বিশ্বের বৃহত্তম জলচর পাখি ডালমেশিয়ান পেলিকান, যা পূর্ব এশিয়ায় অত্যন্ত বিরল। মানুষের শিকার ও আবাসস্থল সংকটের কারণে এরা প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে সম্প্রতি সাংহাইয়ের একটি প্রাকৃতিক সংরক্ষণাগারে দেখা গেছে ২৬টি ডালমেশিয়ান পেলিকান, যা এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির ইঙ্গিত।

ডালমেশিয়ান পেলিকান ‘পেলিকান’ প্রজাতির বৃহত্তম সদস্য। এটি চীনের প্রথম শ্রেণির জাতীয় সুরক্ষার তালিকাভুক্ত। সাধারণত, এর দৈর্ঘ্য ১.

৬ থেকে ১.৮ মিটার এবং ওজন ১০ কেজির বেশি হয়। পূর্ণবয়স্ক পাখির ডানার বিস্তার ৩ মিটারেরও বেশি এবং ওজন হতে পারে ১৫ কেজি পর্যন্ত।

বড় ঠোঁটের জন্য পেলিকান সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত হলেও পূর্ব এশিয়ায় ডালমেশিয়ান পেলিকানের সংখ্যা অত্যন্ত কম। এরা মূলত পশ্চিম মঙ্গোলিয়ায় প্রজনন করে এবং শীতকালে চীনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে চলে আসে।

আরো পড়ুন:

বিরল প্রজাতির সোনালি ঈগল উদ্ধার

সান-এলেক্সের বিরল ভালোবাসা

ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব লাইফ সায়েন্সেসের এভিয়ান ইকোলজির অধ্যাপক মা ছিচুন জানান, মঙ্গোলিয়ার প্রজনন এলাকায় মানুষের শিকার ও পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে এদের আবাসস্থল সংকুচিত হচ্ছে, যা এদের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।

সম্প্রতি, সাংহাইয়ের চিওতানশা ওয়েটল্যান্ড ন্যাচার রিজার্ভে ২৬টি বিরল ডালমেশিয়ান পেলিকান দেখা গেছে। এটি শহরের পরিবেশ সংরক্ষণ ও বাস্তুসংস্থান উন্নয়নের ইতিবাচক ফলাফল।

জানুয়ারিতে পৃথক দুটি পর্যবেক্ষণে ১৭টি পেলিকান শনাক্ত করা হয়, যা এ অঞ্চলে এদের পুনরাবির্ভাবের ইঙ্গিত দেয়। এর আগে, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এখানে মাত্র একটি পেলিকান দেখা গিয়েছিল।

সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের কর্মকর্তা চৌ তাওই জানান, ডালমেশিয়ান পেলিকান সাধারণত হ্রদ, নদী, জলাভূমি ও উপকূলীয় এলাকায় বাস করে। বিশেষ করে, যেখানে মানুষের হস্তক্ষেপ কম এবং বাস্তুসংস্থান সমৃদ্ধ, অর্থাৎ যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ, কাঁকড়া, শামুক ও ব্যাঙ পাওয়া যায়।

চিওতানশা ওয়েটল্যান্ড ন্যাচার রিজার্ভটি ইয়াংজি নদী ও পশ্চিম চীন সাগরের মিলনস্থলে অবস্থিত। এই জনবসতিহীন অঞ্চলে মানুষের হস্তক্ষেপ নেই বললেই চলে, যা পাখিদের জন্য আদর্শ আশ্রয়স্থল।

২০২৩ সালের জুনে সংরক্ষণাগারটি ৬৩ প্রজাতির উচ্চতর উদ্ভিদ, ১২৬ প্রজাতির ম্যাক্রোফৌনা এবং ১৩৫ প্রজাতির মাছের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত হয়। এছাড়াও আশেপাশের জলাভূমিতে ২৩৬ প্রজাতির পাখি রেকর্ড করা হয়েছে, যার মধ্যে ১০টি প্রজাতি চীনের প্রথম শ্রেণির জাতীয় সুরক্ষার অন্তর্ভুক্ত এবং ৪১টি প্রজাতি দ্বিতীয় শ্রেণির সুরক্ষার আওতায় রয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাংহাই জলাভূমি সংরক্ষণে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে চীনের হলুদ সাগর-বোহাই উপসাগরের উপকূলীয় শহর চংমিং তোংতান বার্ড ন্যাচার রিজার্ভ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। একই বছরের ডিসেম্বরে সেখানে ১৮টি ডালমেশিয়ান পেলিকান পর্যবেক্ষণ করা হয়।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে সাংহাই জলাভূমি সংরক্ষণের জন্য একটি বিশেষ পরিকল্পনা চালু করে। এর আওতায় ছয়টি মূল ক্ষেত্রের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়— সংরক্ষণ, পুনরুদ্ধার, ব্যবস্থাপনা, গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ, জনসাধারণের সম্পৃক্ততা এবং টেকসই ব্যবহার।

সাংহাইয়ের এই প্রচেষ্টা পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং ডালমেশিয়ান পেলিকানের মতো বিরল প্রজাতির পুনরাবির্ভাবের মাধ্যমে এর ইতিবাচক ফলাফল স্পষ্ট হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: সিসিটিভি

ঢাকা/হাসান/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (পাস) প্রোগ্রামে ভর্তি কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে শুরু হচ্ছে। আবেদন করা যাবে আগামী ১৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত। এ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে ১৩ নভেম্বর থেকে। গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন যেসব শিক্ষার্থী

২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি বা সমমান এবং ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন ভর্তির জন্য। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি (ভোকেশনাল), এইচএসসি (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি) ও ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। এ-লেভেল, ও-লেভেল ও বিদেশি সনদধারীদের ক্ষেত্রে নির্ধারিত নিয়মে সরাসরি ডিন অফিসে বা ই–মেইলে আবেদন করতে হবে শিক্ষার্থীদের।
যেসব শিক্ষার্থী গত দুই শিক্ষাবর্ষে (২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪) স্নাতক (সম্মান), স্নাতক (সম্মান) প্রফেশনাল বা স্নাতক (পাস) প্রোগ্রামে ভর্তি হয়ে রেজিস্ট্রেশন কার্ড পেয়েছেন, তাঁরা এই শিক্ষাবর্ষে নতুন করে ভর্তি হতে পারবেন না। তবে পূর্ববর্তী ভর্তি বাতিল করে নতুন শিক্ষাবর্ষে আবেদন করতে পারবেন। একই সঙ্গে কোনো শিক্ষার্থী দ্বৈত ভর্তি হলে তাঁর উভয় ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন বাতিল হবে।

আবেদন ফি ৪০০ টাকা

ভর্তি ফি হিসেবে প্রাথমিক আবেদন ফি ৪০০ টাকা, যার মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ ২৫০ টাকা এবং কলেজের অংশ ১৫০ টাকা। ভর্তি নিশ্চিত হওয়ার পর রেজিস্ট্রেশন ফি ৭২০ টাকা জমা দিতে হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করে অনলাইনে নিশ্চয়ন করবে। তবে নিশ্চয়ন ছাড়া কোনো আবেদনকারীকে মেধাতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। আবেদন ফি ১৯ অক্টোবরের মধ্য জমা দিতে হবে।

আরও পড়ুনবাংলাদেশ বিমানে ইন্টার্নশিপ, দৈনিক হাজিরায় সম্মানী ৬০০ টাকা৪ ঘণ্টা আগে

আবেদনকারীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিটি কলেজের জন্য আলাদাভাবে কোর্সভিত্তিক মেধাতালিকা প্রণয়ন করা হবে। একই মেধা নম্বরপ্রাপ্ত হলে এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ (৪০: ৬০ অনুপাতে) এবং প্রয়োজনে মোট নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। এরপরও সমতা থাকলে বয়স কম শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ভর্তি কার্যক্রম ধাপে ধাপে প্রথম মেধাতালিকা, দ্বিতীয় মেধাতালিকা, কোটার মেধাতালিকা এবং প্রথম ও দ্বিতীয় রিলিজ স্লিপের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। তবে এবারও তৃতীয় রিলিজ স্লিপে আবেদন করার সুযোগ থাকবে না।

বিস্তারিত দেখুন এখানে

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, সুযোগ পাবেন ৪৮ জেলার যুবরা১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আরও পড়ুন১২ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে সরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কালচে হয়ে যাচ্ছে মোগল আমলের লালকেল্লা
  • জিল হোসেন মারা গেছেন, আদালতে তাঁর লড়াই শেষ হবে কবে
  • গবাদিপশু থেকে মানুষের শরীরে ‘তড়কা’ রোগ, প্রতিরোধে যা করবেন
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর
  • কীভাবে নেট রান রেট হিসাব করা হয়, সুপার ফোর উঠতে বাংলাদেশের হিসাব কী
  • সোনালী ও রূপালী মুনাফায়, অগ্রণী ও জনতা লোকসানে