বিসিএসে নন–ক্যাডার নিয়োগপদ্ধতি সহজ করছে পিএসসি
Published: 19th, February 2025 GMT
বিসিএসে পাস করার পর যাঁদের ক্যাডার দেওয়া যায় না, এমন অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে দেওয়া হয় নন–ক্যাডার নিয়োগ। এই নিয়োগপদ্ধতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এ–সংক্রান্ত প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিয়েছে পিএসসি। পিএসসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নন–ক্যাডার নিয়োগপদ্ধতি পরীক্ষার্থীবান্ধব করা হয়েছে।
আরও পড়ুনতিনটি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পিএসসি১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আগে বিসিএসের বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে নন–ক্যাডার পদ উল্লেখ থাকত। নতুন পদ্ধতিতে এখন বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আর নন–ক্যাডারের পদ উল্লেখ থাকবে না। নতুন এ পদ্ধতিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের বেশি পদে নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। কারণ, বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে নিয়োগ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় লাগে। এই সময়ের মধ্যে অনেক মন্ত্রণালয় থেকে নন–ক্যাডারে নিয়োগে চাহিদা পিএসসিতে চলে আসে। কিন্তু আগের পদ্ধতিতে নন–ক্যাডার পদের উল্লেখ থাকায় নিয়োগের সময় ও পদ আর বাড়ে না। এখনকার এ পদ্ধতিতে বিজ্ঞপ্তির পর নিয়োগের আগে পদসংখ্যা নির্ধারিত হবে। তাই চাকরিপ্রত্যাশীরা বেশি পদে নিয়োগ পাবেন।
আরও পড়ুনমাধ্যমিকের সংশোধিত ছুটির তালিকা, এসএসসির প্রাক-নির্বাচনি ও নির্বাচনি পরীক্ষার নতুন তারিখ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫জানতে চাইলে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নন-ক্যাডার বিধি ২০২৩ বাতিল করা হবে। এতে প্রয়োজনীয় সংশোধন এনে একে প্রার্থীবান্ধব করা হবে। আমরা চাই, যত বেশি সম্ভব নন-ক্যাডারে এনে উপযুক্ত প্রার্থীদের চাকরির পথ প্রশস্ত করতে। পিএসসির সব ক্ষেত্রেই সংস্কার আনা হবে। গত চার মাসে পিএসসি যত সংস্কার এনেছে, তা স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে আগে কখনো হয়নি।’
আরও পড়ুনবিসিএসসহ সরকারি চাকরিতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য বিধিমালা চূড়ান্ত পিএসসির১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নন ক য ড র ব স এস এসস র প এসস
এছাড়াও পড়ুন:
লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান
১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।
কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!
দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।
কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।
আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।
অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।
এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।
একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।
বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান