শিক্ষার্থীর আদলে সরস্বতী দেবী, ব্যতিক্রমী প্রতিমায় মুগ্ধ ভক্তরা
Published: 3rd, February 2025 GMT
শহরের গলি দিয়ে হাতে টানা রিকশায় চড়ে যাচ্ছে একটি মেয়ে। একহাতে বই, আরেক হাতে বীণা তার। গানের ক্লাস শেষে বাড়ি ফিরছেন তিনি। তার বাহনের প্রতীক রাজহাঁসও রয়েছে। অত্যন্ত সুনিপুন কারুকার্যের মাধ্যমে সরস্বতী দেবীর এই রূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
কারুকার্য দেখে বোঝার উপায় নেই শুধুমাত্র কাগজ আর বাঁশ ব্যবহারে নির্মাণ করা হয়েছে এই সুন্দর প্রতিমা। শুধু তাই নয়, সরস্বতী দেবীর এই প্রতিমা নির্মাণে প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থী টানা ২১ দিন কাজ করেছেন। নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। শিক্ষার্থী ও স্থানীয় যুবসমাজ নিজেরা চাঁদা দিয়ে প্রতিমা নির্মাণের ব্যয় জুগিয়েছেন।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) পাবনার চাটমোহর উপজেলার বোঁথড় চড়কবাড়ি মাঠে দেখা গেছে ব্যতিক্রম ও নজরকাড়া সরস্বতী দেবীর প্রতিমাটি।
আরো পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
চাটমোহরের সন্তান যারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারা এবার ব্যতিক্রম কিছু করার চেষ্টায় এই প্রতিমা নির্মাণ করেছেন। যারাই দেখছেন তারা সবাই প্রশংসা করছেন।
সরস্বতী দেবীর প্রতিমায় পূজা করেন ভক্তরা
হিন্দুধর্মে জ্ঞান, সঙ্গীত, শিল্পকলা, বাক্য, প্রজ্ঞা ও বিদ্যার্জনের দেবী হলেন সরস্বতী। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসবগুলোর একটি এই সরস্বতী পূজা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে নানা আয়োজনে সরস্বতী পূজা হয়ে থাকে। তবে এবার আলাদাভাবে নজর কেড়েছে সরস্বতী দেবীর ব্যতিক্রম এই প্রতিমা।
বোঁথড় চড়কবাড়ি এলাকার জাগতিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক সমীর বিশ্বাস বলেন, “বর্তমানে মানুষ ডিজে প্যান্ডেল সাজিয়ে অনুষ্ঠান করে। আমরা যুব সমাজ মনে করলাম, গতানুগতিক ছেড়ে আলাদা বা ভিন্ন কিছু করব। পুরাতন কিছু ভালো জিনিস আছে, যা পুরাতন বলেই সব শেষ হয়ে যায় তা নয়। আমরা সেই পুরাতন স্মৃতিগুলো মানুষের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।”
তিনি আরো বলেন, “গত ২১ দিন ধরে এই প্রতিমাটি নির্মাণ করা হয়েছে। আজ সকাল ১০টায় নির্মাণকাজ শেষ হয়। চাটমোহরের সন্তানরা যারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছেন এমন প্রায় ৮০ জন মিলে এটি নির্মাণ করেছেন। এই প্রতিমা নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। নিজেরা চাঁদা দিয়ে ব্যয় বহন করেছি।”
এই শিল্পকর্মের প্রধান ভাস্কর শিল্পী ইউডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন অ্যান্ড আর্টস বিভাগের শিক্ষার্থী রতন বর্মণ ও কৈলাশ চক্রবর্তী জানান, প্রতিবছরই সরস্বতী পূজায় সবাই কিছু না কিছু কাজ করে। এবার নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছেন তারা। শুধুমাত্র খবরের কাগজ, কার্টুন বক্স, বাঁশ পাতার কাগজ ও বাঁশের ব্যবহার করে সুন্দর প্রতিমাটি নির্মাণ করেছেন তারা।
রতন বর্মণ বলেন, “কলকাতা শহরে যেমন হাতে টানা রিকশা একটি ঐতিহ্য বহন করে আসছে যুগ যুগ ধরে। সেই ঐতিহ্যকে ধারণ করে আমাদের প্রাণের চাটমোহর শহরকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। চাটমোহরেরই একজন মেয়ে গানের ক্লাস শেষে হাতে টানা রিকশায় চড়ে পুরোনো চাটমোহর শহরের গলি দিয়ে বাড়ি ফিরছেন-এমন বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যার মাধ্যমে মা সরস্বতীর একটি রূপ ফুটে উঠেছে। এটি মানুষকে আবেগ তাড়িত করবে, আলাদাভাবে নাড়া দেবে। প্রতিমাটি দেখে সবাই প্রশংসা করছেন।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ম ণ কর কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
ফতুল্লার লামাপাড়ায় মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, কোর্স সমাপনী সনদ প্রদান, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থতার বর্ষপূর্তি ও খেলাধূলার আয়োজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।
মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়াস বিগত ২২ বছর যাবত নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা করে যাচ্ছে।
সব ধরনের আইন ও বিধি-বিধান মেনে সেবার মানোন্নয়ন প্রয়াসের বর্তমান লক্ষ্য। শুধু চিকিৎসা সেবা প্রদান নয়, বরং মানসম্পন্ন টেকসই সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম কেন্দ্রটি পরিচালনা করে থাকে।
জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রয়াসে চিকিৎসা কোর্স সম্পন্নকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান, প্রাক্তন সদস্যদের মনিটরিং, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থ থাকার স্বীকৃতি ও জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনায় অংশগ্রহণ প্রয়াসের টেকসই চিকিৎসা পরিকল্পনার অংশ।
তিনি আরো বলেন, আমরাই প্রথম নারায়ণগঞ্জে ৪০ বেডে লাইসেন্স প্রাপ্ত মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রয়াসের প্রতিষ্ঠা ২০০৩ সালে হলেও আমরা লাইসেন্স পেয়েছি ২০০৬ সালে। গত ২০২১ সাল থেকে আমরা প্রতিবছর সরকারি অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসছি।
এসময় তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি ও প্রাক্তন সদস্যদের প্রয়াসের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংযুক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম, অফিসার এডমিন সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার শেখ ফরিদ উদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, শওকত হোসেন, লিটন, আমজাদ, বাবুসহ রিকোভারীবৃন্দ।