অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং শিল্প বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। এ জন্য ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে বাস্তবায়নযোগ্য নীতি প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, বর্তমান কর ব্যবস্থা বিনিয়োগ পরিপন্থি। কর ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা দরকার।

শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ লেবার রাইটস জার্নালিস্টস ফোরামের (বিএলআরজেএফ) দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিকেএমইএ সভাপতি এসব কথা বলেন।

মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বেশির ভাগ ব্যবসায়ী চান তাদের শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পান। এটি উৎপাদন ও শিল্পের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ক্রেতারা শুধু ট্রেড ইউনিয়নের কথা বলে। তারা যদি বাংলাদেশি পণ্যের ন্যায্য ও নৈতিক মূল্য না দেয়, তাহলে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা অসম্ভব।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে নীতি বাস্তবায়নের জন্য স্টেকহোল্ডার এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বা নীতিমালা তৈরি করার আহ্বান জানান বিকেএমই সভাপতি। তিনি বলেন, গত ছয় মাসে সরকার ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেনি। সাবেক সরকার রপ্তানি নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছে। তথ্যের ভিত্তিতে এলডিসি পরিকল্পনা নিয়েছে। এলডিসি থেকে উত্তরণের এটা সঠিক সময় নয়।

মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, শিল্প ইউনিটে পর্যাপ্ত গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ না করে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো অযৌক্তিক।

সভায় ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের (টিডব্লিউইউ) সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে শ্রমিকদের জন্য ২৫ হাজার টাকা মজুরি নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। তিনি সাভারে অপরিকল্পিত ট্যানারি এস্টেটের সমালোচনা করেন, শিল্পের বিকাশ এবং শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে মিডিয়ার সহায়তাও চেয়েছেন।

ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন, ট্যানারি মালিকরা ঠিকই বছরের পর বছর ব্যবসা করে যাচ্ছেন। কিন্তু শ্রমিকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি ও সুবিধা সুবিধা বাড়াতে গড়িমসি করেন। সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করা ট্যানারি শ্রমিকরা বেতন-ভাতার অনিশ্চয়তায় থাকেন। সরকার ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করেছে, আমরা চাই দ্রুত এ মজুরি বাস্তবায়ন হোক।

বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের (বিএলএফ) ডেপুটি ডিরেক্টর অব প্রোগ্রামস মাহমুদুল হাসান খান বলেন, দেশের শিল্পের বিকাশের জন্য শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সুসম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হলে উৎপাদনও বাড়বে। এতে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।

উল্লেখ্য, বিএলআরজেএফ ২০১৫ সালে গঠিত হয়। শনিবার ঢাকার তামান্না ওয়ার্ল্ড ফ্যামিলি পার্কে ফোরামের বার্ষিক সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। বিএলআরজেএফের সভাপতি কাজী আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.

আলমগীর হোসেন বক্তব্য রাখেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর র ব যবস সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিজিএমইএ’র নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান

দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন (বিজিএমইএ) এর ২০২৫-২৭ মেয়াদের জন্য নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদ হাসান খান (বাবু)। এছাড়া সাতজন সহসভাপতি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

আজ শনিবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কার্যালয়ে নতুন সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিজিএমইএর নির্বাচন বোর্ডের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচনে আটটি অফিস বেয়ারার পদে আটজন প্রার্থী নমিনেশন জমা দেন। বোর্ড তা যাচাইবাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। কোনো পক্ষ আপিল না করায় নির্বাচন বোর্ড নমিনেশন দাখিল করা প্রার্থীদের সবাইকে অফিস বেয়ারার পদে নির্বাচিত ঘোষণা করে। 

নতুন কমিটিতে বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কেডিএস গ্রুপের এমডি সেলিম রহমান। জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অনন্ত গার্মেন্টসের এমডি ইনামুল হক খান। সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সফটেক্স সোয়েটারের এমডি মো. রেজওয়ান সেলিম, ফেব্রিকা নিট কম্পোজিটের এমডি মিজানুর রহমান (অর্থ), দেশ গার্মেন্টসের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভিদিয়া অমৃত খান, এমিটি ডিজাইনের এমডি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী এবং ফ্যাশন ওয়্যারের এমডি মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী।

নবনির্বাচিত নির্বাহী কমিটি আগামীকাল সোমবার দায়িত্ব গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ।

গত ৩১ মে অনুষ্ঠিত বিজিএমইএর নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ এবং চট্টগ্রামে ৩০৩ জন ভোটার। তার মধ্যে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে বিজিএমইএর ৩৫ পরিচালক নির্বাচিত হন। নির্বাচিত এসব পরিচালকদের মধ্য থেকেই নির্বাহী পর্ষদ গঠিত হয়। 

এবারের নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন মোহাম্মদ ইকবাল। বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন সৈয়দ আফজাল হোসেন ও আশরাফ আহমেদ।

বর্তমানে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন অন্তর্বর্তীকালীনভাবে বিজিএমইএর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিজিএমইএ’র নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান