চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে রাব্বি নামের এক বছর বয়সী শিশু অপহরণ ও বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনার ৭ দিন পর অপহৃত শিশু উদ্ধার এবং অপহরণ চক্রের মূল হোতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৭। 

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরীর চান্দগাঁওয়ে র‌্যাব-৭ এর সিপিসি-৩ মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে.

কর্নেল মাহবুব আলম। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৭ অধিনায়ক জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ফাতেমা আক্তার নামের এক নারী তার ৫ বছর বয়সী কন্যা ও ১ বছর ৩ মাস বয়সী শিশু পুত্র রাব্বীকে নিয়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। সেখানে জনৈক দুলাল নামে এক ব্যক্তি সাথে তার পরিচিত হয়। পরিচয়ের সুবাদে ফাতেমা আক্তার দুলাল মিয়াকে নেত্রকোনা ট্রেনের সময় সংক্রান্তে জিজ্ঞাসা করলে দুলাল মিয়া জানায় আজকে নেত্রকোণাগামী কোন ট্রেন নাই। 

ভুক্তভোগী ফাতেমা আক্তার দুলাল মিয়াকে চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী এলাকায় তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে দুলাল মিয়া ভুক্তভোগী ফাতেমা আক্তার এবং তার সন্তানদের নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। 

এর এক পর্যায়ে দুলাল মিয়া ভুক্তভোগী ফাতেমা আক্তারকে বিভিন্ন কৌশলে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানাধীন বাসুর কলোনীতে নিয়ে যায় এবং সেখানে একটি রুম ভাড়া করে অবস্থান করে। পরবর্তীতে ১৯ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী ফাতেমা আক্তার সকালের নাস্তা খেয়ে বাথরুমে যায়। সেই সুযোগে দুলাল মিয়া ভুক্তভোগী ফাতেমা আক্তার এর ১ বছর ৩ মাসের শিশু বাচ্চা নিয়ে পালিয়ে যায়।

এই ঘটনায় ফাতেমা আক্তারের স্বামী বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানায় মো. দুলাল মিয়াকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা ও অভিযোগ পেয়ে র‌্যাব-৭, শিশু অপহরণকারীকে ধরতে এবং অপহৃত শিশু উদ্ধারে গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। 

নজরদারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, আসামী মো. দুলাল মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার সদর থানা এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে র‌্যাব-৭ ও র‌্যাব-১৪ ময়মনসিংহ এবং র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা এর যৌথ আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মো. দুলাল মিয়া (৪৮)কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। 

গ্রেপ্তারের পর দুলাল মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে ব্রাহ্মবাড়িয়ায় তাদের পরিচিত এক প্রবাসী দম্পতির কাছে ১ লাখ টাকার বিনিমিয়ে অপহৃত শিশুটিকে বিক্রয় করে দিয়েছে। 

পরবর্তীতে র‌্যাব বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানাধীন এলাকা হতে অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার করে এবং ঘটনায় জড়িত আসামি মোরশেদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। 

র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. দুলালের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানায় চুরি সংক্রান্তে একটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও, মো. দুলাল মিয়া আড়াই বছর বয়সী শিশু সারা মনিকে অপহরণের মামলায় অভিযুক্ত এক নম্বর আসামি। উক্ত মামলায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে মো. দুলাল মিয়ার স্ত্রী রুনা বেগম বর্তমানে কিশোরগঞ্জ ভৈরব থানা কারাগারে রয়েছে। 

উল্লেখ্য, অভিযুক্ত আসামি মো. দুলাল মিয়ার মোবাইলে শিশু বিক্রি সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কথোপকথনের তথ্য পাওয়া গেছে। দুলাল মিয়া এবং তার পরিবার এক ভয়ঙ্কর সক্রিয় অপহরণ চক্র পরিচালনা করে বলে র‌্যাব জানিয়েছে। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে র‌্যাব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 

গ্রেপ্তার অপর আসামি মোরশেদ মিয়া জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে ১৭ বছর প্রবাসে ছিল। তার পাঁচটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মূলত, পুত্র সন্তানের আকাঙ্খায় সে এই অপহরণ চক্রের সাথে যোগাসাজশে প্ররোচনা দিয়ে শিশু বাচ্চাটিকে ক্রয় করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

ঢাকা/রেজাউল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর অপহ ত শ শ

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী

নারায়নগঞ্জের জেলার ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় আমেনা বেগম (৩৮) নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারী ফিরে গেলো তার আপন ঠিকানায়। 

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে উদ্ধার মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  পরিবারের লোকজন কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। মানসিক প্রতিবন্ধী নারী কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার লনেস্বর গ্রামের জহিরুল হকের স্ত্রী। 

ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১১ টার দিকে ফতুল্লা বাজার এলাকায় অস্বাভাবিক আচরন করতে থাকা মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে ঘিরে লোকজনের ভীড় উপস্থিতি দেখতে পেয়ে এগিয়ে যায় পুলিশ।

নারীটির আচরন ও কথাবার্তা শুনে মানসিক প্রতিবন্ধী  মনে হওয়ায় তাকে ফতুল্লা মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রতিবন্ধী নারীর বিচ্ছিন্নভাবে প্রদত্ত তথ্যের সমন্বয়ে থানা পুলিশ ধারণা করেন যে তার বাড়ী কুমিল্লা জেলার কোন এক জায়গায়।

মঙ্গলবার সকালে মানসিক প্রতিবন্ধী নারী নানা কথাবার্তার এক পর্যায়ে তার বাড়ী এবং পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে বিস্তারিত জানায়।পরবর্তীতে পুলিশ বেলা ১১ টার দিকে 

ঐ নারীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে। পরে কুমিল্লা থেকে বিকেল ৪ টার ঐ নারীর ভাই সহ পরিবারের অপর সদস্যরা থানায় এলে মানসিক প্রতিবন্ধী নারী আমেনা বেগম কে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে তুলে দেয়।

আমেনা বেগমের ভাই মোঃ মানিক জানায়,তার বোন মানসিক রুগী। বোন জামাই প্রবাসী। সোমবার সকাল ১০ টার দিকে নিজ বাসা থেকে পরিবারের সকলের অগোচরে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। তারা তাকে খুঁজে পেতে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ ও করতেছিলো।

মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে ফতুল্লা থানা পুলিশ তাদের কে মোবাইল ফোনে ফোন করে তার বোনকে পাওয়ার বিষয়টি জানায়। পরে চারটার দিকে তারা ফতুল্লা থানায় এসে তার বোনকে পায়।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক গাজী শামীম জানান,নারীটি রাতে ঠিকমতো কিছু বলতে পারছিলোনা। সকালে তার সাথে দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তার ফলে বাসার ঠিকানা জানতে পারেন। তখন সেখানকার থানার সাথে যোগাযোগ করেন।

থানা থেকে স্থানীয় মহিলা মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে ঐ মহিলার ইউপি সদস্যের মাধ্যমে নারীর পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ হয়। বিকেল চারটার দিকে ঐ নারীর পরিবারের সদস্যরা ফতুল্লা থানায় এলে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতিআগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন টিআইবির
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার
  • ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
  • নরসিংদীতে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি স্থগিত
  • দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা: দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • গাজায় পাগলের মতো বোমা ফেলছে ইসরায়েল
  • ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী
  • ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ টাকার রড নিলো প্রতারক চক্র, কুমিল্লায় গ্রেপ্তার ৩