বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে আহ্বায়ক করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছিল তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে।
ঘোষিত কমিটিতে সদস্য সচিব পদ রাখা হয়নি।

কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাখা হয়েছে নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুঁইয়াকে। যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, শরীফ আহমেদ টুটুল এবং সদস্য রাখা হয়েছে মো: গিয়াস উদ্দিনকে।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দল‌টির সি‌নিয়র যুগ্ম মহাস‌চিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আজ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে কমিটি আসছে।

এই অবস্থায় দলের মধ্যে কোনো বৈরিতা না রেখে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে চাই। আমি সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

১৯৮২ সালে বিএনপির সিদ্ধিরগঞ্জ চিটাগং রোড আঞ্চলিক কমিটির মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। 

এরপর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্র দলের সভাপতি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুব দলের সভাপতি, জেলা যুব দলের যুগ্ম আহ্বায়ক, জেলা যুব দলের সভাপতি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব, নারায়ণগঞ্জ  জেলা বিএনপির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক (স্বাক্ষর ক্ষমতাসহ), জেলা বিএনপির সদস্য সচিব, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় যুব দলের সহ-ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মামুন মাহমুদ। 

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মামুন মাহমুদ রাজনীতি করতে গিয়ে প্রথম কারাভোগ করেন ১৯৯৭ সালে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গত ১৫ বছরে অনেক বার গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করেছেন তিনি।

একজন পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। সোনারগাঁও ফজলুল হক উইমেন্স কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন অধ্যাপক মামুন মাহমুদ । 

উল্লেখ্য , গত (২৪ ডিসেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। আর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় অতিসত্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র কমিটি ঘোষণা করা হবে।

 গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের এই কমিটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আসতে থাকে। অভিযোগ তদন্তে একটা কমিটি গঠন করে দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। সেই কমিটির সুপারিশে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হল।

প্রসঙ্গত, গত ২০২৩ সালের ১৮ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলনে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সভাপতি ও গোলাম ফারুক খোকন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।

 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ ল স দ ধ রগঞ জ ব এনপ র স য ব দল র কম ট র স সদস য স র কম ট

এছাড়াও পড়ুন:

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ

ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না। 
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস চালু হচ্ছে ১০ মাস পর
  • অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
  • আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
  • মে দিবসের সমাবেশকে সফল করতে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভা 
  • নারায়ণগঞ্জে বালক (অনূর্ধ্ব-১৫) ফুটবল প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু
  • নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি
  • জেলা প্রশাসককে ২৪’র শহীদদের স্মারক দিল জামায়াত
  • কমিউনিষ্ট পার্টির হাফিজের বিরুদ্ধে ইসমাইলের সংবাদ সম্মেলন
  • কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ