ইমনকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন চট্টগ্রামের মালিক
Published: 2nd, February 2025 GMT
বিপিএলে পারিশ্রমিক সংক্রান্ত জটিলতার মধ্যে চিটাগং কিংসের স্বত্বাধিকারী সামির কাদের চৌধুরীর একটি মন্তব্য ক্রিকেট মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। জাতীয় দলের ক্রিকেটার পারভেজ হোসেন ইমনকে নিয়ে দেওয়া তার মন্তব্যকে ‘অপমানজনক’ বলে উল্লেখ করেন বিসিবি পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন ফাহিম। শনিবার বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করা হলে সামির কাদের ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিসিবির কর্মকর্তারা।
বিপিএলে অংশ নেওয়া ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক সংক্রান্ত বিষয়ে চিটাগং কিংস সময়মতো অর্থ পরিশোধ করেনি। ইমনসহ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় তাদের পাওনা নিয়ে কথা বলার পর এ বিষয়ে অসংলগ্ন মন্তব্য করেন সামির কাদের। তিনি বলেন, 'আমি সন্তুষ্ট না হওয়ায় ইমনকে পারিশ্রমিক দেইনি, আমার টাকা গাছে ধরে না।' এই মন্তব্য নিয়ে চরম বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং বিসিবির কর্মকর্তারা একে খেলোয়াড়দের প্রতি ‘অপমানজনক’ আচরণ বলে মন্তব্য করেন।
শনিবার বিপিএলের লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ চলাকালে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি চিটাগং কিংস ও দুর্বার রাজশাহীর মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন এবং ইমনকে নিয়ে দেওয়া মন্তব্যের জন্য সামির কাদেরকে সতর্ক করেন। বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমকে নাজমুল আবেদীন জানান, চিটাগং কিংসের মালিক তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি, আমরা এতে খুবই অসন্তুষ্ট। জাতীয় দলের ক্রিকেটার হোক বা না হোক, কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গে এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। সামির কাদের স্বীকার করেছেন যে তার ব্যবহার ঠিক হয়নি এবং তিনি ক্ষমা চেয়েছেন।'
জানা গেছে, চিটাগং কিংসের খেলোয়াড়দের মধ্যে ইমনই পারিশ্রমিক ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন। তিনি কয়েকজন সতীর্থের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন এবং সম্ভাব্য সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করেন। এই আলোচনা সামির কাদেরের কানে পৌঁছালে তিনি ইমনকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। এই ঘটনায় বিসিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, সে বিষয়ে নাজমুল আবেদীন বলেন, 'আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানাতেও পারি, এতে কোনো সমস্যা নেই।'
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’