ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) এক সদস্যকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে ভাঙ্গা আসার সময় তাঁর ওপর মুনসুরাবাদ গ্রামেই এ হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহত ওই ইউপি সদস্যের নাম আলমগীর মোল্লা (৪২)। তিনি ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও মুনসুরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা।

গুরুতর আহত অবস্থায় আলমগীর মোল্লাকে প্রথমে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে। একপক্ষের নেতৃত্ব দেন হামিরদী ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলমগীর মোল্লা ও অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন একই ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য বাবর আলী মাতুব্বর। সর্বশেষ মাসখানেক আগে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছিল। এর আগেও অসংখ্যবার দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। পূর্বশত্রুতার জের ধরে শনিবার ইউপি সদস্যের ওপর প্রতিপক্ষ আক্রমণ করেছে বলে জানা যায়।

ইউপি সদস্য আলমগীর মোল্লার বড় ভাই হাবিবুর রহমান মোল্লা বলেন, শনিবার সকালে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ভাঙ্গা বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা দেন আলমগীর মোল্লা। প্রতিপক্ষের নেতা বাবর আলী মাতুব্বরের বাড়ির সামনে এলে অতর্কিত ৩০–৪০ জন লোক বাবর আলীর নেতৃত্বে আলমগীরের গতিরোধ করেন। এরপর হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তাঁরা তাঁর দুই হাত ভেঙ্গে দেন। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চায়নিজ কুড়াল ও রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন।

সাবেক ইউপি সদস্য বাবর আলী মাতুব্বরের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মোকছেদুর রহমান বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মুনসুরাবাদ এলাকায় দুই পক্ষের বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে মারামারির ঘটনায় বর্তমান ইউপি সদস্য আহত হয়েছেন। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আলমগ র ম ল ল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি

খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। 

এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আরো পড়ুন:

কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল

জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত

লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, ‍“২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।” 

“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।

জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি