‘দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রথম ধাপের কাজ ২০২৬ সালে শেষ হবে’
Published: 10th, February 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রথম ধাপের কাজ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনী থেকে নিযুক্ত প্রকল্প পরিচালক (পিডি) লে. কর্নেল ইফতেখার আলম।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভা কক্ষে আয়োজিত এক সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “আমাদের বলা হয়েছে প্রথম ধাপের কাজ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে। তবে আমরা এর আগেই শেষ করার চেষ্টা করবো। দ্বিতীয় ধাপের কাজের পরিকল্পনাও চলবে। তবে এর দৃশ্যমান কাজ ২০২৬ সালের পরই শুরু করা সম্ভব হবে।”
তিনি আরো বলেন, “প্রথম ধাপের কাজের মধ্যে রয়েছে, ক্যাম্পাসে বালি ভরাট করা, একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন তৈরি এবং একটা বেসক্যাম্প তৈরি করা, যাতে দ্বিতীয় ধাপের কাজ পরিচালনা করা যায়।”
বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হলে স্টিলের স্ট্রাকচার নির্মাণ বাস্তবতায় সম্ভব না জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক ইফতেখার আলম বলেন, “হল দুইটির স্থান এমন জায়গায়, এখানে স্টিল স্ট্রাকচারের কাজ চালানোর জন্য যে ক্রেন আনা দরকার, সেটা সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। কারণ সেখানে রাস্তাগুলো ১৪ থেকে ২২ ফুটের মধ্যে। এখানে স্টিলের স্ট্রাকচারের পরিবর্তে কংক্রিটের স্থাপনা নির্মাণ বেশি টেকসই হবে। তাছাড়া স্টিল স্ট্রাকচার সময়সাপেক্ষ। স্থানীয় কমিউনিটির কিছু আপত্তি এসেছে, যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।”
এ বিষয়ে ছাত্রদল জবি শাখার আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “আমরা স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পারি। আশা করি, তারা যৌক্তিক বিষয়গুলো বুঝতে পারবেন।”
শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম বলেন, “পূর্বে পুরান ঢাকার স্থানীয়দের সঙ্গে ঝামেলার কারণে এখন স্টাফরা সেখানে থাকবে। ভবিষ্যতে এখানে আমাদের বোনেদের রাখা হলে তাদের সঙ্গে স্থানীয়রা ঝামেলা করবে না, তার কী নিশ্চয়তা আছে। পুরান ঢাকায় মূল ক্যাম্পাস থাকবে। এখানেই ছাত্রদের জন্য হল প্রয়োজন। তাই বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হলে কংক্রিটের স্থায়ী কাঠামো হলে সেটাই ভালো হবে।”
জবি সংস্কার আন্দোলনের সদস্য নওশিন নাওয়ার জয়া বলেন, “বর্তমানে ছাত্রীদের জন্য একটি হল আছে, তাই এখন ছাত্রদের হল বেশি জরুরি।”
শিক্ষার্থীদের এসকল দাবির প্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা এডিসি পারভেজ বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি আইনগত কাঠামোর মধ্যে কিভাবে ফ্যাসিলিটেট করা যায়। আইনগতভাবে অস্থায়ী বা স্থায়ী কাঠামো করার সুযোগ নেই। স্ট্রাকচারের বিষয়টা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে। লোকাল কমিউনিটিকে রেসপেক্ট না করলে সাসটেইনেবল হয় না।”
শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া ২০০৫ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে বলে আমরা বিগত সময়ে নানাভাবে বঞ্চিত হয়েছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে ঢাকা থেকে সরিয়ে অজপাড়াগাঁয়ে পাঠানোর জন্য তারা নতুন ক্যাম্পাস দিয়েছে। কিন্তু আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই এই ক্যাম্পাস আমাদেরই থাকবে। কেরানীগঞ্জে হবে আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো.
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন, শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন, নাসির আহমেদ, প্রক্টর, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক, হল প্রাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম ধ প র ক জ ক জ ২০২৬ স ল ২০২৬ স ল র আম দ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।