অযত্নে ভাষাশহীদদের স্মৃতিচিহ্ন
Published: 21st, February 2025 GMT
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন এ জাতির এক চিরজাগরূক চেতনা। বাংলা ভাষার জন্য যাঁরা সংগ্রাম করেছিলেন, ১৯৫২ সালে জীবন দিয়েছিলেন, সেই আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের রক্তে লেখা বাঙালির আত্মপরিচয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একুশের লড়াই দেশের সীমানা অতিক্রম করেছে। আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
ভাষাশহীদ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন পাঁচজন—আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, রফিক উদ্দিন আহমদ, আবদুস সালাম ও শফিউর রহমান। ২০০০ সালে তাঁদের রাষ্ট্রীয় একুশে পদকে ভূষিত করা হয়েছে। যদিও প্রকৃত শহীদের সংখ্যা আরও অনেক।
ভাষাসংগ্রামীদের স্মৃতি ধরে রাখতে সারা বছর তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। তাঁদের স্মৃতি ধরে রাখতে নিজ নিজ এলাকায় যেসব স্থাপনা হয়েছিল, সেসবও পড়ে আছে অবহেলায়।
মানিকগঞ্জে শহীদ রফিক গ্রন্থাগার বেহাল
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার পারিল নওয়াধা গ্রামের সন্তান ভাষাশহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ। গ্রামটির নাম এখন রফিকনগর। রফিকের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধা জানাতে ১৭ বছর আগে এ গ্রামে তাঁর নামানুসারে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। জাদুঘরে আছে ভাষাশহীদের ব্যবহৃত লুঙ্গি, পাঞ্জাবিসহ তাঁর ব্যবহৃত বেশ কিছু স্মৃতিচিহ্ন। অবহেলায় পড়ে আছে এ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর।
গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বছরজুড়ে সুনসান নীরবতা, ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় গণমাধ্যমকর্মী ও প্রশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের আনাগোনা। ঘটা করে একুশে ফেব্রুয়ারির নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
২০০৮ সালে ভাষাশহীদের বাড়ির অদূরে লে.
একতলা ভবনের গ্রন্থাগার ও জাদুঘরে ভেতরে ঢুকতেই বড় একটি হলরুম। সেখানে দেয়ালে টাঙানো রফিকসহ ভাষাশহীদদের ছবি। দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা আলমারিতে সাজানো বই। গ্রন্থাগারিক ফরহাদ হোসেন বলেন, গ্রন্থাগারে ১৭টি আলমারিতে ১৫ হাজারের বেশি বই রয়েছে। বছরজুড়ে গ্রন্থাগারটি খোলা রাখা হলেও পাঠকের আনাগোনা তেমন থাকে না। প্রায় চার বছর ধরে দৈনিক পত্রিকা না থাকায় সাধারণ পাঠকও নেই।
ভাষাশহীদ আবদুস সালাম স্মৃতি গ্রন্থাগার ও জাদুঘরের ভেঙে পড়া আলমারি। সম্প্রতি ফেনীর দাগনভূঞায়উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ দ ঘর
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব