মৌলভীবাজারে মুরগির বাচ্চার মড়ক, খামারিরা দিশেহারা
Published: 9th, March 2025 GMT
মৌলভীবাজারে রাণীক্ষেত ভাইরাসে প্রতিদিন শত শত মুরগির বাচ্চা মারা যাচ্ছে। ওষুধ প্রয়োগ করেও প্রতিকার না মেলায় খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
খামারিদের দাবি, গত এক সপ্তাহে ৮ হাজার বাচ্চা মারা গিয়েছে। এতে তাদের কয়েক লাখ টাকা লোকসান হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, রাণীক্ষেত সিজনাল ভাইরাস। খামারে কিছু বাচ্চা মারা গিয়েছে। তবে সংখ্যা এত বেশি হবে না। খামারিদের করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন:
বিক্রির জন্য প্রস্তুত ১৩০০ কেজির মহিষ ‘পাঠান’
রংপুরে প্রাণিসম্পদ কর্মকতার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ খামারিদের
সরেজমিন বিভিন্ন খামার ঘুরে দেখা গেছে, ২২ দিন বয়সের বাচ্চা থেকে ২ মাস ১৫ দিনের বাচ্চা বেশি মারা যাচ্ছে। খামারিরা জানান, প্রভিটা ফিড লিমিটেডের হ্যাচারি থেকে উঠানো লেয়ার জাতের একদিনের বাচ্চা মরা শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ল্যাব টেস্ট করাবেন বলে জানান। তবে তাদের কাছ থেকে ভালো কোনো পরামর্শ আসেনি। স্থানীয় পশু চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে তেমন ফল আসছে না। এতে খামারিরা লোকসানের শঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জেলার রাজনগর উপজেলার ভুজবহল গ্রামের জনতা পোল্ট্রি ফার্মে দেখা যায়, কয়েক বস্তা মরা বাচ্চা মাটিতে পুতে ফেলার জন্য রাখা হয়েছে। এ সময় খামার পরিচর্চাকারী সামুয়েল ও ছালিক মিয়া জানান, ওষুধে কাজ হচ্ছে না। এই সেডে প্রভিটা ফিড লিমিটেডের একদিন বয়সী বাচ্চার মড়ক শুরু হয়। এখন ২২ দিন বয়সী বাচ্চা মারা যাচ্ছে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বর্ষিজুড়া এলাকার জনতা পোল্ট্রির আরেক সেডে গিয়ে দেখা যায়, আড়াই মাসের বাচ্চা মরে যাচ্ছে। ৫ বস্তা মরা বাচ্চা রাখা হয়েছে। এ সময় কথা হয় পরিচর্চাকারী হেলাল মিয়ার জানান, বাচ্চা উঠানোর পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে মড়ক শুরু হয়। আজ পর্যন্ত মরা অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন ২ থেকে আড়াইশত বাচ্চা মারা যাচ্ছে।
কথা হয় সদর উপজেলার পোল্ট্রি ফিড এন্ড সিক্স এর স্বত্বাধিকারী খালেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আশা করে বাচ্চা তুলেছিলাম কিন্তু যেভাবে মড়ক দেখা দিয়েছে, এভাবে মরতে থাকলে বড় লোকসানে পড়বো। জেলা প্রাণিসম্পদের লোকজন আমাদের কাছে আসছেন না। আমরা দিশেহারা হয়ে গেছি।’’
পোল্ট্রি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন মৌলভীবাজারের সভাপতি হাসান আহমদ বলেন, ‘‘আমি ২০ বছর ধরে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এত মড়ক দেখিনি। চিকিৎসা দিয়েও লাভ হচ্ছে না। একদিন বয়সী বাচ্চা থেকে শুরু করে আড়াই মাসের বাচ্চাও মারা যাচ্ছে। জেলার কমপক্ষে ২০টি খামারে মড়ক অব্যাহত রয়েছে। ৮-১০ হাজার বাচ্চা মারা গেছে। সবচেয়ে বেশি মরছে প্রভিটার বাচ্চা। আমরা বিষয়টি তাদের জানিয়েছি কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছে না্। প্রাণিসম্পদ বিভাগকেও জানিয়েছি।’’
খামারে চিকিৎসা দিতে আসা পশু চিকিৎসক অমরজিৎ বলেন, ‘‘রাণীক্ষেত ভাইরাসে মড়ক একটু বেশি মনে হচ্ছে। মরা বাচ্চার ময়নাতদন্ত করে রাণীক্ষেত ভাইরাস ধরা পড়েছে।’’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.
ঢাকা/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’