ক্ষমতার বিন্যাসটা যদি পরিবর্তন করা না যায়, তাহলে আইনকানুন পরিবর্তন করে কিছুই হবে না। যাদের হাতে ক্ষমতা, অবৈধ টাকা, সিন্ডিকেট আছে, তাদের একটা বার্তা দিতে হবে যে তাদের দিন শেষ হয়ে গেছে। তারপর নির্বাচন করে নতুন নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। দেশে ভালো রাজনীতিক দরকার, একই সঙ্গে নতুন সামাজিক নেটওয়ার্কও দরকার।

ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের অধ্যাপক মুশতাক হুসাইন খান ‘জুলাই রেভল্যুশন অ্যান্ড বাংলাদেশ ২.

০: দ্য লিগ্যাসি অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ফ্রন্ট’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। রাজধানীর বাড্ডার আফতাবনগর এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিরাজ কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় নাগরিক কমিটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় টিম এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সঠিক ইতিহাস লেখার আহ্বান জানান অনুষ্ঠানের অতিথি বক্তা মুশতাক হুসাইন খান। এই অভ্যুত্থানের বয়ান একাত্তরের মতো যাতে কেউ কবজা করতে না পারে, সেদিকে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এটা হতে হবে সবার ইতিহাস। পাশাপাশি তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময় নষ্ট করে ফেলা সমাজকে পুনর্গঠন করতে হবে। জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আসন্ন নতুন রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্রের চর্চার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, যারা নতুন বাংলাদেশ চায়, তাদের নিয়ে নতুন রকমের নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। এই নেটওয়ার্কে শিক্ষক, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা থাকবেন। কারণ, এখন যে নেটওয়ার্কগুলো আছে, সেগুলো খারাপ নেটওয়ার্ক বা সিন্ডিকেট। সমাজ যখন সোচ্চার হবে, তখনই রাজনীতি ঠিক হবে।

অধ্যাপক মুশতাক হুসাইন খান বলেন, আমাদের ভালো রাজনীতিক দরকার, একই সঙ্গে নতুন সামাজিক নেটওয়ার্কও দরকার। নেটওয়ার্ক থাকলে কর্মস্থল, হাসপাতাল বা শিক্ষাস্থানে অযৌক্তিক কিছু হলে আমরা আওয়াজ তুলতে পারব, তাতে রাজনীতিবিদরাও লাইনে আসবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে লড়ার জন্য টাকা দরকার। খালি নির্বাচনটা দিয়ে দিলে এই নির্বাচনে টাকাটা আসবে সেই সিন্ডিকেট ও চোরদের কাছ থেকে। ওই টাকা নিয়ে নির্বাচনে যে-ই জিতবে, তারা আর সেই সিন্ডিকেট ও চোরদের বিরুদ্ধে যেতে পারবে না। এটা রোধ করতে নির্বাচনের আগে সবাইকে নিয়ে কিছু কাজ করতে হবে।

মুশতাক হুসাইন বলেন, সংস্কারের দুটি দিক আছে। একটা হচ্ছে আইনকানুন পরিবর্তন করা, আরেকটি হচ্ছে ক্ষমতার বিন্যাস পরিবর্তন করা। আইনকানুন পরিবর্তনে দীর্ঘ সময় লাগে; কিন্তু ক্ষমতার বিন্যাসটা যদি পরিবর্তন করা না যায়, তাহলে আইনকানুন পরিবর্তন করে কিচ্ছু হবে না। তিনি আরও বলেন, ‘যাদের হাতে ক্ষমতা আছে, অবৈধ টাকা আছে, সিন্ডিকেট যাদের হাতে, তাদের একটা বার্তা দিতে হবে যে আপনাদের দিন শেষ হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন করে আমাদের নতুন নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাধারণ নাগরিক বা গণমাধ্যম—সবাইকেই বিকল্প নেটওয়ার্ক করতে হবে। যাতে আমরা আমাদের ভালো নেটওয়ার্ক দিয়ে রাজনীতিকদের ওপর চাপ দিতে পারি; আর যারা খারাপ নেটওয়ার্ক, তাদের চাপ ও প্রতিযোগিতার মধ্যে রাখতে পারি। এটা ৫০ বছরের কাজ; কিন্তু এই মুহূর্তের কাজ হচ্ছে, আমাদের কয়েকটা বড় বড় সাপের মাথা কাটতে হবে।’

অনুষ্ঠানের আরেক অতিথি বক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের মালিক হতে গিয়ে কেউ কেউ বিভেদের রাজনীতি সামনে আনছে।  ফ্যাসিবাদের পতনের পর স্থানীয় পর্যায়ে একটা রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এর সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ গায়েবি আওয়াজ তুলে একধরনের বিশৃঙ্খলা ও বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। ফলে বিভক্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এই বিভক্তি নিশ্চিতভাবেই ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার পথ উন্মুক্ত করে দিতে পারে।

‘জুলাই রেভল্যুশন অ্যান্ড বাংলাদেশ ২.০: দ্য লিগ্যাসি অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ফ্রন্ট’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান। ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ষমত র ব ন য স ন টওয় র ক র জন ত ক অন ষ ঠ ন আম দ র দরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আঠারো শতকের সুফি কবি ও সংগীতজ্ঞ সৈয়দ খাজা মীর দর্দ

আবদালি মারাঠিদের উৎপাত ও অত্যাচারে অন্য কবিরা যখন একে একে দিল্লি ছেড়ে লক্ষ্ণৌ চলে গিয়েছিলেন, তখনো প্রিয় শহর দিল্লি ছাড়েননি সৈয়দ খাজা মীর দর্দ (১৭২০-১৭৮৪ খ্রি.), বরং আমৃত্যু সেখানেই থেকে গিয়েছিলেন। লক্ষ্ণৌয়ে অবস্থানকারী কবিদের কাব্যবৈশিষ্ট্যের সঙ্গে তাঁর কবিতার যে পার্থক্য ছিল, শুধু সে কারণেই তিনি সেই জায়গায় যাননি তা নয়, তাঁর আত্মমর্যাদাবোধ ছিল প্রখর, কারও তারিফ করে কখনো কসিদা লিখেছেন বলে শোনা যায়নি, সর্বোপরি তাঁর জীবনদর্শনও ছিল সমকালিক অন্য কবিদের থেকে আলাদা। মধ্যযুগের যে সময়টায় মীর দর্দের জন্ম, সেই সময় উর্দু সাহিত্যে ‘মীর-সওদার যুগ’ বলে পরিচিত—এই দুই কবি পারস্য কবি খাজা শামসুদ্দিন হাফিজ সিরাজি ও শেখ মোসলেহ উদ্দিন সাদির পথ অনুসরণ করে ফারসি কবিতার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ধারাকে উর্দু কবিতার ধারায় যুক্ত করেন এবং সফল হন। মির্জা রফী সওদার চেয়েও সাত বছরের অগ্রজ মীর দর্দ এই সবকিছুই নিবিড়ভাবে লক্ষ করেছেন, পারস্য ঐতিহ্যের সমৃদ্ধ ভান্ডার থেকে অনেক কিছু গ্রহণও করেছেন, তবু আমাদের ধারণা, পারিবারিক বংশধারার প্রভাবেই তাঁর জীবনদর্শন ও কাব্যচিন্তা শুরু থেকেই ভিন্ন ছিল।

মধ্যযুগের যে সময়টায় মীর দর্দের জন্ম, সেই সময় উর্দু সাহিত্যে ‘মীর-সওদার যুগ’ বলে পরিচিত—এই দুই কবি পারস্য কবি খাজা শামসুদ্দিন হাফিজ সিরাজি ও শেখ মোসলেহ উদ্দিন সাদির পথ অনুসরণ করে ফারসি কবিতার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ধারাকে উর্দু কবিতার ধারায় যুক্ত করেন এবং সফল হন।

মাহমুদ আলী খান জামী তাঁর ‘দর্দ কে সো শের’ (প্রকাশকাল: ১৯৫৫ খ্রি., দিল্লি) গ্রন্থে লিখেছেন, খাজা মীর দর্দের দাদা বাদশাহ আলমগীরের শাসনামলে বুখারা থেকে এ দেশে এসেছিলেন, আর বাবা খাজা মাহমুদ নাসির আন্দালিব ছিলেন ‘শায়েরে উর্দু’ এবং ব্যক্তিগত জীবনে একজন সুফি। ভিন্ন মতে, তাঁর বাবার নাম (মাহমুদ নাসির নয়) মুহাম্মদ, আর তিনি উর্দু ভাষার কবি ছিলেন না, ছিলেন ফারসি ভাষার কবি। এঁরা ছিলেন নকশবন্দী ঘরানার পথিকৃৎ খাজা বাহাউদ্দিনের বংশধর ও অনুসারী। সুফি পরম্পরার মধ্যে বেড়ে উঠেছিলেন বলেই মাত্র বাইশ বছর—ভিন্ন মতে, সাতাশ বছর বয়সে জাগতিক মোহ ত্যাগ করে সুফি শুদ্ধাচারী হয়ে ওঠেন দর্দ এবং সুফি তত্ত্বসংক্রান্ত একাধিক বই লেখেন। ফলে তিনি যখন শের ও গজল লেখেন, তখন সেগুলোতে স্বভাবগত কারণেই সুফি মরমি কবিতার সহজগভীর ভাবের ছায়া পড়েছে। নিচে দর্দ কে সো শের বই থেকে—অন্যত্র গজলরূপে গণ্য এবং গীত—প্রথম ৩টি শের পড়লে এ কথার সত্যতা মিলতে পারে :

তোহমতে চন্দ অপনে জিম্মে ধর চলে
জিস লিয়ে আয়ে থে হম সো কর চলে
জিন্দেগি হ্যয় য়া কোই তোফান হ্যয়
হম তো ইস জিনে কে হাথোঁ মে মর চলে
শমা কে মানিন্দ হম ইস বজম মে
চশম নম আয়ে থে দামন তর চলে

অর্থাৎ :

কত অপবাদ বয়ে নিয়ে আমি চলছি
অথচ যে কারণে এসেছি তা–ই করে গেছি
এ কোনো জীবন, নাকি তুফান
তার হাতেই তো আমি মারা যাব
এই সভার প্রদীপ ছিলাম আমি
এখন আমার চোখের জলে আঁচল ভিজে যায়

[অনুবাদ: লেখক]

অল্প বয়স থেকে যিনি এমন ভাবনায় তাড়িত, তাঁর গজলে এই প্রভাব পড়াটাই স্বাভাবিক। সুফি কবি ও সাধক হিসেবে স্বীকৃত হলেও গজলকার হিসেবে যেরকম গণ্য হননি খাজা মঈন উদ্দিন চিশতি, ঠিক একই কারণেই গজলকার হিসেবে কেউ কেউ তাঁর নাম সমকালের মীর তকী মীর ও মির্জা রফী সওদার কাতারে রাখতে কুণ্ঠিত। অবশ্য এ ক্ষেত্রে খোদ মীর তকী মীরের একটি মন্তব্য আছে, যা অনেকেই উদ্ধৃত করেন, তা হলো: তিনি নাকি আড়াইজন কবিকে সবিশেষ গুরুত্ব দিতেন, যার মধ্যে একজন তিনি নিজে, অন্যজন মির্জা রফী সওদা আর অর্ধজন হলেন খাজা মীর দর্দ।

তাঁর এমন সহজগভীর ভাষার জন্য বোধ হয় বেশ কিছু অনুসারী তৈরি হয়েছিল, যাঁরা নিয়মিত তাঁর মাহফিলে আসতেন। শুধু ভাবশিষ্যরাই নন, সংগীতশাস্ত্রে পারদর্শী খাজা মীর দর্দ মর্যাদার ক্ষেত্রে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিলেন যে তাঁর পাক্ষিক আসরে অনুরাগী হিসেবে কখনো কখনো বাদশাহ শাহ আলমও আসতেন।

শের ও গজলের ক্ষেত্রে মীর তকি মীর শেষমেশ যে উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন সেই জায়গা থেকে বিচার করে তাঁর এই কথাটিকে সদর্থে ধরে নিলে কবিতায় খাজা মীর দর্দের অবদানকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন না করে উপায় নেই। আসলে পারস্য কবিতার ঐতিহ্য ধারণ করে উর্দু গজলে যখন পরবর্তীকালের জনপ্রিয় বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নারীর সঙ্গে আলাপের আবহ তৈরি হচ্ছে, খাজা দর্দ তখন একই উৎস থেকে গ্রহণ করেছিলেন সুফি ঐতিহ্য। সমালোচকদের মতে, তাঁর শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ ‘দিওয়ান-এ উর্দু’, কিন্তু তাঁর ‘শমা-এ মহফিল’, ‘আহ-এ দর্দ’, ‘দর্দ-এ দিল’ প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থের প্রাঞ্জল ভাষা ও সুফিহৃদয়ের ভাব সেই সময় ও পরবর্তীকালের কবিদেরকেও প্রভাবিত করেছে। তাঁর একটি অনবদ্য শের হলো: ‘তমান্না তেরি হ্যাঁয় অগর হ্যাঁয় তমান্না/ তেরি আরজু হ্যায় অগর আরজু হ্যায়’ অর্থাৎ, আকাঙ্ক্ষা যদি থাকে, তা তোমারই আকাঙ্ক্ষা/ আশা তোমার জন্য, আদৌ আশা বলে যদি কিছু থাকে’। প্রেমের এমন একনিষ্ঠ নিবেদন খাজা দর্দের শেরেই পাওয়া সম্ভব। নিচে পড়ে নিতে পারি তাঁর আরও একটি জনপ্রিয় শের:

হাজারোঁ খওয়াহিশেঁ অ্যায়সি কে হর খওয়াহিশ পে দম নিকলে
বহুত নিকলে ম্যারে আরমান ল্যাকিন পির ভি কম নিকলে

অর্থাৎ :

এমন হাজার বাসনা আমার, যার প্রতিটি বাসনার জন্য প্রাণ ওষ্ঠাগত
কিছু আকাঙ্ক্ষা পূরণ হলো বটে; কিন্তু তা খুবই সামান্য

তাঁর এমন সহজগভীর ভাষার জন্য বোধ হয় বেশ কিছু অনুসারী তৈরি হয়েছিল, যাঁরা নিয়মিত তাঁর মাহফিলে আসতেন। শুধু ভাবশিষ্যরাই নন, সংগীতশাস্ত্রে পারদর্শী খাজা মীর দর্দ মর্যাদার ক্ষেত্রে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিলেন যে তাঁর পাক্ষিক আসরে অনুরাগী হিসেবে কখনো কখনো বাদশাহ শাহ আলমও আসতেন।

আরও পড়ুনএকাদশ শতকের সুফি কবি হাকিম সানায়ি গজনভি২৮ আগস্ট ২০২৫

মীর দর্দের এমন উচ্চাসনে পৌঁছার অন্য একটি কারণ হলো, তাঁর জন্মের বহু আগে থেকেই গান শোনা ও তার চর্চা বিষয়ে যে তর্ক-বিতর্ক চলে আসছিল, সে বিষয়ে তাঁর সবিস্তার আলোচনা এবং গানবিষয়ক গান লেখার উদাহরণ। আমাদের অজানা নয়, গান বিষয়ে কওয়ালির প্রতিষ্ঠাতা আমির খসরুর একাধিক বাণী আছে, যেমন: ‘গান হলো আত্মার খোরাক’, ‘দরবেশের কাছে গান হলো ঐশ্বরিক জ্যোতির সমতুল’ ইত্যাদি, আর দর্দ লিখেছেন: ‘অগর ঘিনা নফস কো বড়্কায়ে তো হারাম, অগর দিল কো ইলাহ কি তরফ নরম করে তো হালাল’ অর্থাৎ গান যদি মনকে প্রবৃত্তিতাড়িত হতে উসকে দেয় তাহলে হারাম, আর স্রষ্টামুখী করলে হালাল’। এ বিষয়ে দর্দের যে শের রয়েছে, সেটি আরও সুন্দর :

সামা’ আহলে দিল কো হ্যা সোদমন্দ দর্দ
কে ইস সে নরম হোতা হ্যা পাত্থর কা দিল ভি

অর্থাৎ :

হৃদয়বান মানুষের জন্য গান উপকারী, হে দর্দ
কারণ পাথরের মতো হৃদয়ও তাতে গলে যায়।

উল্লেখ্য যে, গান বিষয়ে আলোচনা করবার সময় এ অঞ্চলের গবেষক ও সুফি-বাউল-ফকিরেরা ইমাম গাজ্জালি, মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি ও আমির খসরুর বইয়ের তথ্যের উল্লেখ করেন, কিন্তু প্রকাশ ও প্রচারের অভাবে কোথাও সৈয়দ খাজা মীর দর্দের কথা পাওয়া যায় না। জাভেদ হুসেন দর্দের কয়েকটি গজল অনুবাদ করতে গিয়ে তার ভূমিকায় লিখেছেন: ‘দর্দ ছিলেন একজন বড় সংগীতজ্ঞ। সুফি সাধনায় সংগীতের ভূমিকা নিয়ে হুরমতে ঘিনা নামে পুস্তিকা লিখেছেন। উর্দু গজলের গীতিময়তা আজ দেখা যায় তাতে দর্দের ভূমিকা ব্যাপক ও গভীর।’ এই পুস্তিকাটি দুর্লভ, ভবিষ্যতে এটি অনূদিত হলে শায়ের ও গজলকার মীর দর্দের পাশাপাশি সংগীতচিন্তক হিসেবে তাঁর পরিচয়টাও আমরা জানতে পারব।

অন্য আলো–য় লিখতে পারেন আপনিও। গল্প, কবিতা, প্রবন্ধসহ আপনার সৃজনশীল, মননশীল যেকোনো ধরনের লেখা পাঠিয়ে দিন। পাঠাতে পারেন প্রকাশিত লেখার ব্যাপারে মন্তব্য ও প্রতিক্রিয়া।
ই–মেইল: [email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ