শহীদ বুদ্ধিজীবী শামসুজ্জোহার মৃত্যুর দিনকে জাতীয় শিক্ষক দিবস ঘোষণার দাবি
Published: 13th, February 2025 GMT
১৯৬৯ সালের গণ–অভ্যুত্থানে দেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহার মৃত্যুর দিনটি ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার ঢাকায় উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপিটি জমা দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার।
এর আগে সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে ১৯৬৯ সালের গণ–অভ্যুত্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ আন্দোলনে যেসব সাহসী ব্যক্তিত্ব তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক শামসুজ্জোহা প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী ছিলেন। ছাত্রদের জীবন রক্ষায় তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করে বাংলাদেশে শিক্ষক নেতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর এই আত্মত্যাগ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন মুক্তিসংগ্রামে বিপ্লবীদের অনুপ্রাণিত করেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদও ‘জোহা স্যার’ হতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সর্বশেষ চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে যখন শিক্ষার্থীরা গুলির সম্মুখীন হয়েছিল, তখন শিক্ষকেরা নির্লিপ্ত ছিলেন। এ সময় শহীদ শামসুজ্জোহা স্যারের অনুপস্থিতি আমরা গভীরভাবে অনুভব করেছি। শহীদ আবু সাঈদও লিখেছিলেন, “আমি জোহা স্যার হতে চাই।”’
আরও পড়ুনছাত্রদের বাঁচাতে জীবন দিয়েছিলেন যে শিক্ষক২৮ জুলাই ২০২৪শামসুজ্জোহার মৃত্যুর দিনটি জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জাতি হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হলো শহীদ জোহা স্যারের আত্মত্যাগকে যথাযথ সম্মান দেওয়া। তাঁর আদর্শ ও ত্যাগ নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য চিরন্তন প্রেরণা হয়ে থাকবে। অতএব শহীদ শামসুজ্জোহাকে যথাযোগ্য জাতীয় মর্যাদায় ভূষিত করা এবং তাঁর আত্মত্যাগকে স্মরণীয় রাখতে প্রতিবছর ১৮ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানাচ্ছি।’ সেই সঙ্গে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ জোহার স্মরণে বিশেষ আলোচনা সভা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠান আয়োজন করার দাবি জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে।
আরও পড়ুন‘স্যার! এই মুহূর্তে আপনাকে ভীষণ দরকার, স্যার!’১৭ জুলাই ২০২৪১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহা পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলির নিশানা হন। পরে বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে তাঁকে হত্যা করা হয়।এ ব্যাপারে সালাহউদ্দিন আম্মার প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান, যেকোনো আন্দোলনে শহীদ শামসুজ্জোহা আমাদের উদ্দীপনা ও সাহস হিসেবে কাজ করেছেন। চব্বিশের আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদও জোহা স্যার হতে চেয়েছিলেন। আবু সাঈদকে নিয়ে দিবস হতে পারলে জোহা স্যার কেন নয়। এটি আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। আজ (গতকাল) শিক্ষা উপদেষ্টা এবং সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। তাঁরা আমাদেরকে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’
১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহা পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলির নিশানা হন। পরে বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে তাঁকে হত্যা করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি শামসুজ্জোহার মৃত্যুর পর থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিনটিকে ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ১৮ ফ ব র য় র স ম রকল প ত উপদ ষ ট র প রথম আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
খামেনিকে আঘাতে ট্রাম্পের ভেটো: ইসরায়েলে প্রতিক্রিয়া কেমন?
ইরানের সর্বেোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার জন্য ইসরায়েল যে গোপন ছক এঁটেছে, তাতে সায় দেননি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই খবর প্রথম প্রকাশ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস। খবরটি বিশ্বের মানুষের মনযোগ আকর্ষণ করার পর এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে আলজাজিরা কথা বলেছে লেখক ও ইসরায়েলের সাবেক কূটনীতিক আলোন পিনকাসের সঙ্গে।
ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে আলজাজিরার সঙ্গে কথা বলেছেন আলোন পিনকাস। তিনি বলেন, “এই প্রতিবেদনগুলো, যেগুলো নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন সূত্রের ভিত্তিতে তৈরি; এগুলো বহু প্রশ্ন তোলে। প্রথম প্রশ্ন হলো, ইসরায়েল কেন এমন কিছু করতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করবে? আর যুক্তরাষ্ট্র কেনই-বা তা ফাঁস করবে?”
“এটা কি ইরানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ভয় দেখানোর জন্য করা হয়েছে, যাতে তারা বুঝতে পারে কোনো কিছুই বাইরে নয়, সবকিছুই টেবিলে আছে? নাকি এটা শুধুই দেখানোর জন্য যে যুক্তরাষ্ট্র নিজে সংযম দেখাচ্ছে, বা ইসরায়েলকে সংযত থাকতে বলছে? আমার মনে হয় না এটির পেছনে এর চেয়ে বেশি কিছু আছে,” যোগ করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
হামাস থেকে হিজবুল্লাহ: পরাজিত মিত্ররা কি খামেনির পতনের পূর্বাভাস?
তেহরানে আটকা ইন্টার মিলানের স্ট্রাইকার তারেমি, ক্লাব বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ‘মিস’
তবে পিনকাস বলেন, “এটি ইরানকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, ইসরায়েল এমন একটি হত্যাকাণ্ড বিবেচনা করছে।”
“ইসরায়েলে এই খবর যেভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, তা হলো ইসরায়েল এ ধরনের কিছু চিন্তা করছে, এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরামর্শ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ‘এখন না’। এতে ইরান একটি বার্তা পাচ্ছে যে, এই ধরনের পদক্ষেপ বাস্তবেই বিবেচনার মধ্যে আছে,” বলেন পিনকাস।
ঢাকা/রাসেল