সিদ্ধিরগঞ্জে বাবা মায়ের সাথে অভিমান ঘর ছাড়লো স্কুল ছাত্র শুভ
Published: 24th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বাবা মায়ের সাথে অভিমান করে ঘর ছেড়েছে শুভ দাস (১৫) নামের নবম শ্রেনির এক স্কুল ছাত্র।
মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে দশটার সময় সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে অন্যত্র অজ্ঞাত স্থানে চলে যান ওই স্কুল ছাত্র।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে নবম শ্রেনির স্কুল ছাত্র শুভ দাস তার বাবা মাকে মোবাইল ফোন কিনে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। তার (স্কুল ছাত্র শুভ দাস) কথা মতো মোবাইল ফোন কিনে না দেয়ায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে দশটার সময় বাবা মার সাথে অভিমান করে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে অন্যত্র অজ্ঞাত স্থানে চলে যান ওই স্কুল ছাত্র।
সে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকার আল বালাগ স্কুলের নবম শ্রেনির ছাত্র। বর্তমানে সে নিখোঁজ রয়েছেন।
নিখোঁজ স্কুল ছাত্রের পিতা দিলিপ দাস বলেন, তার ছেলে ঘর থেকে চলে যাওয়ার পর থেকে আর ঘরে ফিরে আসেনি। সন্তানকে ফিরে পেতে নিজের মুঠোফোন নাম্বার দিয়ে সন্তান হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন দিলিপ দাস।
পরে দিলিপ দাসের মুঠোফোনে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিজেকে আখাউড়া থানার পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার ছেলে (দিলিপ দাসের ছেলে) এক্সিডেন্ট করেছে দাবি করে তার কাছ থেকে চিকিৎসা বাবদ বিকাশের মাধ্যমে নগদ ৭ হাজার সাতশত টাকা নেন।
পরে আখাউড়া থানায় যোগাযোগ করা হলে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি ভূয়া বলে জানতে পারেন দিলিপ দাস। এদিকে ছেলেকে ফিরে পেতে পিতা দিলিপ দাস সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।