’৫২ থেকে ’২৪: সংগ্রামের ইতিহাস উঠে এল যে প্রদর্শনীতে
Published: 23rd, February 2025 GMT
রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারির ডানে অ্যাক্রিলিক মাধ্যমে আঁকা একটি চিত্রকর্ম চোখে পড়ল। চিত্রকর্মে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যার চিত্র সবই উঠে এসেছে। ঢাকা আর্ট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী রওশন আরার আঁকা চিত্রকর্মটিতে উঠে আসে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগও।
চিত্রশিল্পটির মতো দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, আন্দোলন, সংগ্রামী মানুষ, গ্রামীণ জীবন, নদী, প্রকৃতি, সুন্দরবনসহ ১০০টি চিত্রকর্মে সাজানো হয়েছে শিল্পকলার আর্ট গ্যালারি। দেশের ৫২ জন শিল্পীর শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে।
নর্থ ক্যানভাস বাংলাদেশের আয়োজনে ২১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে এই চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শওকাত আলী। তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী আজ রোববার রাত ৯টায় শেষ হয়েছে। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল।
আজ দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, প্রদর্শনী দেখতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আসছেন। প্রদর্শনীতে একটি চিত্রকর্ম চোখে পড়ল জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে। একটি সড়কে ইট-সুরকির স্তূপ। এক কিশোর ইট ছুড়ছে পুলিশের দিকে। পুলিশ গাড়ি নিয়ে পলায়নরত।
চিত্রশিল্পী এরাশ মাহমুদ বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে বেইলি রোড থেকে সাতরাস্তার দিকে পুলিশদের তাড়িয়ে দেওয়ার সময়কে ধরে চিত্রকর্মটি তিনি এঁকেছেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদের কাছে পুলিশ তথা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর পরাজয় এই চিত্রকল্পে ফুটে উঠেছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ও শেখ হাসিনার ক্ষমতার অপব্যবহার, তোষামোদ, লেজুড়বৃত্তি, ব্যাংক লুটপাট, অর্থ কেলেঙ্কারির চিত্র অ্যাক্রিলিক মাধ্যমে এঁকেছেন শেখ মনজুরুল আহসান। আরেকটি চিত্রকর্মে স্বৈরাচারের স্বরূপ কী ভয়ংকর হতে পারে, তা জলরঙের মাধ্যমে এঁকেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হাবিব উল্লাহ বাহার।
বিভাগীয় চারুকলা প্রদর্শনী উদ্যাপন কমিটির আহসান আহমেদ বলেন, চিত্রকর্মটি শেখ হাসিনার সরকারের সময় দেশে কোথাও প্রদর্শন করতে দেওয়া হয়নি। কামরুল হাসানের আঁকা ‘বিশ্ববেহায়ার’ মতো চিত্রশিল্পটি স্বৈরাচারের প্রতীক।
আয়োজকেরা জানান, রংপুর বিভাগীয় চারুকলা প্রদর্শনী-২০২৫–এ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৮৫ জন শিল্পীর দুই শতাধিক শিল্পীর শিল্পকর্ম জমা পড়ে। সেখান থেকে বরেণ্য শিল্পী আলাউদ্দিন আহমেদ ৫২ জন শিল্পীর ১০৮টি শিল্পকর্ম নির্বাচন করেন। তবে কয়েকটি না পৌঁছানোয় ১০০টি চিত্রশিল্প দিয়ে প্রদর্শনী করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ত রকর ম
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।
মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।
এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।