সালটা ১৯৮৮। বরিশালের উজিরপুরের বেলায়েত হোসেন তখন সদ্য বিয়ে করেছেন। ছিলেন জাহাজের কর্মচারী। সন্ধ্যা নদীর তীরে ছিল তাঁদের বাড়ি। ’৮৮–এর বন্যায় ঘরবাড়ি সব বিলীন হয়ে যায়। জীবিকার সন্ধানে নববধূর হাত ধরে বাগেরহাটের মোংলার উদ্দেশে পাড়ি জমান তিনি।

বাগেরহাটের কয়েকটি এলাকায় উদ্বাস্তুর মতো ছিলেন তিন দশক। ২০১৯ সালে মোংলা পৌরসভার নারিকেলতলা আবাসন প্রকল্পে সরকারি একটি ঘর পান বেলায়েত। পাঁচ সদস্যের পরিবারটি ৫০০ বর্গফুটের টিনের চালার ঘরটিতে মাথা গুঁজে আছে কোনোমতে।

উপকূলীয় এলাকায় নদীভাঙন, একের পর এক ঘূর্ণিঝড়সহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানা দুর্যোগের মুখোমুখি হয়ে ভিটেমাটি, সহায়সম্বল হারাচ্ছেন বেলায়েতের মতো অনেকে। সুপেয় পানির সংকটের কারণে মরণব্যাধি, মেয়েদের গায়ের রং মলিন ও ত্বক খসখসে হওয়া, ফসলি জমিতে আবাদ না হওয়ার মতো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েও ভিটেমাটি আঁকড়ে বাঁচতে চায় মানুষ। আর কোনো উপায় না থাকলে এক জেলা থেকে আরেক জেলা, রাজধানী অথবা দেশের বড় শহরগুলোর দিকে ছোটে মানুষ। এভাবেই বাড়ছে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা।

যেন গুহা থেকে বেরিয়ে আসছে মানুষগুলো। মিরপুরের ভোলা বস্তিতে ৪০-৫০টি পরিবার এমন ‘গুহা’র মধ্যে বাস করে। দিনে যেখানে থাকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। গতকাল দুপুরে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিস্ফোরক মামলায় চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ

চট্টগ্রামে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন এ আদেশ দেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।

গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ৬টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন পিটিয়ে হত্যা করেন।

গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ