জাতীয় লিগের বেতনভুক্ত ১০০ ক্রিকেটারের তালিকায় রাখা হয়নি আল আমিন জুনিয়রকে। ৩১ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার চুক্তি থেকে বাদ পড়ার কারণ বুঝতে পারছেন না। এক সাবেক ক্রিকেটারের পরামর্শে সাবেক নির্বাচক হান্নান সরকারের কাছে বাদ পড়ার কারণটা জানতে চান আল আমিন। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ মিলিয়ে একটা ব্যাখ্যা দেন তিনি। সব শুনে আল আমিন উদাস দৃষ্টিতে দূরে তাকিয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ। এর পর চলে গেলেন একাডেমি মাঠে অনুশীলনের জন্য।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের চেয়েও বেশি হতাশ কেন্দ্রীয় চুক্তি পাওয়া কয়েকজন ক্রিকেটার। সৌম্য সরকার যেমন হতাশ হয়েছেন নিজেকে ‘সি’ গ্রেডে দেখে। মন খারাপ জাকের আলীরও। শামীম হোসেন পাটোয়ারিকে ভবিষ্যৎ বিবেচনায় রাখা হয়নি। কারও কারও মতে এবারের কেন্দ্রীয় চুক্তি বৈষম্যমূলক।

বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তির একটি কাঠামো ছিল। অভিজ্ঞতা, বর্তমান পারফরম্যান্স ও ভবিষ্যৎ মাথায় রেখে মার্কিং করে কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা করা হতো পয়েন্টের ভিত্তিতে। বিসিবির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান নির্বাচক কমিটি বৈজ্ঞানিক সে পদ্ধতি অনুসরণ করেনি।

গাজী আশরাফ হোসেন লিপু নিজেদের মতামতের ভিত্তিতে ক্রিকেটারদের ক্যাটেগরি নির্ধারণ করেছেন বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা এক ক্রিকেটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পেস বোলারদের মূল্যায়ন করছে, সেটা খুবই ভালো। কারণ তারা সব ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে না। তাদের ভালো গ্রেডে রাখা নিয়ে কোনো আপত্তি নেই। সমস্যা হলো কেউ কেউ জাতীয় দলকে ভালো সার্ভিস দেওয়ার পরও তাদের নিচের গ্রেডে রাখা হয়েছে। এটা তো বৈষম্য তৈরি করবে।’

এ অভিযোগের ব্যাপারে জানার চেষ্টা করেও প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুকে ফোনে পাওয়া যায়নি। নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাকও ফোন ধরেননি। তবে হান্নান সরকার একটি ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন এভাবে, ‘এ চুক্তিতে আমার স্বাক্ষর আছে। দেশের ক্রিকেটের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে গ্রেডিং করা হয়েছে। নাহিদ রানা দেশের সেরা একজন ফাস্ট বোলার। সে তিন সংস্করণে খেলবে। এ কারণে তাকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে।’

নাহিদ রানা টেস্ট ও ওয়ানডে খেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি২০ দলে থাকলেও অভিষেক হয়নি। তাঁর তুলনায় জাকের আলীর পয়েন্ট বেশি হওয়ার কথা। তিন সংস্করণে খেলা উইকেটরক্ষক এ ব্যাটারের পারফরম্যান্সও ভালো।

লিপুদের নির্বাচিত জাতীয় দল যে বর্তমানে ভালো ক্রিকেট খেলছে না, তা ফলের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। পারফরম্যান্সের দোহাই দিয়ে অভিজ্ঞ লিটন কুমার দাসকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে রাখা হয়নি। ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে ভালো করতে পারছে না লিপুর নির্বাচিত দল। আফগানিস্তানের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে ৫০ ওভারের খেলায়। মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বে একটি টেস্ট জিতেছে ও লিটনের নেতৃত্বে টি২০ সিরিজ।

এ পরিস্থিতিতে ২০২৬ সালের টি২০ আর ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ মাথায় রেখে বিসিবি যখন জাতীয় দল গড়ার পরিকল্পনা বা গাইডলাইন তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে, সে মুহূর্তে কেন্দ্রীয় চুক্তি জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেলের পছন্দে হয়েছে বলে অভিযোগ।

সাবেক এক নির্বাচক বলেন, ‘এখন থেকে নির্বাচকদের সমীহ করে চলতে হবে  ক্রিকেটারদের। কারণ কেন্দ্রীয় চুক্তির ক্রিকেটার নির্বাচিত হবেন নির্বাচকদের পছন্দে; এবার যেটা হয়েছে। আগের গাইডলাইন ফেলে দিয়ে তারা নিজেরা যাকে যেখানে নেবেন বলে ঠিক করেছেন, তারই প্রতিফলন ঘটেছে গ্রেডিংয়ে।’ এ অভিযোগের সত্যতাও যাচাই করা যায়নি নির্বাচকরা ফোন না ধরায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ম য সরক র জ ত য় দল

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যর্থতার বৃত্তে নারী ফুটবল দল, ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে অবনমন

মাস দুয়েক আগেও ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ২৪ ধাপ লাফ দিয়ে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। কিন্তু সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক মঞ্চে টানা ব্যর্থতার কারণে সেই অর্জন ফিকে হয়ে গেল। টানা চারটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে হারের ধাক্কায় ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে আট ধাপ নিচে নেমে গেল আফঈদা-ঋতুপর্ণাদের দল।

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে গ্রুপসেরা হয়ে মূল পর্বে ওঠার পর আগস্ট মাসে বাংলাদেশ ১০৪তম স্থানে উঠে এসেছিল, যা ছিল দলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অবস্থান। সেই সময় তাদের র‌্যাঙ্কিং পয়েন্ট ছিল ১১৮০।

আরো পড়ুন:

আসিফের মন্তব্যে বাফুফের কাছে বিসিবি সভাপতির দুঃখ প্রকাশ

ফ্লাইট মিস করার পর ঢাকায় পা রাখলেন হামজা

এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের সাফল্যের পর বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সে দেখা দিয়েছে ধারাবাহিক অবনতি। সাম্প্রতিক সময়ে খেলা চারটি ম্যাচের ফলই ছিল নেতিবাচক, যা র‌্যাঙ্কিংয়ে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।

অক্টোবর (ব্যাংকক): থাইল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে যথাক্রমে ৩-০ এবং ৫-১ গোলে পরাজিত হয়।

নভেম্বর-ডিসেম্বর (ঢাকা): ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত তিন জাতি সিরিজে মালয়েশিয়ার কাছে ১-০ গোলে এবং আজারবাইজানের কাছে ২-১ গোলে হেরে যায়।

টানা চারটি পরাজয়ের ফলে বাংলাদেশ এখন ১০৪ নম্বর থেকে নেমে এসেছে ১১২ নম্বরে। তাদের বর্তমান র‌্যাঙ্কিং পয়েন্টও ১১৮০ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১১৬৮।

যে দলগুলোর কাছে বাংলাদেশ হেরেছে, তাদের র‌্যাঙ্কিং প্রায় অপরিবর্তিত বা উন্নতি হয়েছে। থাইল্যান্ড (৫৩) এবং আজারবাইজান (৭৪) তাদের পূর্বের অবস্থানেই আছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পাওয়া মালয়েশিয়া এক ধাপ উন্নতি করে এখন ৯১ নম্বরে অবস্থান করছে।

বাংলাদেশ নারী দলের এই র‌্যাঙ্কিং পতন স্পষ্টতই সাম্প্রতিক দুর্বল পারফরম্যান্সের ফল। কোচিং স্টাফ এবং খেলোয়াড়দের এখন এই পিছিয়ে পড়া কাটিয়ে ওঠার জন্য নতুন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধুরন্ধর ঝড়: ৭ দিনে আয় ৪১৩ কোটি টাকা
  • ব্যর্থতার বৃত্তে নারী ফুটবল দল, ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে অবনমন
  • আইফোন ১৭ বাজারে এলেও কেন বিশ্বে বিক্রির শীর্ষে আইফোন ১৬