক্রি করতে হয়েছে তাকে। রাবেয়ার সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে গত বছর জানুয়ারিতে মারা যান আবুল কালাম। স্বামীর মৃত্যুর পর কপর্দকহীন রাবেয়া যেন অথৈ সাগরে এসে পড়েন। এরই মাঝে প্রায় দেড় মাস আগে বিক্রি করা ভিটায় থাকা ঘরটি ভেঙে দখল নেয় বর্তমান মালিকরা। পরে কোথাও ঠাঁই না পেয়ে, গোমতী নদীর চরে একটি পরিত্যক্ত জায়গায় দুই মেয়েকে নিয়ে আশ্রয় নেন রাবেয়া।
ভাঙ্গাচুরা দুইটি টিনের চালা আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে ছাউনির মতো বানিয়ে তার নীচে বসবাস করছেন তারা। চালার খুপরিতে বাস করলেও তাতে নেই কোনো আসবাব। মা-মেয়ে তিনজন একটি নড়বড়ে চৌকিতে বিছানা পেতে রাত যাপন করেন। থাকা, খাওয়া সবই চৌকির ওপর। নেই রান্নাঘর, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা কিংবা নিরাপদ টয়লেট। নেই বিদ্যুৎ, রয়েছে সাপ, বিচ্ছু ও শিয়ালের ভয়। স্কুলপড়ুয়া দুই মেয়েকে নিয়ে এমন মানবেতর জীবন পার করছেন করছেন রাবেয়া বেগম।
মা রাবেয়া জানান, বৈবাহিক জীবনে তিনি চার কন্যার মা। এর মধ্যে দুই জনের বিয়ে হয়ে গেছে। বাকী দুই মেয়ের একজন আকলিমা আক্তার পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং আরেকজন সানজিদা আক্তার পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। স্বামীর ক্যান্সারের চিকিৎসা করতে গিয়ে শেষ সম্বল ও মাথা গোঁজার ঠাঁই ঘরের ভিটেটা বিক্রি করতে হয়েছে তাকে।
তিনি আরও জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর নিজের ভিটায় থাকা ঘরটি ভেঙ্গে তাদের উচ্ছেদ করে দেয় ভিটার বর্তমান মালিকরা। পরে কোথাও ঠাঁই না পেয়ে, গোমতী চরে এসে নদীর তীরবর্তী একটি পরিত্যক্ত জায়গায় দুইটি চালা দাঁড় করিয়ে বসবাস করছেন তারা। মাঘের শীত আর নিরাপত্তাহীনতায় দুই মেয়েকে নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তারা।
তিনি আরও জানান, সংসার চালাতে এখন তিনি একটি ভ্রাম্যমাণ দোকান বানিয়ে, মেয়েদের স্কুলের সামনে চটপটি, ফুচকা, ঝালমুড়ি বিক্রি করেন।
রাবেয়া বেগম আরও বলেন, দুই মেয়েকে নিয়ে মাথা গোঁজার জন্য সরকারিভাবে একটু জায়গা ও ঘরের ব্যবস্থা হলে উপকৃত হবো।
স্থানীয় ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো.
এ বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিগার সুলতানা বলেন, রাবেয়ার দুর্দশার বিষয়টি জেনে খুব খারাপ লাগল। এ বিষয়ে আমি যত দ্রুত সম্ভব খোঁজ-খবর নেব। সরকারিভাবে যতটুকু সম্ভব তাকে সহায়তা করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সায়েমের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে পাকিস্তানের জয়ে শুরু
জয়ের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকায় শেষ টি-টোয়েন্টি জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতেও জয় পেয়েছে তারা।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক সায়েম আইয়ুব। তার ৩৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান লাডারহিলে ৬ উইকেটে ১৭৮ রান করে। জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে ১৬৪ রানের বেশি করতে পারেননি। দারুণ ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে সায়েম ২০ রানে ২ উইকেট নেন। ১৪ রানের জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান শুরুতে শাহিবজাদা ফারহানের উইকেট হারায়। ১২ বলে ১৪ রান করে আউট হন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তিনে নেমে ফখর সায়েমকে সঙ্গ দেন। দুজন ৮১ রানের জুটি গড়েন। এ সময়ে ফখর ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ বলে ২৮ রান করেন। বাকি রান আসে সায়েমের ব্যাটে। এ সময়ে তিনি তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। হোল্ডারের বলে এলবিডব্লিউ হলে থেমে যায় তার ইনিংস।
এরপর হাসান নওয়াজের ১৮ বলে ২৪, সালমান আগার ১০ বলে ১১, ফাহিম আশরাফের ৯ বলে ১৫ রানে পাকিস্তান লড়াকু পুঁজি পায়। শেষ দিকে ১ বল খেলার সুযোগ পান হারিস। ছক্কায় উড়িয়ে পাকিস্তানের শেষটা ভালো করেন তিনি।
বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সেরা ছিলেন শামার জোসেফ। ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট।
লক্ষ্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৭২ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর হঠ্যাৎ ছন্দপতন। ৫ রান পেতেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ওই ধাক্কার পর তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। জনসন চার্লস ও জুয়েল অ্যান্ড্রু ৩৫ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। শেই হোপ (২), গুদাকেশ মোটি (০), শেফরন রাদারফোর্ড (১১) ও রস্টন চেজ (৫) দ্রুত আউট হন। শেষ দিকে পরাজয়ের ব্যবধান কমান হোল্ডার ও জোসেফ। হোল্ডার ১২ বলে ৪ ছক্কায় ৩০ রান করেন। ১২ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২১ রান করেন জোসেফ ।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে সেরা ছিলেন হাসান নওয়াজ। ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার। সায়েমের ২ উইকেট বাদে ১টি করে উইকেট পেয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ও সুফিয়ান মুকিম।
আগামীকাল একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা/ইয়াসিন