বন্দী রাখা ভালুক, শজারু, কুমির, অজগর এল গাজীপুর সাফারি পার্কে
Published: 18th, February 2025 GMT
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি এলাকায় মিনি চিড়িয়াখানা বানিয়ে রাখা হয়েছিল ভালুক, শজারুসহ বিভিন্ন প্রাণী। সেটি বন্ধ করে প্রাণীগুলো উদ্ধারের পর পাঠানো হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুরের গাজীপুর সাফারি পার্কে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পার্ক কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে প্রাণীগুলোকে গাজীপুর সাফারি পার্কে বিশেষ ব্যবস্থায় নিয়ে আসেন বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কর্মীরা। এগুলোর মধ্যে আছে আটটি শজারু, দুটি অজগর, একটি মিঠা পানির কুমির ও একটি ভালুক।
সাফারি পার্ক ও বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট সূত্র জানায়, প্রাণীগুলোকে পার্কের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। গত রোববার শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি এলাকায় ‘মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম’ নামে শিশু পার্ক ও পিকনিক স্পটের মধ্যে অবৈধভাবে স্থাপিত মিনি চিড়িয়াখানা থেকে এসব প্রাণী উদ্ধার করা হয়। বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক ছানাউল্যা পাটওয়ারীর নির্দেশনায় অভিযানকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন ওই ইউনিটের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস।
উদ্ধার প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েছে ১টি ভালুক, ১টি মিঠা পানির কুমির, ৩টি বার্মিজ অজগর, ৯টি শজারু, ২টি মেছোবিড়াল, ২টি বনবিড়াল, ২টি কালিম পাখি, ১০টি ঘুঘু, ২টি টিয়া ও ২টি বালিহাঁস। বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী বন্য প্রাণী দখলে রাখা, শিকার করা ও ক্রয়-বিক্রয় আইনপরিপন্থী। উদ্ধার হওয়া প্রাণীগুলোর মধ্যে কিছু প্রাণীকে সাফারি পার্কে পাঠানো হয়। বাকিগুলো প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে।
বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম নামে শিশু পার্ক ও পিকনিক স্পট কর্তৃপক্ষ আইন না জেনে এসব প্রাণীকে আটকে রেখেছিল বলে স্বীকার করেছে। উদ্ধার প্রাণীগুলোকে গাজীপুর সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে।
সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কোয়ারেন্টিনে প্রাণীগুলোকে নির্দিষ্ট সময় ধরে রাখা হবে। পরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাণীগুলো ভালো আছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অপর ধ দমন ইউন ট বন য প র ণ ইউন ট র
এছাড়াও পড়ুন:
পাঁচ ঘণ্টায় চিন্ময় দাসের জামিন নিয়ে ৩ আদেশ, ফের শুনানি রোববার
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় প্রাক্তন ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আগামী রোববার এ বিষয়ে ফের শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় চেম্বার আদালতের বিচারপতি মো. রেজাউল হক এ আদেশ দেন। এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চিন্ময় দাসকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। এদিন দুপুর ২টার দিকে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। পরে ওই জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
চেম্বার আদালতের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভূঞা। সমকালকে তিনি বলেন, এটি স্পর্শকাতর মামলা। একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছিল। চেম্বার আদালত আমাদের আবেদনটি মঞ্জুর করেছিলেন। তবে পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগের আদেশটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আগামী রোববার এ বিষয়ে ফের শুনানি হবে।
চেম্বার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভূঞা ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক। অন্যদিকে চিন্ময় দাসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য।
গত ২৫ অক্টোবর চিন্ময় দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। এর কয়েক দিন পর গত ৩১ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এ মামলায় আসামি করা হয় আরও ১৮ জনকে। ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় দাসকে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীর সংঘর্ষ বাধে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এর পর থেকেই কারাগারে আছেন চিন্ময়। ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন চিন্ময়। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় চিন্ময় দাসকে কেন জামিন দেওয়া হবে না– তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গতকাল ওই রুলের শুনানি শেষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট।