শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি এলাকায় মিনি চিড়িয়াখানা বানিয়ে রাখা হয়েছিল ভালুক, শজারুসহ বিভিন্ন প্রাণী। সেটি বন্ধ করে প্রাণীগুলো উদ্ধারের পর পাঠানো হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুরের গাজীপুর সাফারি পার্কে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পার্ক কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল সোমবার বিকেলে প্রাণীগুলোকে গাজীপুর সাফারি পার্কে বিশেষ ব্যবস্থায় নিয়ে আসেন বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কর্মীরা। এগুলোর মধ্যে আছে আটটি শজারু, দুটি অজগর, একটি মিঠা পানির কুমির ও একটি ভালুক।

সাফারি পার্ক ও বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট সূত্র জানায়, প্রাণীগুলোকে পার্কের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। গত রোববার শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি এলাকায় ‘মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম’ নামে শিশু পার্ক ও পিকনিক স্পটের মধ্যে অবৈধভাবে স্থাপিত মিনি চিড়িয়াখানা থেকে এসব প্রাণী উদ্ধার করা হয়। বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক ছানাউল্যা পাটওয়ারীর নির্দেশনায় অভিযানকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন ওই ইউনিটের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস।

উদ্ধার প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েছে ১টি ভালুক, ১টি মিঠা পানির কুমির, ৩টি বার্মিজ অজগর, ৯টি শজারু, ২টি মেছোবিড়াল, ২টি বনবিড়াল, ২টি কালিম পাখি, ১০টি ঘুঘু, ২টি টিয়া ও ২টি বালিহাঁস। বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী বন্য প্রাণী দখলে রাখা, শিকার করা ও ক্রয়-বিক্রয় আইনপরিপন্থী। উদ্ধার হওয়া প্রাণীগুলোর মধ্যে কিছু প্রাণীকে সাফারি পার্কে পাঠানো হয়। বাকিগুলো প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে।

বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম নামে শিশু পার্ক ও পিকনিক স্পট কর্তৃপক্ষ আইন না জেনে এসব প্রাণীকে আটকে রেখেছিল বলে স্বীকার করেছে। উদ্ধার প্রাণীগুলোকে গাজীপুর সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কোয়ারেন্টিনে প্রাণীগুলোকে নির্দিষ্ট সময় ধরে রাখা হবে। পরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাণীগুলো ভালো আছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপর ধ দমন ইউন ট বন য প র ণ ইউন ট র

এছাড়াও পড়ুন:

তেঁতুলিয়ায় ধরা পড়া ৬ ফুট লম্বা অজগর সিংড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আবারও ধরা পড়েছে একটি অজগর। প্রায় ছয় ফুট লম্বা ও পাঁচ কেজি ওজনের সাপটি চা–বাগানের একটি গাছের শাখা থেকে উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন। পরে বন বিভাগ সাপটি দিনাজপুরের সিংড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার দুপুরে তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের ময়নাগুড়ি এলাকার একটি চা–বাগানের বড় গাছের ডালে পেঁচিয়ে ছিল অজগরটি। স্থানীয় কায়েকজন সাপটি দেখতে পেয়ে আশপাশের লোকজনকে খবর দেন। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পরও সাপটি তাঁরা নামাতে পারেননি। বড় আকৃতির সাপ দেখে কৌতূহলী হলেও কেউ ধরতে সাহস পাননি। খবর পেয়ে স্থানীয় পাথরশ্রমিক ফুলবর রহমান গিয়ে অজগরটি ধরেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সাপটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে খরগোশ রাখার খাঁচায় রাখেন তিনি।

ফুলবরের স্ত্রী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্বামী পাখি আর প্রাণী খুবই ভালোবাসেন। সাপ ধরার সাহসও বেশি। তিনি সাপটি বাড়িতে এনে খোরগোশ রাখার একটি খাঁচায় রেখেছিলেন। রাতে খাবার (মুরগি ও ব্যাঙ) খেতে দিলেও অজগরটি কিছু খায়নি। আমাদের আত্মীয়স্বজনেরা সাপটি দেখতে চেয়েছিলেন, এ জন্য কিছুক্ষণ দেরিতে বন বিভাগের কাছে সাপটি দিতে চেয়েছিলেন।’

পঞ্চগড় বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘রোববার রাত ও সোমবার সারা দিন অজগরটি ফুলবরের বাড়িতেই ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় আমরা ওই বাড়িতে যাই। প্রথম দিকে তাঁরা সাপটি দিতে চাচ্ছিলেন না। তাঁদের নাকি কোন আত্মীয় সাপটি দেখতে আসবেন। বেশ কিছুক্ষণ থাকার পর রাতে আমরা সেখান থেকে ফিরে আসি। এর কিছুক্ষণ পর ফুলবর নিজেই অজগরটি পঞ্চগড় বন বিভাগের কার্যালয়ে পৌঁছে দেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর সেটিকে সিংড়া জাতীয় উদ্যানে পাঠানো হয় এবং দুপুরে অজগরটি সেখানে অবমুক্ত করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, এর আগে ৮ সেপ্টেম্বর তেঁতুলিয়ার তিরনইহাট ইউনিয়নের পিঠাখাওয়া এলাকা থেকে সাত ফুট লম্বা আরেকটি অজগর উদ্ধার করে সিংড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়েছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তেঁতুলিয়ায় ধরা পড়া ৬ ফুট লম্বা অজগর সিংড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত