Prothomalo:
2025-09-18@06:20:31 GMT

নিরিবিলি পরিবেশ, বিক্রি কম

Published: 9th, February 2025 GMT

ছুটির দুই দিনের পর গতকাল রোববার অমর একুশে বইমেলায় লোকসমাগম ছিল কম। পরিবেশ ছিল বেশ নিরিবিলি। যাঁরা প্রকৃতই বই কিনতে মেলায় যান, তাঁদের জন্য এ রকম পরিবেশ ভালো। স্বস্তির সঙ্গে ঘুরে ঘুরে পছন্দের বই খুঁজে নেওয়া যায়। কিন্তু বই কেনার মতো গ্রন্থানুরাগীর সংখ্যা খুব বেশি নয়। সে কারণে মেলায় লোকসমাগম কম হলে বিক্রিও কমে যায়।

গতকাল সন্ধ্যায় অন্য প্রকাশের প্যাভিলিয়নে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক সিরাজুল কবির চৌধুরী বললেন, তাঁদের স্টলে বিক্রি ভালো। কারণ, হুমায়ূন আহমদসহ জনপ্রিয় লেখকদের বই তাঁদের আছে। কিন্তু অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে লোকসমাগম কম হলে বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তিনি বললেন, এবার শুরুর দিন থেকেই মেলায় লোকজনের উপস্থিতি ভালো ছিল। তাঁরা এবারও বেশ কিছু তরুণ লেখকের সৃজনশীল বই এনেছেন। এসব তরুণ তাঁদের নিজস্ব পাঠকশ্রেণি গড়ে তুলতে পেরেছেন।

সন্ধ্যায় কবি ফরিদ কবির ও কথাশিল্পী নাসরীন জাহান ছিলেন অন্যপ্রকাশের প্যাভিলিয়নে। ফরিদ কবির জানালেন, এবার এখান থেকে আসবে তাঁর প্রথম উপন্যাস নীল মাকখির চোখ। নাসরিন জাহান জানালেন, বিদ্যাপ্রকাশ থেকে এসেছে তাঁর গল্পগ্রন্থ বখতিয়ারের বানরগুলি। আর বেঙ্গল বুকস থেকে আসবে উপন্যাস পালকের চিহ্নগুলি। তাঁরা বললেন মেলার নিরাপত্তা যেমন নিশ্চিত করা দরকার, তেমনি সব ধরনের মানুষ যেন নিরাপদে মেলায় আসতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ৯৭টি। উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে সুবর্ণ এনেছে বিশিষ্ট অভিনয়শিল্পী আবুল হায়াতের জীবনী রবি পথ, প্রথমা এনেছে শিবব্রত বর্মনের উপন্যাস শোধ, সাহিত্য কথা এনেছে ইতিহাসবিষয়ক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা, মূল লেখক নাঈম হক, অনুবাদ নাদিরা মজুমদার। অন্যপ্রকাশ এনেছে আশরাফ কায়সারের কবিতা গাছ নেই ছায়া পড়ে আছে, অনন্যা এনেছে আনজীর লিটনের নির্বাচিত কিশোর গল্প-উপন্যাস, ঐতিহ্য এনেছে নাগিব মাহফুজের কায়রো ট্রিলজি: প্যালেস ওয়াক, প্যালেস অব ডিজায়ার, সুগার স্ট্রিট, অনুবাদ আনোয়ারা হোসেইন মঞ্জু; কথাপ্রকাশ এনেছে সুন্দরবন ও বনজীবী মানুষের জীবনালেখ্য নিয়ে সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমামের বনের মানুষ মানুষের বন, পাঞ্জেরী এনেছে তপন বাগচীর উপন্যাস শেষ দৃশ্যের আগে, আগামী এনেছে মুস্তফা মজিদ সম্পাদিত আদিবাসী সংস্কৃতি।

প্রথমার স্টলে গতকাল যেসব বই বেশি চলেছে, তার মধ্যে ছিল বদরুল আলম খানের সোভিয়েত রাশিয়া ভাঙল কেন, বিরূপাক্ষ পালের বাংলাদেশের অর্থ খাত ও নীতি-অনীতির দ্বন্দ্ব, জহির রায়হানের অগ্রন্থিত গল্পগুচ্ছ: যখন যন্ত্রণা, অদ্বৈত মল্লবর্মণ অনূদিত আরভিং স্টোনের উপন্যাস জীবন-তৃষা।

গতকাল মেলার মূলমঞ্চে ছিল ‘মাকিদ হায়দারের কবিতা’ শীর্ষক আলোচনা। আতাহার খানের সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চঞ্চল আশরাফ; আলোচনা করেন আসিফ হায়দার ও শাওন্তী হায়দার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপন য স গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পকে ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বান রাজা চার্লসের

বিশ্বের সবচেয়ে জটিল কিছু সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। একই সঙ্গে তিনি ‘স্বৈরাচারের (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন) বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন’ দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান। খবর বিবিসির।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের প্রথম দিনে উইন্ডসর ক্যাসলে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন রাজা।

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প

জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, এ সম্পর্ককে ‘বিশেষ’ শব্দ দিয়ে যথাযথভাবে বোঝানো যায় না।

উইন্ডসর ক্যাসলে ১৬০ জন অতিথির জন্য আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ এই নৈশভোজে রাজার বক্তৃতায় দুই দেশের গভীর বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।

ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় এ সফর চলবে আজ বৃহস্পতিবারও। এদিন নানা অনুষ্ঠানে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের সঙ্গে অংশ নেবেন ব্রিটিশ রানি ক্যামিলা ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস।

রাজকীয় অ্যাপায়ন শেষে ট্রাম্পের আজকের কর্মসূচি রাজনৈতিক আলোচনায় রূপ নেবে। আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার সরকারি বাড়ি চেকার্সে বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনও হবে। 

বুধবারের (১৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় ভোজ ছিল আড়ম্বর ও রাজনীতির সমন্বয়ে সাজানো এক বিশেষ আয়োজন। ভোজে রাজা, রানি ও রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের উপস্থিতিতে ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হয় উইন্ডসরে।

উইন্ডসর ক্যাসলের মনোরম প্রাঙ্গণে পৌঁছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মেলানিয়া রাজকীয় ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামেন। সেখানে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো সেনাদলের অভিবাদন গ্রহণ করেন তারা। 

যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।

যুক্তরাষ্ট্রের অতিথিকে স্বাগত জানাতে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলসও উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রেসিডেন্ট ও মেলানিয়ার সঙ্গে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ এক বৈঠকও করেন।

ভোজসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রিন্স উইলিয়ামের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তিনি হবেন ‘অসাধারণ সফল নেতা’। প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিনকে তিনি আখ্যা দেন ‘উজ্জ্বল, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও সুন্দরী’ হিসেবে।

ট্রাম্পের ঐতিহাসিক এ দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর প্রমাণ করেছে রাজা ও তাঁর মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো। সফরে আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মুহূর্তও দেখা গেছে।

এরপর রাজপ্রাসাদে ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানান রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা। ট্রাম্প যখন রাজার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন, তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ছয়টি কামান থেকে একযোগে ৪১ বার তোপধ্বনি করা হয়। একই সময়ে টাওয়ার অব লন্ডন থেকে একই রকম তোপধ্বনি হয়।

ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানানোর এ আয়োজনে অংশ নেন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ১ হাজার ৩০০ সদস্য। ছিল শতাধিক ঘোড়া।

যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।

বিবিসি বলছে, রাজকীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা থাকবে।

যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফর হলো একধরনের নরম শক্তির কূটনীতি, যা গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য রাজকীয় আকর্ষণ ব্যবহার করে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কেউ নেই।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর্থিক সেবা, প্রযুক্তি এবং জ্বালানি খাতে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় গড়ে তুলে যুক্তরাজ্যকে আমেরিকান বিনিয়োগের প্রধান গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে চাইছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর শুরু হওয়ার সাথে সাথে, মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের একটি বড় প্রযুক্তি চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে মাইক্রোসফট থেকে ২২ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং পারমাণবিক শক্তিতে সহযোগিতা দেখা যাবে। 

ট্রাম্পের সফরের আগে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট যুক্তরাজ্যের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণায় ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প-স্টারমারের বৈঠক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক চুক্তির ঘোষণাও আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ