বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কারের সংশোধিত তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ায় বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন লেখক-গবেষক ড. মোহাম্মদ হাননান। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতির মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

গত ২৩ জানুয়ারি ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ ঘোষণা করা হয়। পরে ২৫ জানুয়ারি তালিকাটি স্থগিত করা করে বুধবার সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তিনজনের নাম বাদ পড়েছে। পূর্বের তালিকায় মোহাম্মদ হাননানকে মুক্তিযুদ্ধ, কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদকে কথাসাহিত্য এবং ফারুক নওয়াজকে শিশুসাহিত্যে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। এরমধ্যে সেলিম মোরশেদ পুরস্কারে মনোনীতদের তালিকা স্থগিতের পর পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

বিবৃতিতে ড.

হাননান বলেন, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ প্রাপ্তির তালিকা থেকে আমার নাম বাদ দেওয়ায় আমি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

কারো প্রতি অভিযোগ নেই উল্লেখ করে লেখক আরও উল্লেখ করেন, ‘দীর্ঘসময় ধরে লিখলেও রাষ্ট্রীয় কোনো পুরস্কারের জন্য মনোনীত হইনি, গত ১৬ বছরেও না। এ বছর আমার জন্য ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার’ ঘোষণার পর আমার নাম বাদ দেওয়ায় আমি যে দলহীন, গোত্রহীন একজন লেখক তা প্রমাণিত হয়েছে। আমি এজন্য স্বস্তি অনুভব করছি। আমার নাম বাদ দেওয়ায় কোনো খেদ নেই, অভিযোগ নেই। তবু সবাই শান্ত থাকুক।’

তিনি বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে লেখালেখি করছি। ‘বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস’ নামক গ্রন্থের ১৪টি খণ্ডসহ আমার মোট গবেষণা গ্রন্থের সংখ্যা ৫৮টি, শিশু-কিশোর সাহিত্য ২০টিসহ সম্পাদিত ও অন্যান্য গ্রন্থ মিলে আমার প্রকাশনা সংখ্যা এখন ১৩৪টি।

তিনি আরো লিখেছেন, ১৯৯১ সালে আমার লেখা ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ প্রকাশিত হয়। পরবর্তীকালে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরও কাজ করি। ২০২৩ সালে প্রকাশিত হয় ‘বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে আলেম সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক গ্রন্থ। তথ্যগুলো দিলাম এ জন্য যে, আমার সম্পর্কে মানুষ খুব কমই জানে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ল এক ড ম এক ড ম

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে

সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।

পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।

অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ  ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।

একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের  প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে,  মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • সংশোধিত সাইবার অধ্যাদেশও আন্তর্জাতিক মানের হয়নি
  • জার্মানির ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনা, জেনে নিন সব তথ্য
  • ২০২৪ সালে মেটার কাছে ৩৭৭১ অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে সরকার
  • কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইরান-ইসরায়েল
  • তিন চ্যাম্পিয়ন দলসহ যেসব তারকাকে দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে
  • ৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ