চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোয় যেতে যা করতে হবে বায়ার্ন–মিলানদের
Published: 18th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোয় যাওয়ার লক্ষ্যে এখন লড়াই করছে ১৬টি দল। প্রথম লেগের পর এই লড়াইয়ে কেউ কেউ এগিয়ে গেছে। তবে এগিয়ে থাকাটাই শেষ কথা নয়। দ্বিতীয় লেগে বদলে যেতে পারে পাশার দান। আজ রাতে শেষ ষোলো সামনে রেখে ৮টি দল ৪টি ম্যাচে মুখোমুখি হবে একে অপরের।
যে আট দল আজ শেষ ষোলোয় যাওয়ার লড়াইয়ে নামছে, তাদের মাঝে বায়ার্ন মিউনিখ ও এসি মিলানের মতো সাবেক চ্যাম্পিয়নরাও আছে। তবে সাবেক চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা কোনোভাবেই পরবর্তী পর্বে যাওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। মাঠে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেই জায়গা করে নিতে হবে সেরা ১৬ দলের মধ্যে। এখন এমন পরিস্থিতিতে আজ রাতে মাঠে নামতে যাওয়া দলগুলোর কার কি করতে হবে, একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
এসি মিলান: ফেইনুর্ড
(ফেইনুর্ড ১-০ গোলে এগিয়ে)
এসি মিলান ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা দল। যদিও ইউরোপ সেরা হওয়া মিলানের সেই স্মৃতিতে জমেছে ধুলার আস্তরণ। ২০০৭ সালের পর আর কখনো ফাইনালেও ওঠেনি তারা। এবারও শঙ্কা আছে আগেভাগে বিদায় নেওয়ার। শেষ ষোলোয় যাওয়ার লড়াইয়ে প্লে-অফের প্রথম লেগে ফেইনুর্ডের কাছে মিলান হেরেছে ১-০ গোলে। সেই হারে অবশ্য মিলানের সব শেষ হয়ে যায়নি।
আরও পড়ুনবায়ার্নের আনন্দের রাতে এসি মিলানের হারের বেদনা১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫সেদিন প্রতিপক্ষের মাঠ হারলেও, আজ মিলান খেলবে নিজেদের মাঠে। ঘরের মাঠে নিজেদের পরিচিত পরিবেশে মিলানের প্রয়োজন ২ গোলের ব্যবধানে একটি জয়। তবে ১-০ গোলে জিতলেও টাইব্রেকারে সুযোগ থাকবে তাদের। বিপরীতে ফেইনুর্ডের কাজটা অবশ্য বেশ সহজ। পরবর্তী পর্বে যেতে মিলানকে জিততে না দেওয়াই তাদের জন্য যথেষ্ট। কোনোভাবে ম্যাচ সমতা শেষ করতে পারলেই মিলানকে পেছনে ফেলে পরের পর্বে যাবে তারাই।
মিলানের বিপক্ষে ফেইনুর্ডকে জেতান ইগর পাইশিয়াও.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ইন র ড
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।