যশোরের মনিরামপুর উপজেলার হরিনা বিলের বাঁধ ভেঙে হাজার বিঘা বোরো ধানের ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। পানি প্রবেশ করায় ভেসে গেছে মাছের ঘেরও। 

গত শনিবার ভোর রাত ৪টার দিকে বাঁধটির ২০-২৫ হাত ভেঙে যায়। এলাকাবাসী মাইকিং করে ও নিজেদের উদ্যোগে দিনভর চেষ্টা করে পানি আটকাতে ব্যর্থ হন। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) তারা পানি আটকানোর চেষ্টা করেন। 

 

আরো পড়ুন:

দিতিকন্যার ‘মেয়েদের গল্প’ সিনেমায় থাকছেন না বাঁধন

গোপালগঞ্জে মধুমতি রক্ষায় বাধা ৫০ অবৈধ স্থাপনা

এদিকে, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে রবিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সেখানে উপস্থিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

এলাকাবাসী জানান, শনিবার ভোর ৪টার দিকে হরিনা বিলের মধ্যে থাকা খালের ২০-২৫ হাত বাঁধ ভেঙে যায়। এরপর থেকেই বিলের মধ্যে থাকা ফসলি জমিতে পানি প্রবেশ শুরু করে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা এলাকায় মাইকিং করে এবং নিজেদের উদ্যোগে শনিবার দিনভর চেষ্টা করেও পানি আটকাতে ব্যর্থ হন। ফলে সেখানে কোমর পর্যন্ত পানি জমেছে। রবিবারও চলছে পানি আটকানোর  চেষ্টা। পানির স্রোত বেশি থাকায় কোনো উদ্যোগই কাজে আসেনি। এতে করে ৯০০-১০০০ বিঘা জমিতে আবাদ করা বোরো ধান এখন কোমর পানিতে তলিয়ে আছে। 

মনিরামপুর উপজেলার দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য দিপক কুমার বলেন, “হরিনা বিলে বিমল ও আছাদের বিশাল আয়তনের দুটো মাছের ঘের রয়েছে। ঘের দুইটির মাঝখানে হরিনা খালের অবস্থান। খালের পাড় সরু হওয়ায় ঘের কেটে চওড়া করে পাড় বেঁধে তালের চারা রোপণ করা হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “ঘের মালিকের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, বোরো মৌসুম আসলে ঘেরের পানি সেচে হরিনা ব্রিজের মুখে বাঁধ দিয়ে খালে পানি ফেলা হয়। খালটি কেশবপুর উপজেলার গাইয়েখালি গেট হয়ে নদীর সঙ্গে মিশেছে। এবার বোরো মৌসুম শুরুর আগে, বিমলের ঘেরের পানি জমির মালিকরা নিজ খরচে সেচে বোরো আবাদ করেন। ঘেরের মধ্যে সরু করে আর একটি ঘের কেটে সেখানে মাছ ধরে রেখেছেন বিমল। হরিনা খালের পানি গাইয়েখালি গেট দিয়ে না সরায় এখন খালে পানি টুইটম্বুর হয়ে আছে।”

ভুক্তভোগী কৃষক অসিম রায় বলেন, “ভবদহ জলবদ্ধতার কারণে বর্ষা মৌসুমে ধান করতে পারি না। এখন পানি কমায় ধান চাষ করেছি, তাও জলের নিচে চলে গেলো। এখন আমরা কিভাবে সংসার চালাব সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, “ভেঙে যাওয়া অংশ পরিদর্শন করেছি। বাঁধ নির্মাণে আর্থিক সহযোগিতা প্রাদান করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে পর্যায়ক্রমে তাদের আর্থিক সহযোগিতার জন্য প্রয়োজীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/প্রিয়ব্রত/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ