আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) পক্ষ থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জার্মানি সফরে বাধা থাকবে না। দেশটির সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ফ্রেডরিশ মের্ৎস এ কথা জানিয়েছেন।

জার্মানিতে গত রোববারের জাতীয় নির্বাচনে জয় পেয়েছে রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)। এর ফলে দেশটির পরবর্তী চ্যান্সেলর হিসেবে ফ্রেডরিশ মের্ৎসের নাম শোনা যাচ্ছে।

এর এক দিন পর, সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মের্ৎস বলেন, নির্বাচনে জয়ের পর নেতানিয়াহু ফোনে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, জার্মানিতে নতুন সরকার গঠনের পর তাঁদের সাক্ষাৎ হওয়া উচিত।

বার্লিনে সাংবাদিকদের মের্ৎস আরও বলেন, ‘যদি তিনি (নেতানিয়াহু) জার্মানি সফরের পরিকল্পনা করেন, আমি নিজের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, আমরা এমন একটি উপায় খুঁজে বের করব, যাতে তিনি জার্মানি সফর করতে পারেন এবং গ্রেপ্তার না হয়ে ফিরে যেতে পারেন।’

জার্মানির সম্ভাব্য চ্যান্সেলর আরও স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটা খুবই ভ্রান্ত একটি ধারণা যে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী জার্মানি সফর করতে পারবেন না। তিনি অবশ্যই জার্মানি সফর করতে পারবেন।’

এর আগে নেতানিয়াহুর দপ্তর বিবৃতিতে জানায়, জার্মানিতে রাষ্ট্রীয় সফরে যেতে নেতানিয়াহুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মের্ৎস।

গত বছরের নভেম্বরে নেতানিয়াহু ও তাঁর সরকারের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কমান্ডার মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও। গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

আরও পড়ুনআইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর নেতানিয়াহুর ভাগ্যে এখন কী ঘটতে পারে২২ নভেম্বর ২০২৪

ইসরায়েল ও হামাসের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, গত বছরের জুলাইয়ে ইসরায়েলি বিমান হামলায় মোহাম্মদ দেইফ নিহত হয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহুর জার্মানি সফর–সংক্রান্ত মের্ৎসের সোমবারের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নেদারল্যান্ডসের দি হেগভিত্তিক আইসিসি। বলেছে, আইসিসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দেশগুলোর আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

কোনো সদস্য দেশের যেকোনো উদ্বেগ থাকলে তা আদালতের সঙ্গে সময়োপযোগী আর কার্যকর পদ্ধতিতে সমাধান করা উচিত বলেও জানিয়েছে আইসিসি।

আরও পড়ুনক্ষমতায় এসেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি নেতানিয়াহুকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানালেন ট্রাম্প২৯ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল পর য় ন আইস স

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।

গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।

অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।

ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”

হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ