সাবেক কাউন্সিলর বাদলের সহচর হত্যা মামলার আসামি সাজুর হাত থেকে রক্ষা পেতে মানববন্ধন
Published: 12th, March 2025 GMT
শামীম ওসমানের ঘনিষ্টজন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক অহ্বায়ক ও নাসিক ৩ নং ওয়ার্ড এর সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের অন্যতম সহচর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি শাহজাহান সাজুর বিরুদ্ধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জমি দখলের অভিযোগে মানববন্ধন করেছে ভূক্তভোগীরা।
আওয়ামী সরকারের শাসনামলে শাহজালাল বাদলের ছত্রছায়ায় সাজু “সাজু ডেভেলপার” নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে শামীম ওসমানের প্রভাব খাটিয়ে ওই জমি দখল করে নেয়।
এরপর থেকে ওই জমি প্লট করে বিক্রি করে আসছে। আওয়ামী শাসনামলের অবসান ঘটলেও থেমে নেই বাদলের সহচর সাজুর জমি বিক্রির কার্যত্রম।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর সাজু বিএনপির অসাধু নেতকর্মীদের নিয়ে এই অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এর প্রতিবাদে বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সানারপাড় বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় বৃহত্তর সানারপাড় এলাকাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীরা।
মানববন্ধনে বক্তব্যে ভূক্তভোগী মো.
পাশাপাশি আমাদের বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির মিথ্যা অভিযোগ করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানাসহ প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে।
আওয়ামী লীগের দোসর জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার আসামি শাহজাহান সাজুর পালিত ক্যাডররা এখনো তৎপর থাকার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও তাদের গ্রেপ্তার দাবি করছি।
স্থানীয় বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, খোর্দ্দঘোষপাড়া মৌজায় সানারপাড় এলাকায় ১১১ নং দাগে ৩৮৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়। এ জমি ফেলে রেখে ওইসব হিন্দু সম্প্রদায় ১৯৪৭ সালে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যায়।
তখন থেকেই এসব জমি পরিত্যক্ত ছিল। তার মধ্যে ৭২ শতাংশ সরকার খাস হিসেবে রেকর্ডভূক্ত করেন। বাকি ৩ একর ১৪ শতাংশ জমি ২০০৫ সাল থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি দখল শুরু করেন।
পরে তাদের কাছ থেকে ২০১০ সালের দিকে বিডিডিএল নামক একটি কোম্পানি এ জমি নামমাত্র মূল্যে কিনে নেয়। কিন্তু কাগজপত্র ঠিক না থাকায় দখলে টিকতে না পেরে ২০২২ সালে নাসিক ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল বাদলের ঘনিষ্ট সহচর শাহজাহান সাজুর মালিকানাধিন সাজু ডেভেলপারের কাছে হস্তান্তর করেন।
পরে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসস সদস্য শামীম ওসমানের প্রভাব খাটিয়ে বাদল ও সাজু বিশাল বাহিনী নিয়ে কমপক্ষে শতাধিক বসতীকে উচ্ছেদ করে জমির দখল নিয়ে নেয়।
যারা জমির দখল ছাড়তে রাজি ছিলনা তাদের ধরে নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। পরে জমিতে বালু ভরাট করে প্লট তৈরি করে বিক্রি শুরু করে। যা এখনো চলমান রয়েছে।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা ভুমিদস্যু সাজুর হাত থেকে রক্ষা পেতে আইনশৃংখলাবাহিনী ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্মতাগণের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মানববন্ধনে ভূক্তভোগীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আনোয়ারা বেগম, দ্বীন ইসলাম, আল ইসলাম, ভানু বেগম, ঝুমা আক্তারসহ প্রমুখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ব দল র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।