চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মেসার্স কাদেরিয়া ব্রিকস ইটভাটায় বছরে ৩০ লাখ ইট তৈরি করা হয়। ইটের ব্যবসা থেকে আয় আড়াই থেকে ৩ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২৪ সালে ১২ হাজার টাকার ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) সরকারকে পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। পরিবেশ অমান্য করে ইটভাটায় পোড়ানো হয় জ্বালানি কাঠ। নেই জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স হালনাগাদ। এসব অনিয়মের কারণে ৮ ফেব্রুয়ারি কাদেরিয়া ব্রিকসকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অপকর্ম আড়াল করতে নিয়মিত প্রশাসনকে লাখ টাকা চাঁদা দিত প্রতিষ্ঠানটি।  
শুধু এ ইটভাটাই নয়; অবৈধ কাঠ ব্যবহার, হালনাগাদ লাইসেন্স না থাকার অপরাধে মেসার্স কর্ণফুলী ব্রিকসকে ২ লাখ টাকা, মেসার্স গোল্ডেন ব্রিকসকে ৫০ হাজার, মেসার্স সাঈদ আহম্মদ ব্রিকসকে ১ লাখ এবং মেসার্স ন্যাশনাল ব্রিকসকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তারা সরকারের ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা খাজনা পরিশোধ করেনি। এ পাঁচ ইটভাটার মতো চট্টগ্রামের ২৭৬টি ভাটার মালিক ২০২৪ সালে সরকারের নির্ধারিত খাজনা পরিশোধ করেনি। এতে সরকারের গচ্চা গেছে ৪১ লাখ টাকা। যদিও বছরে প্রতিটি ইটভাটা মালিক ১ থেকে ৩ কোটি টাকার ইট বিক্রি করে থাকেন। 
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.

কামরুজ্জামান বলেন, ইটভাটা থেকে 
২০২৪ সালে কাঙ্ক্ষিত ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয়নি। দেশের সার্বিক পরিস্থিতিসহ নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রাজস্ব বিভাগ কর আদায়ে কাজ 
করে যাচ্ছে। 

যদিও মাসিক সমন্বয় সভায় জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম চট্টগ্রামের ৩৭৩ ইটভাটার বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ও অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। তার পরও ভ্রাম্যমাণ আদালত বেশ কয়েকটি উপজেলায়  অভিযান পরিচালনা করে। 
মেসার্স বখতেয়ার ইটভাটার মালিক বখতেয়ার উদ্দিন বলেন, আগস্টের পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশ ইটভাটার মালিকানায় পরিবর্তন এসেছেন। আগে যারা মালিক ছিলেন, তাদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা-সমর্থক হওয়ায় গা-ঢাকা দিয়েছেন। আড়ালে থেকে তারা নতুন পার্টনার নিয়ে ইটভাটাগুলো চালাচ্ছেন। এখন যারা নতুনভাবে ইটভাটা পরিচালনা করছেন, তারা খাজনা দিতে হবে– তা না জানার কারণে খাজনা বকেয়া রয়ে গেছে। 

আরেক ইটভাটার মালিক নিজাম উদ্দিন বলেন, বড় ইটভাটায় বছরে ২০-৩০ লাখ ইট তৈরি হয়। ২ থেকে ৩ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। কর্মচারী খরচ, প্রশাসন ও সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা লাভ হয়। অবহেলার কারণে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা খাজনাটা দেওয়া হয়ে ওঠে না।
চট্টগ্রামে ৩৭৩ ইটভাটা থাকলেও মহানগর এবং পটিয়া উপজেলায় কোনো ইটভাটা নেই। জেলার অন্য ১৪টি উপজেলায় ইটভাটা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ইটভাটা রাঙ্গুনিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, রাউজান, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও চন্দনাইশ উপজেলায়। এর মধ্যে রাঙ্গুনিয়ায় ৭০টি, সাতকানিয়ায় ৫৩টি, রাউজানে ৪৭টি, ফটিকছড়িতে ৪৩টি, লোহাগাড়ায় ৪২টি, হাটহাজারী ও চন্দনাইশে ৩২টি করে, মিরসরাইয়ে ১৪টি, সন্দ্বীপে ১৬টি, সীতাকুণ্ডে আটটি, বোয়ালখালীতে দুটি, কর্ণফুলীতে আটটি, আনোয়ারায় দুটি ও বাঁশখালীতে চারটি ভাটায় ইট তৈরি হচ্ছে। 
অনেকের অভিযোগ, অবৈধভাবে কাঠ পোড়ানোসহ নানা অনিয়ম চালু রাখতে লাখ টাকা প্রশাসনকে চাঁদা দেওয়ার কারণে মালিকরা খাজনা দিতে অনীহা দেখান। 
এসব ইটভাটার মধ্যে জেলা প্রশাসন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) আদায় নির্ধারণ করে ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ১৭ লাখ টাকা। ১৪ উপজেলার মধ্যে শুধু সীতাকুণ্ডের ইটভাটাগুলো শতভাগ খাজনা পরিশোধ করেছে। রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া ও বাঁশখালী উপজেলার কোনো ইটভাটা খাজনা পরিশোধ করেনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইটভ ট ইটভ ট র ম উপজ ল য় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা

পুঁজিবাজারের বিমা খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর পুরোটাই নগদ লভ্যাংশ। ফলে প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারের বিপরীতে ১ টাকা নগদ লভ্যাংশ পাবেন শেয়ারহোল্ডারা।

২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এই লভ্যাংশ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে রবিবার (২৭ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।

তথ্য মতে, ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ১৪ জুলাই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হবে। লভ্যাংশ প্রদানে শেয়ারহোল্ডার নির্বাচনের জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৫ জুন।

সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২.০৫ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ২.৪৩ টাকা।

২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২১.৭৯ টাকা।

এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্যসীমা থাকবে না।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ৫ বছরে, অস্ট্রেলিয়ার বিনোদন বাজার বাড়ছে
  • জ্বালানি তেলের দাম কমল লিটারে ১ টাকা
  • আইন সংশোধন করে কি ঠেকানো যাবে ইন্টারনেট বন্ধ
  • ম্যারিকোর ১ হাজার ৯৫০ শতাংশ চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা
  • অর্থনীতির আকারে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ দশম
  • ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • সিটি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা