আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে আবারও ব্যর্থতার চক্রে আটকে গেছে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ২২৮ রানের অলআউট হয়ে ৬ উইকেটে হেরে যায় টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪১ রানের লো-স্কোরে থেমে ৫ উইকেটে হেরে বিদায় নেয় টুর্নামেন্ট থেকে। এত কম রানের পুঁজি নিয়েও লড়াই করেছে বোলাররা, যদিও এমন পুঁজি লড়াইয়ের জন্য যথেষ্ট না। মোটাদাগে বাজে ব্যাটিং প্রদর্শনীর কারণেই দুই ম্যাচে হার দেখতে হয়েছে বাংলাদেশকে। 

এদিকে বাংলাদেশের ব্যর্থতার বড় কারণ হিসেবে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বাজে পারফরম্যান্সকে দায়ী করেছেন সাবেক ভারতের সাবেক ওপেনার ওয়াসিম জাফর। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই দুই ব্যাটারই দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলে দ্রুত ফিরে যান, যার ফলে ২৭ ওভারেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দল। একসময় বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ জাফর সরাসরিই বলেছেন, আইসিসি ইভেন্টে পারফর্ম করতে পারেন না সিনিয়র ক্রিকেটাররা।

ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন-ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাফর বলেন, ‘আমরা সম্ভবত সাকিব আল হাসানকে ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দেখেছি, যেখানে তিনি ছিলেন ব্যাট হাতে উজ্জ্বল খেলোয়াড়। কিন্তু আমি জানি না এটা কীরকম চাপ? তারা কি বেশি চাপ নিয়ে ফেলছে? কারণ তারা বড় মঞ্চে এসে পারফর্মই করতে পারে না।’

মাহমুদউল্লাহর আইসিসি ইভেন্টে ভালো পারফর্ম করার ইতিহাস আছে। ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে টানা দুটি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। এছাড়াও ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি করেছিলেন। এবারের আসরে তিনি প্রথম ম্যাচে চোটের কারণে দলে ছিলেন না আর দ্বিতীয় ম্যাচে জায়গা পেলেও দায়সারা ব্যাটিং নিয়েই ফিরতে হয়েছে মাত্র ৪ রানে।

জাফর বলেন, ‘আজকের যে শট সিলেকশন আমরা দেখেছি, তা খুবই হতাশাজনক ছিল। মুশফিক সেই শট খেলেছে, মাহমুদউল্লাহও সেই বেপরোয়া শট খেলেছে। আর এটা একটি সহজ জয়ের ম্যাচ ছিল। তারা সবসময় ভালো করার কথা বলে। তবে দুঃখজনকভাবে, আইসিসি ইভেন্টে সবসময়ই তারা ব্যর্থ।’

রাওয়ালপিন্ডির মাঠে বাংলাদেশ অন্তত ৫০-৬০ শর্ট রান নিতে পারতেন বলে মনে করেন জাফর। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তারা সহজেই সেই পিচে ৩০০ এর অধিক রান করতে পারত। তাই তাদের নিজেদেরকেই দোষ দিতে হবে। বোলিং ইউনিট থেকে এটি অনেক বেশি চাওয়া যে তারা নিউজিল্যান্ডকে ২৪০ রানের নিচে অলআউট করে ফেলবে।’

সাবেক কিউই পেসার শেন বন্ড মনে করেন, বাংলাদেশের বোলিং বিভাগ প্রতিভাবান হলেও ব্যাটিং ইউনিটই দলের বড় সমস্যা। বাংলাদেশের ফিল্ডিং ব্যর্থতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। ম্যাচে রাচিন রবীন্দ্র ২৬ রানে রান আউটের সুযোগ পান, কিন্তু বাংলাদেশ তা হাতছাড়া করে। এরপর ৯৩ ও ১০৬ রানে দুইবার ক্যাচ মিস করেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ। 

বন্ড বলেন, ‘বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ ভালো, তাদের গতিময় বোলার আছে, একজন বাঁহাতি পেসার আছে, যা নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ডের মতো দলের নেই। কিন্তু ছোটখাটো ভুলগুলোই ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেয়। ক্যাচ মিস ও রান-আউট হাতছাড়া করা জয়ের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইস স

এছাড়াও পড়ুন:

২০৭ রানে শেষ অস্ট্রেলিয়া, জয়ের জন্য প্রোটিয়াদের লক্ষ্য ২৮২

লর্ডসে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের তৃতীয় দিনেই জমে উঠেছে খেলা। দ্বিতীয় ইনিংসে অ্যালেক্স ক্যারি ও মিচেল স্টার্কের দৃঢ়তায় ২০৭ রান তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ৭৪ রানের লিড থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ২৮২ রান।

ম্যাচে বল হাতে ঝলক দেখিয়েছেন কাগিসো রাবাদা। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও নেন চারটি। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯ উইকেট তুলে নেন এই প্রোটিয়া গতিতারকা। অস্ট্রেলিয়ার শেষ ব্যাটার হিসেবে অপরাজিত ছিলেন মিচেল স্টার্ক, খেলেছেন ৫৮ রানের কার্যকরী ইনিংস।

প্রথম ইনিংসে ২১২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। স্টিভ স্মিথ ও বেউ ওয়েবস্টার ছাড়া কেউই উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেননি। জবাবে কামিন্সের আগুনে পেসে ১৩৮ রানেই অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

দ্বিতীয় ইনিংসে ফের ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ৭৩ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারায় তারা। একে একে ব্যর্থ হন উসমান খাজা (৬), ক্যামেরুন গ্রিন (০), ট্র্যাভিস হেড (৯), স্টিভ স্মিথ (১৩) ও কামিন্স (৬)। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন অ্যালেক্স ক্যারি ও মিচেল স্টার্ক। অষ্টম উইকেটে দুজন গড়েন ৬১ রানের জুটি। ক্যারি করেন ৪৩ রান, স্টার্ক তুলে নেন ফিফটি।

শেষ উইকেটে জশ হ্যাজলউডকে নিয়ে আরও একবার প্রতিরোধ গড়েন স্টার্ক। দুইজন মিলে ৫৯ রানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যান ২০০ পেরিয়ে। শেষ পর্যন্ত হ্যাজলউডকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করেন এইডেন মার্করাম।

এখন প্রোটিয়াদের সামনে সুযোগ ইতিহাস গড়ার। প্রথমবারের মতো টেস্ট বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে তাদের প্রয়োজন ২৮২ রান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অজিদের হারিয়ে টেস্টের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা 
  • ২৮২ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে দ. আফ্রিকা
  • ২০৭ রানে শেষ অস্ট্রেলিয়া, জয়ের জন্য প্রোটিয়াদের লক্ষ্য ২৮২