Samakal:
2025-06-16@06:28:48 GMT

যে ঋণ শোধ করা যায় না

Published: 23rd, February 2025 GMT

যে ঋণ শোধ করা যায় না

দেশের খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবী ও সাহিত্যিক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর একটি প্রবন্ধ আছে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে। প্রবন্ধের শিরোনামটি ছিল, ‘যে ঋণ পরিশোধ না করাই ভালো।’ এ প্রবন্ধের প্রথমাংশে তিনি লিখেন, ‘ঋণ তো আছেই, থাকবেই। ক্ষুদ্র ঋণ যাদের তারা সেটা শোধ করেন, বড় ঋণীরা করতে চান না, কিন্তু সমষ্টিগতভাবে আমাদের অনেক ঋণ আছে। যেগুলো শোধ করা কখনোই সম্ভব নয় এবং যেগুলো আমাদের নত না করে ধনী করে। এমনি একটি ঋণ আমাদের কাজী নজরুল ইসলামের কাছে। এ ঋণ সাংস্কৃতিক।’


এমনই সাংস্কৃতিক ঋণের আবহে  দেশবাসীকে ঋণের প্রবাহে দোলাচ্ছে বাংলা ভাষাবাদীরা। এ ঋণও শোধ করা যাবে না। তা বরং বাড়লেই মঙ্গল। 
‘বাংলা ভাষা’ বিশ্বের ভাষাভাষীর মধ্যে চতুর্থ থেকে এখন পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে। ‘ম্যান্ডারিন’ হলো প্রথম, দ্বিতীয় অবস্থানে ইংরেজি, তৃতীয় অবস্থানে ‘স্প্যানিস’, চতুর্থ অবস্থানে আছে ‘হিন্দি’। ফলে সংখ্যা ও গুরুত্বের দিক দিয়ে বেশ তাৎপর্যময় ‘বাংলা’। 


 রাজনীতিতে কর্তৃত্ববাদ জায়গা পেলে তা কৃষ্টি-সংস্কৃতিতেও প্রভাব ফেলে। প্রাচীন বাংলায় বেগ পেতে হয়েছে সুনিপুণ নির্মাণকারীদের, যারা বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিয়েছেন। তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বৈষ্ণব সহজিয়ারা মুখোমুখি হয়েছেন গৌড়ীয় গোস্বামীদের। বৈষ্ণব সহজিয়ারা এদের রোষানলে পড়েছেন বাংলায় লেখার কারণে। কৃষ্ণদাস কবিরাজ ‘শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত’ বাংলায় লিখেছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর বইটি যমুনা নদীতে ফেলে দেন শ্রীজীব গোস্বামী। তারপরও সহজিয়া বৈষ্ণবরা বাংলায় সাহিত্য রচনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেননি। বাংলা ভাষায় লেখাকে এগিয়ে নিয়েছেন এ দেশের সুফিসাধক কবিরা। কিন্তু এখানেও বাদ সাধে গোঁড়া মুসলমান। তারা বাংলাকে হিন্দুয়ানি ভাষা হিসেবে দেখেছেন। গোড়া হিন্দু ও মুসলমানদের তোপের মুখে সবসময় বাংলা ভাষাকে থাকতে হয়েছে।

 

 এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত কবি কায়কোবাদের বক্তব্য তুলে ধরা যাক। কায়কোবাদ বলেন, ‘বঙ্গভাষা যে বঙ্গীয় মুসলমানদের মাতৃভাষা, এ-সমন্ধে বোধ হয় এখন আর দ্বিমত নাই। অন্তত অধিকাংশ বঙ্গীয় মুসলমানই এ কথা একবাক্যে স্বীকার করেন। অল্পসংখ্যক যাহারা করেন না, তাঁহারা এখনও উর্দুর স্বপ্নে বিভোর হইয়া আছেন। .

.. প্রকৃতির নিয়মকে উলটাইয়া দিয়া উর্দু কোন রূপেই বাংলার মুসলিম জনসাধারণের ভাষা হইতে পারে না।’
বাংলা ভাষার কোনো জাতিভেদ নেই। সব হিন্দু-মুসলমান মানুষের ভাষা বাংলা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষা’ কেবল আমাদের মাতৃভাষা নয়, আমাদের জন্মভূমির ভাষা। ইহা হিন্দুরও ভাষা, মুসলমানেরও ভাষা। ইহার উপর হিন্দু-মুসলমানের তুল্য অধিকার।’


উপরোক্ত বক্তব্যসমূহ তিনি ১৯৩২ সালের ২৫-২৬ ডিসেম্বর ‘বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সম্মিলন’-এ সভাপতির ভাষণে তুলে ধরেন। সম্মেলনের এ বক্তব্যটি আরও স্পষ্ট করে দেয়, ‘ ... যাহারা মুসলমানের জন্য এক প্রকারের বাংলা ভাষা এবং বাঙ্গালি হিন্দুর জন্য আর এক প্রকারের বাংলা ভাষার প্রচলন দেখিতে চান, আমি তাঁহাদের কেহ নহি। আমি বাংলার হিন্দু এবং বাংলার মুসলমানের জন্য এক মিলিত ভাষা চাই।’
অথচ ১৯৪৭ সালে পূর্ব বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির পর বাংলাকে রীতিমতো উপেক্ষা করা হয়েছে। অন্তত আরবির আদলেও যাতে বাংলা লেখা হয় সে  ষড়যন্ত্র হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় কাজে উর্দুকে চরম প্রাধান্য দিয়ে বাংলাকে উপেক্ষা করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলার তরুণ-যুবারা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে, বাংলা ভাষাকে প্রাণের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে।


এক ধরনের বকধার্মিকরা পহেলা বৈশাখকে ‘হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি’ আখ্যা দিয়ে বাঙালি  জাতিকে বিভক্ত করতে চেয়েছে। এখনও ওদেরই উত্তরসূরিরা পহেলা বৈশাখ উদযাপনকে অপসংস্কৃতি বলে আখ্যা দেন। কোনো ধর্মীয় উৎসব সর্বজনীন হতে পারে না। কিন্তু বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, ভাষা দিবস  এবং পহেলা বৈশাখের মতো উৎসব সর্বজনীন। সব পর্যায়ের মানুষ নির্বিঘ্নে ও অবলীলায় এ উৎসবে মজে যান এবং নিজস্বতা খুঁজে পান। 
পহেলা বৈশাখ, নবান্ন উৎসব বাঙালি জাতির লোকায়ত উৎসব। যেটাকে আমরা লোকজ বলে থাকি। প্রান্তিক মানুষের প্রাণ এখানে আছে বলেই এ উৎসব ‘লোকজ’ বলে ধরে নেওয়া হয়।  ধান কাটার মৌসুমে কৃষকের মুখে হাসি ফোটে। তখন মাড়াইকৃত ধান পেষণ করে চলে। এগুলো রূপান্তর করে পিঠা-পুলি, মুড়ি-মুড়কি, শিরনি ও পায়েস তৈরি করা হয়। এ নিয়ে আনন্দের সীমা-পরিসীমা থাকে না। বিভিন্ন ধর্ম অনুসারীরা যার যার মতো করে নবান্ন উৎসবে বিভিন্ন আয়োজন করে থাকেন। তাই বলে এটা কোনো ধর্মীয় সংস্কৃতি নয়।


পহেলা বৈশাখ ঘিরে মানুষের মনন জগতে স্পন্দন তৈরি হয়। তাই পুরোনো ক্লেশ, হিংসা-বিদ্বেষ, দুঃখ-বেদনাকে বিদায় ও সুখ-সমৃদ্ধকে ধন্যবাদ জানানো হয় এবং আগামী পথচলা ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। অর্থাৎ এটা এক ধরনের সুখানুভূতি।
সুলতানি আমলে সোনারগাঁওয়ে সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের নেতৃত্বে ভাটিয়ালি, মারফতি, মরমি গানসহ উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে কবিতার আসরও বসত। কারণ সুলতান নিজেই একজন কবি ছিলেন। ওই সময় বিভিন্ন খানকায়ে লোকজ উৎসব জমে উঠতে। ওই সময় পীর-ফকিরদের বিভিন্ন খানকায় ও দরবার শরিফে ওরস অনুষ্ঠানকালে পালাগান ও কাওয়ালি আসর জমানো হতো।


লোকজ উপাদানের নিদর্শন হচ্ছে ‘মসলিন’। চতুর্দশ শতকে সোনারগাঁয়েও ‘মসলিন’ শিল্প বেশ সমৃদ্ধ ছিল। এ সংস্কৃতির ঐতিহ্য ধরে রাখতে শিল্পাচার্য জয়নাল আবেদিন ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আর্থিক অনুদানে সোনারগাঁয়ে গড়ে তোলেন ‘বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন’।
এখানে যুক্তগ্রাহ্য যে, কুটিরলিপি থেকে বাংলালিপির উদ্ভব হয়েছে বলে ভাষাবিদরা মনে করেছেন সেই দশম শতকে। কম্বোজরাজা ন্যায়পালদের ‘ইর্দার’ দানপত্রে এবং মহিপালদের ‘বানগড়’ দানপত্রের লিপিতে আদি বাংলা বর্ণমালা খচিত লেখা দেখা যায়। সে থেকেই বাংলা বর্ণমালার পথচলা শুরু। তাই বাংলার স্বকীয়তা খুবই বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত।


কবি শামসুর রাহমানের একটি গানের প্রথম স্তবক দিয়েই লেখার সমাপ্তি টেনে দিতে চাই, ‘স্মৃতি ঝলমল সুনীল মাঠের কাছে, পানি টলটল মেঘনা নদীর কাছে, আমার অনেক ঋণ আছে, ঋণ আছে। কতজন, কতকিছুর কাছে যে আমাদের ঋণ তা হিসেব করা অসম্ভব। এ ঋণ আরও বাড়বে সন্দেহ নেই। তবে তা শোধ করা যায় না, শুধু স্বীকার করা যায়।’


জাহাঙ্গীর হোসেন: কবি ও প্রাবন্ধিক
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম সলম ন র অবস থ ন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • ভালোবাসার ফ্রেমে মেহজাবীন-রাজীব, পেছনে আইফেল টাওয়ার