জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসনের বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের বিচার নিশ্চিতে গড়িমসি এবং পুনর্বাসনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে।

বুধবার (৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তারা হামলাকারীদের বিচারে প্রশাসনের গড়িমসির সমালোচনা করেন। সেই সঙ্গে ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা কীভাবে জেলে ও হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দেয়, সেই প্রশ্ন তোলেন। 

আরো পড়ুন:

নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন

জেলে ও হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন জাবিতে হামলাকারী ২ ছাত্রলীগ নেতা

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান ইমন বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি  প্রশাসন জেনে বা না জেনে ছাত্রলীগ পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। ছাত্রলীগের হামলাকারী এবং অবাঞ্চিতরা এখনো কীভাবে পরীক্ষায় অংশ নেয়?”

তিনি লোক প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আপনি ছাত্রলীগকে এভাবে পুনর্বাসিত করলে আপনার চেয়ার থাকবে না, টেনে—হিঁচড়ে নামাবো। আবার এমন করলে ছাত্রলীগের দোসরদের মতোই আপনার পরিণতি হবে। মবের কারনে মৃত্যু হয় শামীম মোল্লার, কিন্তু সেখানে বিপ্লবীদের পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়। প্রশাসনকে বলতে চাই সঠিক তদন্ত করে বিপ্লবীদের ফিরিয়ে আনুন। জুলাই হামলাকারীদের দ্রুত বিচার করুন।”

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাকিব আল মাহমুদ অর্ণব বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিচারের নামে কমিটি কমিটি করে যে টালবাহানা করছে, অতিদ্রুত এ নাটকের অবসান ঘটাতে হবে। কিভাবে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের কর্মীরা হাসপাতালে ও জেলে বসে পরীক্ষা দিতে পারে? যেখানে আমাদের বিপ্লবীদের জীবন আজ বিপন্ন। আজ কেন আমার ভাই আহসান লাবিবকে লুকিয়ে থাকতে হবে, কেন রায়হান আজ জেলে, কেন আমার ভাই হামিদুল্লাহ সালমান ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারে না?” 

তিনি বলেন, “আমাদের বিজয় অর্জনের সাত মাস পরেও প্রশাসন এখনো সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোন মামলা করতে পারেনি। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক। পক্ষান্তরে এ প্রশাসন বিপ্লবীদের প্রাপ্য সম্মান দিতে পারেনি। অতিদ্রুত হামলাকারী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে এবং আমাদের বিপ্লবী ভাইদের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচারমূলক মামলা করা হয়েছে, তা তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসে পুনর্বহাল করতে হবে।”

মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, “হাসপাতালে ও জেলে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতারা। গত ১৫  জুলাই উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগনেতা শামীম মোল্লা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেছিল। সেই শামীম মোল্লা গণঅভ্যুত্থানের পর মব জাস্টিসের শিকার হলো। এরপর প্রশাসন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার ২ ঘণ্টা পর শামীম মোল্লা মারা যাওয়ার সংবাদ আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্যাতনে নয়, পুলিশের হেফাজতেই তার মৃত্যু হয়েছে।”

তিনি বলেন, “এ ঘটনায় বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার ভিতরে মামলা করেছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের উপর এখনো মামলা দিতে পারেননি। আপনারা সত্যিকারে যদি গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি হয়ে থাকেন, তাহলে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করুন।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা এবং সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জবি শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়।

এতে ছাত্রশিবির, ছাত্রফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, আপ বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা দুই কার্যদিবসের মধ্যে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আলটিমেটাম দেন।

আরো পড়ুন:

৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী

নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত ১ বছরে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এই প্রশাসন আমরা এনেছি। কিন্তু যদি তারা আমাদের দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়, আমরা তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হবো। হচ্ছে, হবে, প্রসেসিংয়ে আছে—এ ধরনের কথা আর মেনে নেওয়া হবে না।

ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী বিএম আতিকুর রহমান তানজিল বলেন, “কোনো অছাত্র বা বয়োবৃদ্ধ দিয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে না। ছাত্রত্ব যাদের আছে, তারাই নির্বাচনে অংশ নেবে। পাশাপাশি দ্রুত আবাসন ভাতা প্রদানেরও ব্যবস্থা করতে হবে।”

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও একটি ক্যাফেটেরিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি প্রশাসন। আমাদের এই প্রশাসন কাজ করতে না পারলে তাদের চলে যেতে হবে।”

আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য মাসুদ রানা বলেন, “৫ আগস্টের আন্দোলনের পর ভেবেছিলাম আলাদা করে কিছু চাইতে হবে না। কিন্তু সেই আদায় করা দাবি আজো বাস্তবায়িত হয়নি। ১ বছর পেরিয়েও শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারেনি। দাবি পূরণে পদক্ষেপ না নিলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।”

ছাত্র অধিকার শাখার সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম এই প্রশাসন দ্রুত জকসুসহ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু গত ১ বছরে তারা কেবল জকসু নীতিমালাটি ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করতে পেরেছে। নীতিমালা অনুবাদ করতেই এক বছর লেগেছে; তাহলে নির্বাচনের আয়োজন করতে কত সময় লাগবে?”

শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে রোডম্যাপ ঘোষণার তারিখ জানাতে হবে। তা না হলে দ্বিতীয় দফা আন্দোলন শুরু হবে, যা মোকাবিলা করা প্রশাসনের পক্ষে কঠিন হবে।”

ছাত্র অধিকারের সাংগঠনিক সম্পাদক অপু মুন্সির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও আপ বাংলাদেশের নেতা মাসুদ রানা, আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল আলীম আরিফ প্রমুখ।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাঁধন-সাবার ভার্চুয়াল দ্বন্দ্বে যোগ দিলেন অরুণা বিশ্বাস
  • ‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
  • তিতুমীর কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী
  • হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ কমবে না: নাহিদ 
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি
  • নরসিংদীতে আজ এনসিপির পদযাত্রা 
  • এনসিপির অনুরোধে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করল ছাত্রদল