রাষ্ট্রীয়ভাবে ২ মার্চকে ‘পতাকা দিবস’ পালনের দাবি
Published: 24th, January 2025 GMT
আগামী ২ মার্চ রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় পতাকা দিবস পালনের দাবি জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সামাজিক সংগঠন ‘হৃদয়ে পতাকা ২ মার্চ’। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়। সংগঠনটির এক যুগ পদার্পণ উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কবি শাহানা সুলতানার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর হোসেন ঈসার সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন সাবেক তথ্য সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ।
সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, এ দেশে যতগুলো আন্দোলন হয়েছে সবকিছুর মূলে ছিল বাংলা ভাষা। ব্রিটিশরা, পাকিস্তানিরা এ ভাষাকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু সব আন্দোলনেই মাতৃভাষাকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে সফল হয়েছি। সুতরাং এ ভাষাকে আঁকড়ে ধরে থাকতে হবে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই ছাত্ররা পতাকা নাড়িয়ে যুদ্ধ শুরু করেছিল।
সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, সরকারের উচিত একটা ‘ইতিহাস কমিশন’ গঠন করা। যারা যে অবদান রেখেছেন, প্রত্যেকের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
নাজমুল হক প্রধান বলেন, ২ মার্চকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে ইতিহাসকে ধারণ করা। তানিয়া রব প্রশ্ন তোলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এসে পতাকা দিবসের স্বীকৃতি চাইতে হবে কেন।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ২ মার্চও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আওয়ামী লীগ এককেন্দ্রিক ইতিহাস তৈরি করেছিল। ছাত্রনেতাদের উচিত প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী আ স ম রবকে সম্মাননা দেওয়া।
সভায় বক্তব্য দেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী, আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর পুত্রবধূ পারভীন নাসের খান ভাসানী প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন হৃদয়ে পতাকার প্রধান উপদেষ্টা এস এম সামসুল আলম নিক্সন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি