জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনকলের জেরে ২০১৯ সালে অভিশংসিত হয়েছিলেন ট্রাম্প
Published: 20th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সম্পর্ক কখনোই মসৃণ ছিল না। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনকলে কথা বলেছিলেন তিনি। ওই ফোনকলের জেরে শেষ পর্যন্ত প্রথম অভিশংসনের মুখে পড়েছিলেন ট্রাম্প।
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। অভিযোগ করা হয়েছিল, ২৫ জুলাইয়ের ফোনকলে বাইডেনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক তথ্য প্রকাশ্যে আনতে জেলেনস্কির ওপর চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের আইন ভঙ্গ করেছিলেন তিনি।
বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভাষ্য ছিল, নির্বাচনে জয়লাভের জন্য বিদেশি কারও কাছে সাহায্য চাওয়াটা অবৈধ। তবে ট্রাম্প তখন দাবি করেছিলেন—তিনি কোনো ভুল কাজ করেননি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হন তিনি। তবে সিনেটের ভোটাভুটিতে শেষ পর্যন্ত রক্ষা পান।
ট্রাম্পের ওই ফোনকলের বিষয়টি ২০১৯ সালের আগস্টে প্রথম সামনে আনেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের পরিচয় সামনে আনেননি তিনি। পরে বিতর্কের মুখে ওই ফোনকলের কিছু অংশ প্রকাশ করে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন। তাতে দেখা যায়, বাইডেন ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে জেলেনস্কিকে বলেছিলেন ট্রাম্প।
জেলেনস্কিকে ওই ফোনকলের আগে ইউক্রেনকে দিতে যাওয়া সামরিক সহায়তা বাতিল করেছিলেন ট্রাম্প। পরে সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর বিনিময়ে ওই সহায়তা আবার দেওয়ার শর্ত দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে হোয়াইট হাউস এমন তথ্য নাকচ করে দিয়েছিল।
ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকেরা অভিযোগ তুলেছিলেন, বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনকে নিয়োগ দিয়েছিল ইউক্রেনের একটি জ্বালানি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করছিলেন দেশটির একজন শীর্ষ কৌঁসুলি। ২০১৫ সালে তাঁকে চাকরি থেকে সরাতে ইউক্রেন সরকারের ওপর চাপ দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা ওই অভিযোগ সে সময় অস্বীকার করেছিলেন বাইডেন। নিজের ছেলেকে সুবিধা দেওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে বাইডেন কোনো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন—এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির কোনো প্রমাণ মেলেনি। আর নিজের অভিশংসন নিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০১৯ স ল কর ছ ল ন ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ৮৯তম একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে সার্বিকভাবে আসন সংখ্যা কমানোসহ অর্গানোগ্রামে আরো ১৮টি নতুন বিভাগের অন্তর্ভুক্তি, চারটি ইনস্টিটিউট চালু এবং ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর সুপারিশ করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ল্যাবভিত্তিক বিভাগগুলোতে আসন সংখ্যা ৪০টি এবং ল্যাববিহীন বিভাগগুলোতে ৫০টি আসন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন ১৮টি বিভাগ অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, জৈব রসায়ন ও আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগ এবং জৈবপ্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। কলা ও মানবিক অনুষদভুক্ত গুলো হলো—ইসলামিক স্টাডিজ ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ এবং দর্শন বিভাগ। ব্যবসায় অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ব্যবসায়িক তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগ এবং লজিস্টিক ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ। প্রকৌশল অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ, রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগ, পুরকৌশল বিভাগ এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগ। আইন অনুষদভুক্ত বিভাগটি হলো— অপরাধবিদ্যা বিভাগ।
পাশাপাশি চারটি ইনস্টিটিউট গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো হলো—আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্র। এগুলোর গঠন কাঠামোও সুপারিশ করা হয়েছে।
এর মধ্যে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, নিয়মিত অধ্যাপক দুইজন, তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার বা ম্যানেজার একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং একজন ক্লিনার।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্রের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, একজন অতিথি অধ্যাপক, অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার অথবা ম্যানেজার হিসেবে একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং ক্লিনার একজন।
১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে ন্যূনতম ২৬ জন করে শিক্ষক রাখার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, “আমরা মিটিংয়ে এগুলো সুপারিশ করেছি। অর্গানোগ্রাম অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় ডিপার্টমেন্টের জন্য ছাড়পত্র চায়, তারপর কমিশন (ইউজিসি) যদি অনুমোদন দেয়, তখন সেটা অর্গানাগ্রামে যুক্ত হয়। অর্গানোগ্রামে থাকলেই যে বিভাগ হয়ে যাবে, এমন না। একটা অনুমোদন দিয়ে রাখে। এই অনুমোদনের আলোকে আবার যখন দরখাস্ত দেওয়া হয়, তখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি আরো বলেন, “ইউজিসি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে আসন সংখ্যা কমাতে, যাতে কোয়ালিটি এডুকেশনের নিশ্চিত হয়। তারা ল্যাববেজড বিভাগের জন্য ৪০টি আসন এবং ল্যাববিহীন বিভাগের জন্য ৫০টি আসন বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেছেন, “অনেকগুলো সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। তবে, এখনই না দেখে বলা যাচ্ছে না। রেজ্যুলেশন পাস হলে বিস্তারিত বলতে পারব।”
ঢাকা/এমদাদুল/রফিক