ইউক্রেনে সব ধরনের সামরিক সহায়তা বন্ধের কথা বিবেচনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। ওভাল অফিসে স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পরে ওয়াশিংটন পোস্টকে এমনটাই বলেছেন হোয়াইট হাউজের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

শনিবার (১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কিয়েভ পোস্ট। 

শুক্রবার হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে বৈঠকে বাগবিতণ্ডায় জড়ান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।  উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার চুক্তি স্বাক্ষরের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। বাতিল করা হয় দুই নেতার যৌথ সংবাদ সম্মেলন। এর পরপরই হোয়াইট হাউজ থেকে জেলেনস্কিকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।

আরো পড়ুন:

ট্রাম্পের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা
জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউজ থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয়েছিল

ট্রাম্প-জেলেনস্কির বাগবিতণ্ডা, প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন বিশ্ব নেতারা

এদিনই হোয়াইট হাউজের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনে সমস্ত সামরিক সহায়তা বন্ধ করার কথা বিবেচনা করছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এই সিদ্ধান্তের ফলে ইউক্রেনে পাঠানোর অপেক্ষায় থাকা কোটি কোটি ডলারের রাডার, যানবাহন, গোলাবারুদ এবং ক্ষেপণাস্ত্র বন্ধ হয়ে যাবে।’ 

ওই কর্মকর্তা জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল, এমন দাবিও খারিজ করে দিয়েছেন। জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, বৈঠকের আগে ‘ইতিবাচক সুর দেওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা করা হয়েছিল।”

ওয়াশিংটন পোস্টের সূত্র অনুসারে, ট্রাম্প তাদের বৈঠকের আগে জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে তার মন্তব্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার মাধ্যমে এটি প্রতিফলিত হয়েছিল।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, বাইডেন প্রশাসনের অধীনে ইউক্রেনের জন্য অনুমোদিত গোলাবারুদ এবং সরঞ্জামের চূড়ান্ত চালানসহ সব ধরনের মার্কিন সহায়িতা ট্রাম্প প্রশাসন শিগগির সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে পারে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ হামলার পর, বাইডেন প্রশাসন মার্কিন সামরিক সাহায্য প্রায় প্রতি দুই সপ্তাহ পরপর ঘোষণা করেছিল, কখনও কখনও মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে। সূত্রের বরাতে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেন্টাগনের মজুদ থেকে ইউক্রেনের জন্য প্রায় ৩ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার এখনও অনুমোদিত থাকায়, ট্রাম্প প্রশাসন এই চালানগুলো সরবরাহের আগেই তা প্রত্যাহার করতে পারে।

সাবেক বাইডেন প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলো থেকে ইউক্রেন সর্বশেষ যেসব অস্ত্র কিনেছে, তা আগামী ছয় মাসের মধ্যে পাঠানো হবে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের জন্য পরোক্ষ সহায়তাও বন্ধ করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে: সামরিক অর্থায়ন, গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি, ইউক্রেনীয় সেনা ও পাইলটদের প্রশিক্ষণ এবং জার্মানির একটি ঘাঁটি থেকে আন্তর্জাতিক সাহায্যের মার্কিন সামরিক সমন্বয়।

নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, ওভাল অফিসে শুক্রবারের ঘটনার পরে ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ সহায়তাও বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।” 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন কর মকর ত র একজন বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন