বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সর্বপ্রথম ব্যানার নিয়ে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম আমরা: চরমোনাই পীর
Published: 10th, February 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে পাশের রাষ্ট্রকে (ভারত) খুশি করেছে। তারা গোপনে সব চুক্তি করেছে। ট্রানজিটের নামে করিডর দেওয়া হয়েছে। তাদের সুবিধার জন্য সবকিছু করা হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেলে পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কলাপাড়া উপজেলা শাখা আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার করে অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা, তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামী আন্দোলনের কলাপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি মো.
সমাবেশে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্ররা ন্যায্য দাবি আদায়ে যখন আওয়াজ তুলেছিল, তখন কেউ সাহস করে পাশে দাঁড়ায়নি। আমার নেতৃত্বে একমাত্র রাজনৈতিক দল হিসেবে সর্বপ্রথম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ব্যানার নিয়ে ছাত্রদের পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলাম।’
চরমোনাই পীর বলেন, ‘বিগত সরকার পাঠ্যবইয়ে নাস্তিকের থিওরি অন্তর্ভুক্ত করেছে। আমরা সব সময় এসবের প্রতিবাদ করেছি। আমরা যখন শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মাঠে-ময়দানে কাজ করেছি, তখন আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ইসলামের সুফল কী তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার এখন সময় এসেছে।’ ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের একত্র হয়ে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’