অনলাইন ডেটিংয়ে নারী নাকি পুরুষ এগিয়ে
Published: 16th, February 2025 GMT
সময় এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবন যাপনে নানা পরিবর্তন আর নতুন নতুন অনুসঙ্গ যুক্ত হয়। পুরোন আর নতুন নিয়মের মিশেলে চলে সামাজিক জীবন। যেমন— প্রেম নিবেদনের জন্য এখনও প্রেমিক প্রেমিকার দিকে ফুল এগিয়ে দেন, কোনো কফি শপের নিয়ন আলোতে আলোচনা জমিয়ে তোলেন। আবার এর বিপরীত চিত্রও রয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। দূর-দূরান্তের অচেনা, অজানা মানুষটিই হয়ে উঠছে একান্ত আপন। দূরকে কাছে এনে দিচ্ছে প্রযুক্তি। এই সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর ডেটিং অ্যাপেও জমে উঠছে প্রেম। কিন্তু এই অ্যাপ ভিত্তিক প্রেমগুলোতে প্রতারণার ঘটনাও অনেক ঘটছে।
ডেটিং অ্যাপে ‘সঙ্গী’ সেজে, ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অনেকে। কখনও নারী আবার কখনও পুরুষ পরছেন এই ফাঁদে। কিন্তু ডেটিং অ্যাপ কারা বেশি ব্যবহার করে, জানেন? ছেলে-মেয়ে উভয়ই ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করেন।কিন্তু মেয়েদের তুলনায় ছেলেরাই বেশি ডেটিং অ্যাপের ইউজার। ইন্টারন্যাশানাল জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড হেলথ সাইকোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণার তথ্য, মধ্য বয়সের পুরুষেরাই সবচেয়ে ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করেন। নারীদের তুলনায় মাঝ বয়সি পুরুষেরাই ডেটিং অ্যাপের অ্যাক্টিভ ইউজার।
২৫ থেকে ৫০ বছর বয়সের ২৯৮ জন মানুষের মধ্যে এই সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। তারা ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। সেখানেই জানা যায়, নারীদের তুলনায় পুরুষেরা ডেটিং অ্যাপ বেশি ব্যবহার করেন এবং দীর্ঘ সময় ধরে করেন। দেখা গেছে ফ্রেন্ডস উইথ বেনেফিটস, নো স্ট্রিং অ্যাটাচড থেকে শুরু করে ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড— এগুলো খুঁজে থাকেন ইউজাররা। এখানেও পুরুষদের সংখ্যাই বেশি। কেউ দ্রুত কমিটমেন্টে যেতে চান না এবং কোনো সম্পর্কে জড়াতে চান না।
আরো পড়ুন:
আজ ‘লাভ রিসেট ডে’
যেভাবে বুঝবেন জীবনযুদ্ধে অন্যদের থেকে এগিয়ে আছেন
ডেটিং অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যক্তির আলাদা-আলাদা উদ্দেশ্য থাকে। কেউ সিরিয়াস রিলেশনশিপের খোঁজে করেন, আবার কারও কাছে ডেটিং অ্যাপ নিছক সময় কাটানোর মাধ্যম। এতকিছুর পরেও অনেকে নতুন বন্ধু পাতান ডেটিং অ্যাপে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অ য প ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত
বাংলাদেশের মেকআপ আর্ট জগতে নীরবে নতুনত্ব যোগ করে যাচ্ছেন সোনালী মিতুয়া। তার শৈল্পিক ইলিউশন এবং বডি পেইন্টিংগুলো আন্তর্জাতিক মানের, যা দেখে চোখ ফেরানো দায়। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে মেকআপের ওপর উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এই শিল্পী, যার ক্যানভাসে শৈশবের প্রথম গন্ধ ছিল তেল রং আর থিনারের তীব্রতা। মেকআপ ব্যবহার করে তিনি যে ক্যানভাস তৈরি করেন-তা এক কথায় অনন্য, অসাধারণ।
সোনালী মিতুয়া কখনও তার মুখে ফুটে ওঠে ফাটল ধরা পৃথিবী, যেখান থেকে গজিয়ে ওঠে সবুজ লতা। কখনও দেখা যায় তার মুখটাই এক অর্ধেক যন্ত্র, অর্ধেক প্রকৃতি, যেন মানুষ আর মেশিনের মাঝের এক অদ্ভুত, কাব্যময় দ্বন্দ্ব।আর কখনও সেই মুখটাই অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, শুধু দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর কালো গহ্বর — যেন মানুষের শূন্য আত্মা। এগুলো কোনো সিনেমার দৃশ্য না।এগুলো এক তরুণী মেকআপ আর্টিস্টের সৃষ্ট জীবন্ত শিল্পকর্ম।
আরো পড়ুন:
একা বাস করতে পারে যে পাখি
কেউ কটূক্তি করলে কী করবেন?
সোনালী মিতুয়ার মেকআপে একটা গল্প, একটা দর্শন, একটা গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ মেকআপকে শুধু প্রসাধনের জগতে দেখে, সে সেখানে মেকআপকে তুলেছে এক উচ্চমাত্রার শিল্প হিসেবে। তার হাতে রঙ মানে—চামড়ার ওপরে নয়, বরং আত্মার ভাষা প্রকাশের এক মাধ্যম।
তার কাজে দেখা যায় প্রস্থেটিক মেকআপের প্রভাব— যেখানে মুখ বদলে যায়, গড়ে ওঠে নতুন রূপ, নতুন চরিত্র। এমন কৌশল একদিন তাকে সিনেমার পর্দায় প্রস্থেটিক আর্টিস্ট হিসেবে বড় জায়গায় নিয়ে যাবে—
এ কথা বলার জন্য বিশেষজ্ঞও হতে হয় না।
এই মেয়েটির সবচেয়ে বড় শক্তি তার কল্পনাশক্তি। সে মুখের ভেতরেই ফুটিয়ে তোলে গল্প—একদিকে প্রকৃতি, ফুল, প্রজাপতি; অন্যদিকে প্রযুক্তি, ধ্বংস আর শূন্যতা। দেখলে মনে হয়, এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে তার শিল্পজগৎ।
বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এই মেয়েটি এক অনুপ্রেরণা। সে প্রমাণ করছে—শিল্পের ভাষা যদি শক্ত হয়, তাহলে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছানো যায়। যেখানে মেকআপকে এখনো অনেকেই কেবল সাজের কাজ মনে করেন, এই মেয়েটি সেখানে দেখিয়েছে — মেকআপও হতে পারে দর্শন, প্রতিবাদ আর সৃষ্টির ক্যানভাস।
তিনি জানেন, প্রস্থেটিক আর্টে (বিশেষত কৃত্রিম অঙ্গ, ক্ষত বা ফ্যান্টাসি চরিত্র তৈরি) করা যায় দক্ষতার সাথে। বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমায় যেখানে প্রস্থেটিকের ব্যবহার খুবই সীমিত, সেখানে সোনালী মিতুয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী আছেন, তার হাতেই তৈরি হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসের চরিত্রদের নিখুঁত রূপ, অথবা আমাদের ফ্যান্টাসি সিনেমার ভিনগ্রহের প্রাণী।
সোনালী মিতুয়ার কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায়, তিনি মেকআপকে স্রেফ সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যম হিসেবে দেখেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী গল্প বলার হাতিয়ার মনে করেন।
একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ প্রকৃতির মাঝে ফাটল ধরা পাথরের মতো এক রূপ ধারণ করেছেন। সবুজ, হলুদ ও লালের মিশ্রণে চোখের অংশটি গভীর এবং রহস্যময়, আর ফাটলের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা লতা-পাতা জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি তার পরিবেশ-সচেতনতা এবং ফ্যান্টাসি আর্টের দক্ষতা প্রমাণ করে।
সাদাকালো স্কেচের মতো দেখতে এই মেকআপটি অত্যন্ত কঠিন এবং চোখে পড়ার মতো। মুখের প্রতিটি অংশে পেন্সিল বা চারকোল দিয়ে আঁকা হ্যাচিংয়ের মতো স্ট্রোকগুলো ত্রিমাত্রিক চেহারাটিকে দ্বিমাত্রিক কমিক-বুক বা নয়ার চলচ্চিত্রের চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে।
চোখ ও মুখের চারপাশে মাকড়সার জাল এবং ফুলা, রক্তবর্ণ চোখের পাপড়ি ভীতি ও কষ্টের এক শক্তিশালী অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে হ্যালোইন বা হরর থিমের জন্য পারফেক্ট।
গভীর অন্ধকারে তোলা এই ছবিটি ‘অন্ধকার গহ্বর’ বা ‘কৃষ্ঞগহ্বর’ থিমের একটি চমকপ্রদ ইলিউশন মেকআপ। নিখুঁত কনট্যুরিং এবং রঙের ব্যবহারে মুখের এক অংশে যেন সত্যিই একটি ফাঁকা, গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা/লিপি