বিপিএলে পারিশ্রমিক সংক্রান্ত জটিলতার মধ্যে চিটাগং কিংসের স্বত্বাধিকারী সামির কাদের চৌধুরীর একটি মন্তব্য ক্রিকেট মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। জাতীয় দলের ক্রিকেটার পারভেজ হোসেন ইমনকে নিয়ে দেওয়া তার মন্তব্যকে ‘অপমানজনক’ বলে উল্লেখ করেন বিসিবি পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন ফাহিম। শনিবার বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করা হলে সামির কাদের ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিসিবির কর্মকর্তারা।

বিপিএলে অংশ নেওয়া ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক সংক্রান্ত বিষয়ে চিটাগং কিংস সময়মতো অর্থ পরিশোধ করেনি। ইমনসহ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় তাদের পাওনা নিয়ে কথা বলার পর এ বিষয়ে অসংলগ্ন মন্তব্য করেন সামির কাদের। তিনি বলেন, 'আমি সন্তুষ্ট না হওয়ায় ইমনকে পারিশ্রমিক দেইনি, আমার টাকা গাছে ধরে না।' এই মন্তব্য নিয়ে চরম বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং বিসিবির কর্মকর্তারা একে খেলোয়াড়দের প্রতি ‘অপমানজনক’ আচরণ বলে মন্তব্য করেন।

শনিবার বিপিএলের লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ চলাকালে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি চিটাগং কিংস ও দুর্বার রাজশাহীর মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন এবং ইমনকে নিয়ে দেওয়া মন্তব্যের জন্য সামির কাদেরকে সতর্ক করেন। বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমকে নাজমুল আবেদীন জানান, চিটাগং কিংসের মালিক তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি, আমরা এতে খুবই অসন্তুষ্ট। জাতীয় দলের ক্রিকেটার হোক বা না হোক, কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গে এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। সামির কাদের স্বীকার করেছেন যে তার ব্যবহার ঠিক হয়নি এবং তিনি ক্ষমা চেয়েছেন।'

জানা গেছে, চিটাগং কিংসের খেলোয়াড়দের মধ্যে ইমনই পারিশ্রমিক ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন। তিনি কয়েকজন সতীর্থের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন এবং সম্ভাব্য সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করেন। এই আলোচনা সামির কাদেরের কানে পৌঁছালে তিনি ইমনকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। এই ঘটনায় বিসিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, সে বিষয়ে নাজমুল আবেদীন বলেন, 'আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানাতেও পারি, এতে কোনো সমস্যা নেই।'

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

সন্তানের বন্ধু হতে চাইলে

সন্তান যে কতটা প্রিয় তা ভাবে ও ভাষায় প্রকাশ করার ক্ষমতা অধিকাংশ মানুষেরই থাকে না। সন্তান সব মা-বাবার জীবনে সবচেয়ে বড় সম্পদ। জন্মসূত্রে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর, গভীর, ভালোবাসা, স্নেহ, স্বার্থহীন, নির্ভেজাল এ সম্পর্ক তৈরি হয়। 
ছোট্ট শিশু থেকে বেড়ে ওঠার সময়টায় মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক আনন্দের, মজার, কষ্টের, দুঃখের, হাসির– মোট কথা ঘটনাবহুল ও স্মৃতিময়। মা-বাবা সন্তানের জন্য বহুমুখী সম্পর্ক পালন করেন। কখনও বন্ধু, শিক্ষক, সাহায্যকারী, সহমর্মী, অভিভাবক, ভ্রমণসঙ্গী হয়ে। এ যাত্রা মোটেও সহজ নয়। সামান্য কারণে সন্তানের সঙ্গে তৈরি হতে পারে দূরত্ব ও ভুল বোঝাবুঝি। 
সন্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও বন্ধুত্ব বজায় রাখার জন্য মা-বাবার কী করা উচিত– জানতে চেয়েছিলাম সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মনোচিকিৎসক বাপ্পা আজিজুলের কাছে। তিনি জানান, ‘প্যারেন্টিং বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো কোর্স বা ডিগ্রি নেই। প্যারেন্টিং শিশুর বয়স অনুসারে পরিবর্তিত হয়। মোটামুটি ৩টি বয়সে ভাগ করে মা-বাবার শিশুর সঙ্গে আচরণ ও ব্যবহারে ভিন্নতা আনা যেতে পারে।’ 
১. বাচ্চার বয়স ০-১২ বছর পর্যন্ত চাইল্ড প্যারেন্টিং। 
২. ১৩-১৯ বছর বয়সীদের জন্য টিন প্যারেন্টিং। 
৩. ২০ বছর থেকে শুরু করে ৩০-৩২ বছর পর্যন্ত অ্যাডাল্ট প্যারেন্টিং। 
একেক বয়সী সন্তানের জন্য পিতামাতার ভূমিকা একেক রকম হয়। সন্তানকে আদর, সোহাগ, কোলে-পিঠে নেওয়া, চুমু, স্নেহ, চক্ষুশীতল করে গড়ার মূল বয়স ১০ বছর বয়স পর্যন্ত। তাই বলে আপনার যে বাচ্চার বয়স ১০ পেরিয়ে গেছে তার জন্য হতাশ হবেন না, তার সঙ্গে দূরত্ব বাড়াবেন না। এখনই পজিটিভ প্যারেন্টিং শুরু করুন। সব ঠিক হয়ে যাবে। সন্তান আপনাকে বন্ধু ভাববে। দূরত্ব যাবে ঘুচে। সাধারণত প্যারেন্টিং চার ধরনের– 
ডিকটোরিয়াল বা একনায়কতন্ত্র: এমন ধরনের পিতামাতার ইচ্ছা পালন করতে হবে। সন্তান নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। 
অথরিটিটিভ বা কর্তৃত্বশীল: এমন ধরনের মা-বাবা সন্তানের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তিতে আবদ্ধ হন। যেমন– তুমি যদি আমাদের কথা শোন তবে আমরা তোমাকে এ সুযোগ-সুবিধা দেব।
পারমিসিভ বা অনুমতিসূচক: এমন ক্ষেত্রে মা-বাবা সন্তানকে অবাধ স্বাধীনতা বা ছাড় দেন; যা ইচ্ছা করলেও খারাপ কিছু যাতে না করে সেই পরামর্শ দেওয়া থাকে। 
ডেমোক্রেটিক বা গণতান্ত্রিক: এ পদ্ধতিতে পিতামাতা সন্তানের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। প্যারেন্টিংয়ের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি এখন সারাবিশ্বে সমাদৃত হচ্ছে।
কিশোর-কিশোরীদের ওপর অতিরিক্ত ও অযাচিত শাসন চাপিয়ে দেবেন না। এ বয়স বুঝিয়ে বলার। যেসব মা-বাবা বাচ্চাদের লেখাপড়ার ফলাফল আশানুরূপ না হলে বকা দেন বা পড়াশোনাকেই সাফল্যের একমাত্র উপায় মনে করেন তাদের বলছি– 
১. সন্তানকে অভয় দিন। আশ্বস্ত করুন; যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। এখন কানের কাছে বারবার একই কথা বলতে থাকলে হিতে বিপরীত হতে পারে। আপনার শীতল গলা, অকৃত্রিম ভালোবাসা, মানসিক সাপোর্ট তার আত্মপর্যালোচনার জন্য যথেষ্ট হবে। 
২. সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দিন। সময় দেওয়া মানে সন্তানের পেছনে গোয়েন্দাগিরি করা নয়। সন্তানের বন্ধু হোন। ওর চোখে আদর্শ মা-বাবা হোন। মানসম্মত সময় দিন। সন্তানের সঙ্গে খেলুন। সৃজনশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত থাকুন। ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে গল্প করুন। 
৩. সন্তানের সঙ্গে কথা বলুন। ওদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তাহলে মা-বাবার সঙ্গে গ্যাপ (জেনারেশন গ্যাপ) কমে আসবে। কোনো বিষয়ে সমস্যা থাকলে সেটিও জানা যাবে। আপনার সন্তানের মনে সাহস ও আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। মন হালকা হবে। ইমোশন ভেন্টিলেশন হবে।
৪. সন্তানের লক্ষ্য নির্ধারণে সহযোগী হোন। নিজের সিদ্ধান্ত সন্তানের কাঁধে জোর করে চাপিয়ে দেবেন না। রেজাল্ট, সুযোগ, সক্ষমতা ইত্যাদি বিবেচনায় আনুন। সন্তানকে সুপরামর্শ দিন। তবে দিনশেষে নিজের জীবনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তাকে নিতে দিন। 
৫. সন্তানের কাছে প্রত্যাশা কম করুন। ওদের আচরণে, ব্যবহারে বা লেখাপড়ার ফলাফলে হতাশ হবেন না। প্রত্যাশা কেবল চাপ তৈরি করে। এক সন্তানের সঙ্গে অন্যজনের বা অন্যদের সঙ্গে অযথা তুলনায় যাবেন না। v

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করার অভিযোগ
  • মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবি ১০৪ নাগরিকের
  • সন্তানের বন্ধু হতে চাইলে
  • চট্টগ্রামে অটোরিকশা চালকদের সমাবেশ পণ্ড, গ্রেপ্তার তিন
  • চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সমাবেশ পণ্ড, আটক ৩
  • খুলনায় কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১
  • পুলিশের ওপর হামলা করে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা, গ্রেপ্তার ৩
  • রিকশাচালকদের সমাবেশ থেকে বাসদ নেতাসহ তিনজন গ্রেপ্তার
  • চট্টগ্রামে ব্যাটরিচালিত রিকশা শ্রমিকদের সমাবেশ পণ্ড, আটক ৩
  • গতকালের বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের জন্য ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়ার কথা বোঝাতে চেয়েছি: জামায়াত নেতা তাহেরের বিবৃতি