আসছে পবিত্র মাস রমজান। পুরো মাস ধরে রোজা পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। রোজাকে ধর্মীও রীতি এবং আত্ম-প্রশান্তির উপায় মনে করা হয়। একজন রোজাদারকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হয়। এতে শরীরে নানা প্রভাব পড়ে। রোজার প্রভাব কেমন, এতে শরীরে কি কি পরিবর্তন আসে; এসব বিষয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন ল্যাবএইড হসপিটালের সিনিয়র পুষ্টিবিদ কামরুন আহমেদ।

এই পুষ্টিবিদ জানান, রোজা রাখার সুফল পেতে হলে মানুষকে স্বাস্থ্যকর, পরিষ্কার ও হালকা খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে। তেমনটি করা হলে সেটি শরীরকে ‘ডিটক্সিফাই’ করবে। রোজা রাখলে বছরের পর বছর ধরে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।  রোজা কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকির কারণগুলোর ওপর বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। যেমন রক্তচাপ কমানো, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো, ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা উন্নত করা এবং ওজন কমানোর কাজ করে। আর এটি ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো কার্ডিয়াক অসুস্থতার ঝুঁকিও হ্রাস করতে পারে।

কামরুন আহমেদ বলেন, ‘‘ রোজা রাখলে মানব শরীর নতুন জীবনীশক্তি লাভ করে। রোজা রাখা এবং বিশেষ করে কম প্রোটিনযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করার অভ্যাস শরীরে তারুণ্য ধরে রাখতে কাজ করে। রোজা মানুষের বৃদ্ধির হরমোনের স্তরকে উন্নীত করে বলে মনে করা হয়। এই হরমোন শরীরের বৃদ্ধি, বিপাক, ওজন হ্রাস, পেশী শক্তি এবং ব্যায়ামের কর্মক্ষমতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ সম্পর্কিত বর্তমান গবেষণা মূলত প্রাণিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ, তাই এটি কীভাবে মানুষের তারুণ্যকে প্রভাবিত করে তা সম্পূর্ণরূপে বোঝার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন।’’

আরো পড়ুন:

রান্নায় হলুদ বেশি হয়ে গেলে করণীয়

ই-বুককে জনপ্রিয় করছে ‘বইটই’, বিনামূল্যে পড়া যায় তিন শতাধিক বই

প্রাণীদের ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে যে, রোজা রাখলে তা পার্কিনসন এবং আলঝাইমারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে এবং ফলাফল উন্নত করে। সেইসঙ্গে স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের প্রক্রিয়াকরণকে বাড়িয়ে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও উন্নত করে। প্রানিজ গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, রোজা রাখলে তা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং স্নায়ু কোষের উৎপাদন বাড়ায়। তবে মানুষের জন্য প্রাসঙ্গিকতা নির্ধারণের জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।

কামরুন আহমেদ বলেন, ‘‘মানব গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোজা উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতার লক্ষণ কমায় এবং সামাজিক সংযোগ উন্নত করতে পারে। এই প্রভাবগুলো মূল্যায়ন করার জন্য আরও অধ্যয়ন প্রয়োজন তবে এখনও পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলগুলো সন্তুষ্টিজনক।’’

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের

মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের  ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।  

এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। 

বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ