টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও অর্থাভাবে সাঁথিয়ার নাড়িয়াগদাই গ্রামের রাকিবুল ইসলামের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। তবে তাঁর স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। তাঁর ভর্তির খরচের দায়িত্ব নিয়েছেন উপজেলার হলুদঘর গ্রামের বাসিন্দা ও মোহাম্মদ আলী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা লন্ডন প্রবাসী এস এম মোস্তাক আহমেদ।

পাশাপাশি জোড়গাছা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন উল্লাস রাকিবুলকে মেডিকেল সরঞ্জাম কঙ্কাল কিনে দিয়েছেন। গত বুধবার সমকালে ‘মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তায় রাকিবুল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর বিষয়টি নজরে আসে তাদের।

বৃহস্পতিবার মোস্তাক আহমেদের পক্ষ থেকে মেডিকেলে ভর্তির খরচ বাবদ ২৫ হাজার টাকা রাকিবুল ও তাঁর মায়ের হাতে তুলে দেন ফাউন্ডেশনের সদস্য মনিরুল ইসলাম ও লিমন হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, নাড়িয়াগদাই উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ওয়াহেদুল ইসলাম, শরীরচর্চা শিক্ষক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

মোস্তাক আহমেদ বলেন, খবরটি দেখে রাকিবুল ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভর্তির খরচের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এলাকার একটি মেধাবী ছেলে টাকার অভাবে মেডিকেলে ভর্তি হতে পারবে না, এটি হয় না। দায়িত্ববোধ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তাঁকে সহযোগিতা করেছেন তিনি।

সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, অর্থাভাবে এলাকার একটি সন্তানও যেন পড়ালেখা থেকে ঝরে না যায়। সেজন্য সবাইকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। রাকিবুলের বাবা রাজা মোল্লা বলেন, ‘সহযোগিতা করায় আমরা খুশি হয়েছি। যারা সহযোগিতা করেছেন, তাদের ধন্যবাদ।’

রাকিবুল বলেন, ‘যারা সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব। তবে পড়ালেখার খরচ নিয়ে এখন চিন্তা হচ্ছে। ইচ্ছাশক্তি থাকলে দারিদ্র্য কোনো ব্যাপার নয়, এটি অজুহাত মাত্র। ভবিষ্যতে ভালো চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই।’

নাড়িয়াগদাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান বলেন, ছেলেটি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেও ভর্তির সামর্থ্য ছিল না। এখন সে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ খুঁজে পেল।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম সহয গ ত র খরচ সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৬ সালের হজের রোডম্যাপ, ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন

আগামী বছরে হজে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি হজযাত্রীদের চলতি বছরের ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন শেষ করতে হবে। একই সঙ্গে নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মে হজযাত্রীদের তথ্য আপলোড এবং গ্রুপ গঠন শুরু করতে হবে।

এই সময়সীমা বে‌ধে দি‌য়ে গত ৮ জুন ২০২৬ সালের হজের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সৌদি সরকার।

রোডম‌্যা‌পের নি‌র্দেশনা অনুযায়ী সৌদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের ৯ ন‌ভেম্বর হজচুক্তি সম্পন্ন হ‌বে। আগামী ১০ জুলাই হজের কোটা ঘোষণা করবে সৌদি সরকার। তাছাড়া বা‌ড়ি ভাড়া, প‌রিবহনসহ অন‌্যান‌্য প্রক্রিয়া শেষ করার পর হজযাত্রীদের ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে ২০২৬ সা‌লের ৮ ফেব্রুয়ারি। ভিসা দেওয়ার কার্যক্রম চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত এবং হজ ফ্লাইট শুরু হবে ১৮ এপ্রিল।

আরো পড়ুন:

ইউরোপীয় গুপ্তচর যেভাবে মক্কায় ঢুকেছিলেন

প্রথম ফিরতি ফ্লাইটে দেশে ফিরলেন ৩৬৯ হাজি

এদিকে, হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) ও হজ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সৌ‌দি সরকা‌রের হ‌জের রোডম‌্যা‌প অবহিত ক‌রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রোববার (১৫ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে চি‌ঠি পাঠানো হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চি‌ঠি‌তে আরও বলা হ‌য়ে‌ছে, মেডিকেল ফিটনেস ছাড়া কোনো হজযাত্রী হজে যেতে পারবেন না। বিশেষ করে হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার সিরোসিস, কিডনি রোগে আক্রান্ত, নিউরোলজিক্যাল, মানসিক রোগ, ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা, সংক্রামক যক্ষ্মা এবং কেমোথেরাপি/রেডিওথেরাপি গ্রহণকারী ক্যানসার আক্রান্ত রোগী হজের নিবন্ধন করতে পারবেন না।

সৌ‌দি স‌রকা‌রের রোডম্যাপ অনুযায়ী, নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ক্যাম্পের তথ্য অবলোকন এবং অর্থ স্থানান্তরের সুবিধা চালু হবে ২৬ জুলাই। ৯ থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত চলতি হজের ক্যাম্পগুলো আগামী হজ মৌসুমে গ্রহণের সুযোগ থাকবে। নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে (ক্যাম্পের ভাড়া ও মাশায়ের প্যাকেজ) চুক্তি করা যাবে।
২৪ আগস্টের মধ্যে নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সেবা প্যাকেজ, আবাসন এবং পরিবহনের চুক্তি শুরু এবং হজযাত্রী পরিবহনের এয়ারলাইন্স নিয়োগ ও ফ্লাইট সময়সূচি প্রস্তুত করতে হবে। ৯ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার ও সৌদি সরকারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক হজচুক্তি স্বাক্ষর হবে।

‘হজ সম্মেলন ও প্রদর্শনীতে’ সেবা প্রদানকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সেবা চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে সেবা প্যাকেজের (তাঁবু ভাড়া মাশায়ের প্যাকেজ) প্রয়োজনীয় অর্থ পাঠাতে হবে।

আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে সেবা গ্রহণের (তাঁবু ভাড়া+মাশায়ের প্যাকেজ) চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। একইসঙ্গে এয়ারলাইন্স ও ফ্লাইট সিডিউল চূড়ান্ত করতে হবে। আগামী বছর ২০ জানুয়ারি মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের বাড়ি/হোটেল এবং পরিবহন চুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ স্থানান্তর শুরু হবে।

নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের জন্য বাড়ি/হোটেল ভাড়া এবং পরিবহনের চুক্তি চূড়ান্ত করতে হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি হজযাত্রীদের ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত।

রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী বছরের ১৮ এপ্রিল হজের উদ্দেশ্যে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হবে। ২০২৬ সালের হজে হজযাত্রীদের জন্য সর্বোচ্চ দুইটি সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা যাবে। নুসুক মাসার প্লাটফর্মে আগামী ১০ জুলাই হজ কোটা ঘোষণা করা হবে।

আগামী বছরের হজে সব ধরনের চুক্তি এবং সেবা সংক্রান্ত পেমেন্ট নুসুক মাসার প্লাটফর্মে সম্পন্ন করতে হবে। এর বাইরে কোনো পেমেন্ট কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। সব হজযাত্রীর কোরবানির অর্থ নুসুক মাসার প্লাটফর্মে আবশ্যিকভাবে জমা দিতে হবে। হজযাত্রীদের খাবারের জন্য সৌদি ক্যাটারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। এছাড়া হজযাত্রী ব্যবস্থাপনার কাজে হজে গমনকারীদের তাঁবু, সার্ভিস প্যাকেজ এবং পরিবহন সেবামূল্য দেওয়া বাধ্যতামূলক।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ