শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ল দুই মাস
Published: 18th, February 2025 GMT
জুলাই-আগস্ট গণহত্যার অভিযোগে করা এক মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে আরও দুই মাস সময় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেক্ষেত্রে আগামী ২০ এপ্রিল পরবর্তী সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
তদন্ত সংস্থার করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মতুর্জা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগ সরকারের ৪৫ জন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, সাবেক আমলার বিষয়েও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়িয়ে ২০ এপ্রিল করা হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তিন দফা সময় বাড়ানো হলো।
এছাড়া এই মামলার অপর আসামি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ঢাকা-৭ আসনের সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিমকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ট্রাইব্যুনালের কাছে সময় বাড়ানোর আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। দুই মাস সময় চাইলেও তার আগেই প্রতিবেদন দাখিল করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। এ সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, সময় লাগলে সময় নেন। তবে অপূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবেন না। পরে দুই মাস সময় মঞ্জুর করে ২০ এপ্রিল তারিখ ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালে শুনানির সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ১৬ জন আসামিকে হাজির করা হয়। তারা হলেন- সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, ড.
চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্য
দুটি মামলার শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আগামী মাস তথা মার্চের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হতে পারে।
তিনি বলেন, আমাদের তদন্ত প্রতিবেদনের মধ্যে জাতিসংঘের রিপোর্ট অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশা করছি। জাতিসংঘের প্রতিবেদনের উপাদানগুলো চেয়েছি। সেগুলো সংগ্রহের একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। যতটুকু পাওয়া যাবে, সেটাকে তদন্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত করব। এটা মামলা প্রমাণের জন্য বড় এভিডেন্স হিসেবে কাজ করবে।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, প্রতিবেদনের বর্তমান অবস্থা যে কোন পর্যায়ে তদন্তটা আছে, সেটা ট্রাইব্যুনালকে বলেছি। আশা করি আগামী মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা সম্ভব হতে পারে। তবে এটা কোনো চূড়ান্ত কোনো সময় সীমা নয় বলে দাবি করেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ খ ল কর সময় ব ড় মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
আরিফুলসহ সিলেট বিএনপির নেতাদের লন্ডন সফর, নানা আলোচনা
গত রোববার হঠাৎ লন্ডন সফরে যান সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ নিয়ে সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা। শুধু আরিফুল নন, ইতোমধ্যে সিলেটের একাধিক নেতা প্রকাশ্যে বা গোপনে লন্ডন সফর করেন। শোনা যাচ্ছে, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত করতেই তারা লন্ডন যাচ্ছেন।
সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়ে লন্ডন যান। খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে যান উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী। তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সিলেট-৬ আসনের (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। দেশে এসেও নিবার্চনী এলাকায় সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করে চলেছেন।
সম্প্রতি লন্ডন থেকে দেশে ফিরে সিলেট-৪ আসনের বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জমান সেলিম। তিনি তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন বলে জানা যায়।
একই আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা আব্দুল হাকিম সম্প্রতি লন্ডন সফর করেন। তিনি দেশে ফিরে বিভিন্ন সভা সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। একই আসনে আরও একাধিক নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে লন্ডন যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
সর্বশেষ গত রোববার লন্ডনে যান আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি লন্ডনে যাওয়ার পর সিলেট বিএনপির রাজনীতি বইছে নতুন হওয়া। শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, দুটি মিশন নিয়ে গেছেন আরিফুল হক। এর একটি হচ্ছে- সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া, অপরটি হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। লন্ডনে গিয়ে তিনি বলেন, 'আমি আপনাদের দেখতে এসেছি। ৪-৫ দিন লন্ডনে থাকবো।'
আরিফুল হক সিটি নির্বাচনে নাকি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে এখন চলছে আলোচনা। তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, সার্বিক বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরামর্শ নিতে তিনি লন্ডনে গেছেন। তার পরামর্শ পাওয়ার পর সিলেটের নির্বাচনী মাঠে নামবেন তিনি।
এদিকে, সোমবার রাতে লন্ডনে আরিফুল হক তার ঘনিষ্ঠ শতাধিক নেতাকর্মীকে নিয়ে একটি রেস্টুরেন্টে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি বর্তমানে মাঠে থাকা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। কোনো রাজনৈতিক দলের নাম না বললেও নতুন রাজনৈতিক সংগঠনের কথা সরাসরি বলেন। তার বক্তব্য ঘিরে সিলেটে জামায়াত ঘরানার রাজনৈতিক নেতারা স্যোশাল মিডিয়ায় সরব হয়ে উঠেছেন। কেউ কেউ প্রশ্ন করছেন, অন্য পার্টি বলতে সাবেক মেয়র আরিফ কি জামায়াতকে বোঝাতে চেয়েছেন?
ভার্চ্যুয়াল মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়া ভিডিওতে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দু-একটা তুচ্ছ ঘটনাকে কিছু রাজনৈতিক অন্য পার্টি, অন্য প্ল্যাটফরমে যা আপনারা ভালোভাবেই বুঝতেছেন, যারা এখনই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি, বিভিন্ন ইনস্টিটিউশন, বিভিন্ন হাই-অফিসিয়াল পোস্টে তাদের নিজেদের লোক সেটআপ করে ফেলছে। সেখানে আমাদের মানুষগুলো নেই। আমাদের দু-চার জন অ্যাটর্নি জেনারেল, আর দু-চারটা পোস্ট দেখলেই মনে করবেন না সব আমাদের। তারা ভালো করে জানে ভোটে গেলে বিএনপি’র সঙ্গে কোনোভাবেই রিটার্ন করতে পারবে না। কাজেই তারা ওই ম্যাকানিজম শুরু করেছে সেখানে নির্বাচনকে একটু দূরে ঠেলে দিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনে তাদের লোকগুলোকে সেটআপ করা।'