নির্ধারিত সময় শেষে এক বছর সময় বাড়িয়েও ময়মনসিংহে শেষ করা যাচ্ছে না হাইটেক পার্ক নির্মাণের কাজ। ৫৫ শতাংশ কাজ হওয়ার পর গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বন্ধ হয়ে যায় প্রায় দেড় শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য হাইটেক পার্ক নির্মাণের কাজ। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাজ না করায় নির্মাণসামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। দ্রুত হাইটেক পার্কের কাজ শেষ করে এটি চালুর দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে দেখভালের জন্য উপসহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান প্রকল্পটিতে রয়েছেন। আজ রোববার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাততলাবিশিষ্ট হাইটেক পার্কের মূল কাজ হবে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ভারতে চলে যাওয়ায় পুরো প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে শ্রমিকসংকটে কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে ধীরে ধীরে কাজ চালুর চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পটির ৫৫ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। আমরা এক বছর সময় পেলে কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তর করতে পারব।’

প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ২২ জুন ময়মনসিংহ নগরের কিসমত এলাকায় হাইটেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন তৎকালীন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক। ভারত সরকারের অর্থায়নে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীন জেলা পর্যায়ে হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ময়মনসিংহে পার্কটি হচ্ছে। ৬ দশমিক ১ একর জমির ওপর প্রায় ১৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে এটি। এই ভবনের প্রতি তলায় ১৫ হাজার বর্গফুট জায়গা থাকবে। পার্কটি চালু হলে প্রতিবছর অন্তত এক হাজার তরুণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও তিন হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা শহীদুল আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার পালানোর পর হাইটেক পার্কের কাজও বন্ধ রয়েছে। আমরা চাই দ্রুত পার্কটি বাস্তবায়িত হোক। এটি চালু হলে আমাদের এলাকার চিত্র বদলে যাবে। আমাদের এলাকার ছেলেমেয়েরা এই প্রতিষ্ঠান থেকে উপকৃত হবে।’

২০২২ সালের জুনে ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন হলেও কাগজপত্রে কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের জুনে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো (এলঅ্যান্ডটি) কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে ভয়েন্টস সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড নামে ভারতীয় অপর একটি প্রতিষ্ঠান। কাজটি ২০২৪ সালের জুনে শেষ না হওয়ায় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত আরও এক বছর সময় বাড়ানো হয় বলে জানিয়েছেন প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

কাজের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো (এলঅ্যান্ডটি) কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের কর্মকর্তা রাজীব ঘোষ বলেন, তিনি ভারত থেকে প্রকল্পটিতে নতুন যোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে কিছু বলা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন তিনি।

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, ‘হাইটেক পার্ক প্রকল্পটির কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে ইতিমধ্যে কথা বলেছি। এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আশা করছি, খুব দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ইট ক প র ক র প রকল প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিক্ষোভ করেছেন যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মিলগেট এলাকায় প্রথমে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে পরে আঞ্চলিক সড়কে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলে তাঁদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলা হলে তাঁরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীর যমুনা অ্যাপারেলস কারখানায় ২২ এপ্রিল বিশৃঙ্খলাসহ নানা অভিযোগে কারখানার ১১৪ শ্রমিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের সব পাওনা পরিশোধও করা হয়। শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে ২৩, ২৪ ও ২৫ এপ্রিল কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২৬ এপ্রিল কারখানা খুলে দেওয়া হলে সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন। এরপর ওই দিন চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি শুরু করেন তাঁরা। এর পর থেকে শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে কারখানা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।

আজ সকালে বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও ছাঁটাই করা শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকেরা। প্রথমে তাঁরা ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে তাঁরা আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় শিল্প পুলিশ, থানা–পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ধাওয়া ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন।

কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, ১০ দিন আগে কারখানার কোয়ালিটি সেকশনের শ্রমিক মো. হুমায়ুন দুই দিনের ছুটি চেয়েছিলেন। ছুটি না পেয়ে হুমায়ুন নিজেই অনুপস্থিত থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার অ্যাডমিন অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান তাঁর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান এবং হুমায়ুনকে মারধর ও গুম করার হুমকি দেন। একপর্যায়ে হুমায়ুনকে কারখানার নিচতলার গুদামঘরের বাথরুমে আটকে রাখা হয়। চার ঘণ্টা পর হুমায়ুন মুঠোফোনে সহকর্মীদের খবর দিলে তাঁরা তাঁকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনার জেরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ১১৪ শ্রমিককে ছাঁটাই করে। শ্রমিক ছাঁটাই, গুমের হুমকি ও বহিরাগতদের দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। এ সময় কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাড়ভাঙা পরিশ্রমে পুরুষের অর্ধেকের কম বেতন নারীর
  • ময়মনসিংহে সাহিত্য আড্ডার স্থানসহ নানা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন
  • ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের মুক্তমঞ্চ গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন, সংস্কৃতিকর্মীদের প্রতিবাদ
  • ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের মুক্তমঞ্চ ভেঙে দিল প্রশাসন
  • যেভাবে আর্জেন্টিনার মার্তিনেজকে ময়মনসিংহে ফেরালেন শ্রাবণ
  • বকেয়া বেতনের দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, দুই ঘণ্টা পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
  • টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
  • টঙ্গীতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ, সাউন্ড নিক্ষেপ
  • সুন্দর কাঠ ও ফুলের গামারি
  • কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ