হঠাৎ কারখানা বন্ধের নোটিশ, টঙ্গীতে শ্রমিকদের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ
Published: 11th, March 2025 GMT
গাজীপুরে টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় কারখানা বন্ধের প্রতিবাদ ও বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করছেন একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল সাতটায় তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন।
এর ফলে মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। দুর্ভোগে পড়েছেন ওই মহাসড়কে চলাচলকারীরা। অনেকেই হেঁটে তাঁদের গন্তব্যে যাচ্ছেন।
শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকেরা জানান, টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় বিএইচআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেওয়ার কথা ছিল ৯ মার্চ। তবে বেতন না দেওয়ায় গতকাল সোমবার সকাল থেকে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করের। পরে বিকেলে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যান। আজ সকালে শ্রমিকেরা এসে দেখেন অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ সাঁটিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ওই নোটিশ দেখে শ্রমিকেরা সকাল সাতটা থেকে কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপযায়ে তাঁরা হোসেন মার্কেট ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ যানজটে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই মহাসড়কে চলাচলকারীরা। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও থানা–পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া চেষ্টা করছেন।
কারখানা কর্তৃপক্ষের নোটিশে বলা হয়েছে, ‘এতদ্দ্বারা অত্র কারখানার সকল কর্মী ও কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ১০ মার্চ অনুমান সকাল ১০টার সময় কর্মী ও কর্মচারীগণ নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ বন্ধ করে কারখানার অভ্যন্তরে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। কর্মী ও কর্মচারীগণকে কাজে যোগদানের জন্য বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কর্মী ও কর্মচারীগণ কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকে। কর্মী-কর্মচারীগণের এই ধরনের আচরণ অবৈধ ধর্মঘটের শামিল। কর্তৃপক্ষ মনে করছে উচ্ছৃঙ্খল কর্মী-কর্মচারীগণ কারখানাতে যেকোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। যার কারণে কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩(১) ধারা মোতাবেক ১১ মার্চ হতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করল। পরবর্তীতে কারখানা খোলার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে কারখানা খোলার তারিখ যথারীতি নোটিশের মাধ্যমে জানানো হবে।’
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন বলেন, সকাল সাতটা থেকে শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য বন ধ র ও কর ম
এছাড়াও পড়ুন:
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে ১০ শ্রমিক আহত
ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ‘বিদ্রোহী’ ছাত্রাবাসের পাশে একটি ১০ তলা ছাত্রাবাস নির্মিত হচ্ছে। নির্মাণাধীন ছাত্রাবাসের নিচতলায় একটি বারান্দার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। আজ সকাল থেকে ঢালাইয়ের কাজ চলতে থাকে। কিন্তু বিকেল সোয়া চারটার দিকে বিকট শব্দে ধসে পড়ে পুরো ছাদ। এ সময় সেখানে কাজ করা অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে একজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) এস এম জিয়াউল বারী বলেন, আহত অবস্থায় ১০ শ্রমিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, আজ দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। ছাদ ঢালাই দেওয়ার জন্য খুঁটিগুলো ছিল দুর্বল। অনেক স্থানে লোহার পাইপের পরিবর্তে খুঁটি হিসেবে বাঁশ ও পাটের দড়ি ব্যবহার করা হয়। দুর্বল কাঠামোর কারণেই ছাদ ধসে যেতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবুর রহমান বলেন, ১০ তলা ভবনের নিচে বারান্দার অংশের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণকাজ করছিল সিএসআই নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ছাদ ধসে কয়েকজন শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কী কারণে ধসে পড়ল, কারও গাফিলতি আছে কি না, তা তদন্তে দেখা হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।