মায়ের সোনার চেইন বিক্রির টাকায় স্বপ্নের যাত্রা, রাফী ছুটছেন
Published: 3rd, March 2025 GMT
‘সুড়ঙ্গ’, ‘সুড়ঙ্গ’র পর ‘পরাণ’, ‘পরাণ’–এর পর ‘তুফান’; পরপর রায়হান রাফীর তিনটি সিনেমাই আলোচিত, প্রশংসিত। ‘তুফান’ মুক্তির পর রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছিল। সিনেমা হলে এত হুল্লোড় বহুদিন দেখা যায়নি। মধুমিতা হলে টিকিটের জন্য ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটেছিল। বড় পর্দার মতো ছোট পর্দা ও ওটিটিতেও নিজের মুনশিয়ানা দেখিয়ে চলেছেন এই নির্মাতা। তাঁর বেশির ভাগ নির্মাণই আলোচিত, প্রশংসিত।
তবে রাফীর এই সাফল্যের জার্নিটা ‘এলাম, দেখলাম, জয় করলাম’ টাইপ নয়। পরিশ্রম আর স্বপ্ন নিয়ে তিলে তিলে তৈরি হয়েছেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন নির্মাতা হবেন, সিনেমা বানাবেন। তখন ক্লাস নাইনে পড়েন। শর্টফিল্ম বানাতে মন মরিয়া। যে করেই হোক শর্ট ফিল্ম একটা বানাতেই হবে। কিন্তু টাকা কোথায়? টাকার জন্য কান্না জুড়ে দিলেন। অগত্যা রাজি হলেন মা। ছেলেকে সঙ্গে করে বাজারে গেলেন। নিজের সোনার চেইন বিক্রি করে ১২ হাজার টাকা তুলে দিলেন হাতে। ছেলেটা বানাল প্রথম শর্টফিল্ম ‘আজব বাক্স’। হঠাৎ এই নির্মাতাকে নিয়ে লেখার কারণ, আজ ৩ মার্চ তাঁর জন্মদিন।
যা বলছিলাম, মায়ের সোনার চেইন বিক্রির টাকায় যে স্বপ্নের যাত্রা রাফী শুরু করেছিলেন। সেই স্বপ্নেই ফুল ফুটিয়েছেন। ক্রমাগত নিজেই নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। কাজ দিয়ে জিতে নিয়েছেন দর্শকহৃদয়। তাঁর সিনেমার জন্য দর্শক অপেক্ষায় থাকেন। তাঁর নির্মাণে যেমন বৈচিত্র্য দেখা যায়, তেমনি নতুন নতুন ভাবনার সংযোজনেরও দেখা মেলে।
‘পরাণ’-এর কথাই বলা যাক। এই গল্পে ছেলেটা বখাটে, যে মেয়েটাকে সে পছন্দ করে, মেয়েটা তাকে পছন্দ না করেও, ভালো না বেসেও ভালোবাসার অভিনয় করে। তার কাছ থেকে নানা ধরনের সুবিধা আদায় করে। পরে আরেকজনকে ভালোবাসে। ত্রিকোণ প্রেমের এমন গল্প কান পাতলেই আমরা শুনতে পাই। এই যে পরিচিত ঘটনাকে বুদ্ধিদীপ্তভাবে পর্দায় তুলে ধরতে পারা, এ কারণেই কি সিনেমাটি দর্শকদের ভালো লেগেছে?
ঈদে মুক্তি পেয়েছিল রায়হান রাফী পরিচালিত সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের
গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।
মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।