বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখার পাশাপাশি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধেও (জানুয়ারি-জুন) সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত মুদ্রানীতির প্রতিক্রিয়ায় তারা এ কথা বলেছে।

গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনটি বলেছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কঠোর অবস্থান বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের পাশাপাশি সামগ্রিক অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বিনিয়োগের জন্য দেশের বেসরকারি খাত ব্যাংকগুলোর ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। ঋণের উচ্চ সুদহার পণ্য উৎপাদনের খরচ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। গত ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। জানুয়ারিতে কমে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে নামলেও তা প্রত্যাশার চেয়ে কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। এর আগে সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে জানুয়ারি-জুন সময়ের জন্য মুদ্রানীতি চূড়ান্ত করা হয়।

ডিসিসিআই বলছে, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে (জানুয়ারি-জুন) বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৯ দশমিক ৮ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত বেসরকারি খাতকে কিছুটা আশাহত করেছে। চলতি অর্থ বছরের প্রথমার্ধে প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, যা গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ২ শতাংশ হলেও তা বেড়ে ১৮ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে। তা মোকাবিলায় সরকারকে কৃচ্ছ্রসাধনের বিষয়ে আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন; না হলে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ আরও কমে যাওয়ার শঙ্কা থাকবে। বেসরকারি খাতের আস্থা ও ব্যবসায়িক কার্যকলাপ পুনরুদ্ধারে এই খাতে ঋণপ্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা দুই অঙ্কের ঘরে থাকা প্রয়োজন।

নিয়ন্ত্রণমূলক আর্থিক নীতিমালার কারণে অর্থনীতিতে স্থবিরতা সৃষ্টির ঝুঁকি থাকে। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় ঢাকা চেম্বার ঋণের প্রবাহ বাড়াতে খাতভিত্তিক তহবিল এবং উদ্যোক্তা সহায়তা কর্মসূচি চালু করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

ঢাকা চেম্বার বলেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রয়োগ করা সত্ত্বেও আমদানি-রপ্তানিকারকদের বিভিন্ন দরে, বিশেষত উচ্চ মূল্যে ডলার কিনতে হচ্ছে। এই অসংগতি অবশ্যই সমাধান করতে হবে।

তারল্যসংকট ও ক্রমবর্ধমান মন্দ ঋণ মোকাবিলায় আর্থিক খাতের প্রশাসনিক কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার। তারা বলেছে, দেশের আর্থিক খাতে শক্তিশালী প্রশাসনিক কাঠামোর অনুপস্থিতি ও আইনি সমাধানের দীর্ঘসূত্রতায় ব্যাংক খাত আরও দুর্বল হবে। এতে বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত হবে।

নমনীয় মুদ্রানীতি ও ভারসাম্যপূর্ণ আর্থিক নীতি গ্রহণ এবং তার সঙ্গে মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধির ওপর প্রভাব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার। তারা বলছে, এটা করা গেলে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবাহ বাড়বে। এ ছাড়া বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ আগামী দিনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা অর্জন করতে পারবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব সরক র র জন য আর থ ক দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি 

সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (গভর্নেন্স পারফরমেন্স মনিটরিং সিস্টেম- জিপিএমএস)’ বাস্তবায়নে অর্থ উপদেষ্টা  সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে তিন সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করেছে সরকার। 

সম্প্রতি এই কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

কমিটিতে বাকি দুই সদস্য হলেন, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারি কাজের জবাবদিহিতা, দক্ষতা ও জনকল্যাণ নিশ্চিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) পরিবর্তে নতুন সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (জিপিএমএস) চালু করা হয়েছে। এই জিপিএমএস বাস্তবায়নে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব কমিটিকে সহায়তা করবেন। তাছাড়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।

এ কমিটি জিপিএমএস বাস্তবায়নের বিষয়ে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসে সেকশন ১-এর আওতায় প্রস্তুত করা পরিকল্পনা অনুমোদন দেবে এবং অর্থবছর শুরুর আগে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করবে এ কমিটি।

এছাড়া, প্রতি অর্থবছর শেষে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসের সার্বিক মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেবে। জিপিএমএস বিষয়ে সরকারের দেওয়া অন্য যেকোনো দায়িত্ব পালন করবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টানা তিন মাস কমল দেশের পণ্য রপ্তানি
  • লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
  • বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নের মৃত্যু
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
  • বেসরকারি ঋণ তলানিতে, তবে ঋণপত্র খোলায় গতি
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টানা দুই মাস আড়াই বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে
  • তিন মাসে গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি টাকা
  • জুলাই–সেপ্টেম্বরে ঋণছাড়ে এগিয়ে বিশ্বব্যাংক ও রাশিয়া, কোনো অর্থ দেয়নি চীন
  • সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি