পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজামান কাফির বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

সোমবার (১০ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার জাহিদ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী শাহাদাত হাওলাদার (২২) ও মাহফুজ মোল্লা (২১)। তাদের মধ্যে শাহাদাত হাওলাদারের বাড়ি বরগুনার আমতলী উপজেলার সেকান্দারখালী গ্রামে ও মাহফুজ মোল্লার বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পূর্ব টিয়াখালী গ্রামে।

আরো পড়ুন:

নারী নির্যাতন প্রতিরোধে পুলিশের হটলাইন সেবা চালু

চাঁদা না পেয়ে এলজিইডি প্রকৌশলীর ওপর হামলা, থানায় মামলা

এসপি আনোয়ার জাহিদ জানান, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা কাফির ফেসবুক পেইজে দেখে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে তার বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ওই দুই কর্মী।  

তিনি জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃত দুইজন বরিশাল থেকে বাসে করে আমতলীর বাদুরা আসেন। সেখানে পূর্বপরিচিত একটি দোকান থেকে ৫ লিটার ডিজেল কিনে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোটরসাইকেল করে কাফির বাড়ির পাশে অবস্থান নেন তারা। পরে সুযোগ বুঝে তারা কাফির ঘরের চাল এবং রান্না ঘরে ডিজেল ছিটিয়ে দেন। এরপরে মাহফুজ ম্যাচের কাঠি দিয়ে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে সেখান থেকে সটকে পরেন।

এসপি আনোয়ার জাহিদ জানান, ঘটনার সময় কাফির বাবা, মা, ভাই ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঘরের মধ্যেই ছিলেন। আগুন পুরো ছড়িয়ে পড়ার আগেই দরজা ভেঙ্গে পরিবারের সদস্যরা ঘর থেকে বের হয়ে যান। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে কলাপাড়া থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে। গতকাল রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় যৌথ অভিযানে শাহাদাতকে বরিশাল থানা এলাকা থেকে এবং মাহফুজকে পটুয়াখালী সদর থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রজপাড়া গ্রামে কাফির বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে বাড়িতে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে যায় বলে জানিয়েছিলেন কাফির বাবা মাওলানা এবিএম হাবিবুর রহমান। 

কাফির বাবা মাওলানা এবিএম হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে সেসময় বলেন, “আমাদের বাড়িতে সন্ত্রাসীরা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। আমাদের পুড়িয়ে মারার জন্যই এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা বিচার চাই।” 

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন কল প ড় র কল প

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ত্র দিয়ে ডাকাত তকমা, উদ্ধার করল নৌবাহিনী 

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ডাকাত তকমা দিয়ে দু’জনকে পিটিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় দেশীয় অস্ত্র। ছবি তুলে ও ভিডিও করে ছেড়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। উত্তেজিত জনতা তাদের ঘিরে রাখে। যদিও অনেকেই জানতেন না, ঘটনাটি সাজানো। খবর পেয়ে নৌবাহিনীর একটি দল আহত দু’জনকে উদ্ধার করে। সোমবার রাতে উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের আমতলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই তাদের হাতিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। 

উদ্ধার দু’জন হলেন জাহাজমারা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড চরহেয়ার এলাকার মজিবুল হকের ছেলে আরিফ হোসেন এবং একই ইউনিয়নের মোল্লাবাজার এলাকার মো. আশরাফের ছেলে মো. আসিফ। এদের মধ্যে আরিফ পেশায় রিকশাচালক। 

স্থানীয়রা জানান, জাহাজমারা আমতলী বাজারের পশ্চিম পাশে রাস্তার চর দখল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন জহির চেরাং, অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দেন কাউসার। কাউসারপক্ষ অনেক দিন থেকে চরটির দখল নিয়ে আছে। ঘটনার দিন সোমবার বিকেলে জহির চেরাংয়ের লোকজন চরটির দখল নেওয়ার জন্য সংঘবদ্ধ হয়। পরে প্রতিপক্ষের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে গেলেও দু’জনকে ধরে তারা বাজারে নিয়ে আসে। পরে ওই দু’জনকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পরিকল্পিতভাবে ডাকাত নাটক সাজানো হয়। 

ছবি তুলে ও ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ায় সেখানে উৎসুক জনতা ভিড় করে। খবর পেয়ে নৌবাহিনীর একটি দল অবরুদ্ধ দু’জনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে নৌবাহিনী ও পুলিশের দুটি গোয়েন্দা দলের তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে। 

আসিফের বাবা আশরাফ জানান, তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি পর্যন্ত নেই। অথচ তাঁকে ডাকাত বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁর ছেলে নিরপরাধ দাবি করেন তিনি। 

আমতলী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. লিটন জানান, চরের আধিপত্য নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়। পরে নৌবাহিনী এসে তাদের নিয়ে যায়। তারা ডাকাতির সঙ্গে জড়িত কিনা, তাঁর জানা নেই। 

হাতিয়া থানার ওসি একেএম আজমল হুদা বলেন, উদ্ধার দু’জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অস্ত্র দিয়ে ডাকাত তকমা, উদ্ধার করল নৌবাহিনী