অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
Published: 9th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদে শনিবার সকালে সাতকানিয়ার কেরানীহাট বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন বাসের যাত্রী ও ছাত্র-জনতা।
অবরোধের কারণে মহাসড়কে প্রায় ১৫ কিলোমিটার যানজট তৈরি হয়। প্রশাসনের কাছে কয়েকটি দাবি তুলে ধরে বিক্ষুব্ধ জনতা। দাবি আদায়ের আশ্বাস পেয়ে বেলা ১১টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মো.
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম শহর থেকে কেরানীহাট পর্যন্ত ৮০ টাকা, লোহাগাড়ার আমিরাবাদ থেকে ১০০ টাকা, প্রতিটি বাসে ভাড়ার তালিকা টানানো, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারের অজুহাতে ভাড়া বেশি নেওয়া যাবে না, টিকিট ছাড়া সব গাড়িতে কেরানীহাট ও আমিরাবাদের যাত্রী নিতে হবে এবং সরকারি যে কোনো বন্ধের দিন ভাড়া ৮০ টাকা নির্ধারিত থাকতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্র ও শনিবার সরকারি বন্ধের দিন। যে কারণে আগের দিন বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শহর থেকে গ্রামের বাড়ি ফেরে লোকজন। আবার ছুটি কাটিয়ে শনিবার বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম শহরের দিকে ফেরেন। এ কারণে অন্যান্য দিনের তুলনায় বৃহস্পতি ও শনিবার যাত্রীর চাপ বেশি থাকে। এই সুযোগে বাস ভাড়া বাড়িয়ে দেন চালক ও হেলপাররা। সাধারণত চট্টগ্রাম শহর-কেরানীহাট বাজার পর্যন্ত বাস ভাড়া ৮০ টাকা, চট্টগ্রাম শহর-আমিরাবাদ পর্যন্ত ১০০ টাকা। অথচ সুযোগ বুঝে নেওয়া হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকা।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে সাতকানিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সাঈদ হোসেন মানিক জানান, গণপরিবহনের ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বছরের পর বছর চলে আসা বিষয়টি প্রশাসনকে জানালেও তারা কোনো সমাধানের উদ্যোগ নেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করতে হয়েছে।
অবরোধে নেতৃত্ব দেন কলেজ শিক্ষার্থী মো. ফরহাদ, মো. হাসান, মো. সাকিব, মো. শাহরিয়া, মো. সাঈদ ও মো. আরাফাত নামে এক পরিবহন শ্রমিক।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমার ভাষ্য, মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে দাবি আদায়ের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিছু সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
সাতকানিয়ার ঢেমশা ইউনিয়ন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি নূরুল আলম বলেন, ‘অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে যাত্রীরা অনেক আগে থেকে প্রতিবাদ করে আসছিলেন। বিষয়টি আমরা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন বসে সমাধানের চেষ্টা করেছিলাম। সমাধানের আগেই যাত্রী ও সাধারণ মানুষ মহাসড়ক অবরোধ করে।’
আরকান মহাসড়ক বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি আগামীতে মালিক, চালক ও যাত্রীদের নিয়ে বৈঠকে বসে সুরাহার চেষ্টা করা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক
ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।
বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।